বিজ্ঞাপন

রাজশাহীর ৬ প্রার্থী স্বশিক্ষিত, ৪ জন অষ্টম শ্রেণি পাস

December 10, 2023 | 1:04 pm

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: দ্বাদশ জাতীয় সংসদে মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন ৬০ প্রার্থী। যাচাই-বাছাইয়ে টিকেছেন ৩৮ জন। ২২ প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত প্রার্থীদের হলফনামায় দেখা যায়, ৬ জন প্রার্থী স্বশিক্ষিত ও স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন। ৪ প্রার্থী অষ্টম শ্রেণি পাস। এসএসপি পাস করেছেন ৩ জন, এইচএসসি ৬ জন ও অনার্স শেষ করেছেন ১৯ জন প্রার্থী।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে অংশ নিতে এসব প্রার্থী হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার যে বিবরণী দিয়েছেন, তাতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফনামায় দেখা গেছে, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে ন্যাশনাল পিপপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী নুরুন্নেসা এসএসসি পাস। পেশায় গৃহিণী এই প্রার্থী কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয় করেন এক লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী বশির আহমেদ এমএ পাস। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের প্রার্থী আল সাআদ এমবিবিএস পাস করেছেন।

বিজ্ঞাপন

পেশায় ব্যবসায়ী তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী জামাল খান দুদু ‘স্বশিক্ষিত’। বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের প্রার্থী শাসুজ্জোহা বাবু ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং করে একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। এই আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক পাস।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে জাতীয় পার্টির ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনপিপির প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেসময় শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েছিলেন এমএসসি পাস। এই প্রার্থী দাবি করেন, ‘তিনি এসএসসি পাস। ২০১৮ সালে ভুল করে এমএসসি হয়ে গেছে। কিন্তু সার্টিফিকেট না থাকার কারণে স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন লিখতে হয়েছে।’

রাজশাহী-২ আসন থেকে জাসদের প্রার্থী হয়েছেন আবদুল্লাহ আল মাসুদ সিদ্দিকী শিবলী। হলফনামায় তিনি লিখেছেন ‘স্বশিক্ষিত’। রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ছিলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এই প্রার্থী বলেন, ‘সে সময় জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের রুমে থাকা আমার সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দেয়। সেখানে আমি মার্স্টাসের জন্য ভর্তি হয়েছিলাম। চাকরি করার ইচ্ছা ছিল না তাই সার্টিফিকেট তোলা হয়নি। বাধ্য হয়ে স্বশিক্ষিত লিখতে হয়েছে।’

রাজশাহী-২ আসনের প্রার্থী ইয়াসির আলিফ বিন হাবিব সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ। পেশায় ‘কমিশন এজেন্ট’। বিএনএমের প্রার্থী কামরুল হাসানের রয়েছে ডিপ্লোমা ডিগ্রি। পেশায় ব্যবসায়ী।

বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মারুফ শাহরিয়ার বিএ পাস। পেশায় চাকরিজীবী। এই আসনের তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার শিক্ষাগতযোগ্যতা এমএ ও এলএলবি।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে বিএনএমের প্রার্থী এ কে এম মতিউর রহমান এমএ পাস। পেশা আইন ব্যবসা। জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুস সালাম খান উচ্চ মাধ্যমিক পাস। বিএনএফে‘র প্রার্থী বজলুর রহমান স্বশিক্ষিত। এনপিপির প্রার্থী সইবুর রহমান অষ্টম শ্রেণি পাস। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলাইমান হোসেন স্বশিক্ষিত।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ এইচএসসি পাস। দু’বারের সংসদ সদস্য ও এবারের স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েন উদ্দিনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু তালেক প্রামাণিক উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসএস। পেশা শিক্ষকতা ও ব্যবসা। এ আসনে বিএনএমের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম রায়হান পড়েছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। তিনবারের সংসদ সদস্য এনামুল হক ডিপ্লোমা পাস।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল হোসেন এমএসসি পাস। তিনি অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারার শিক্ষাগত যোগ্যতাও এমএসসি।

গণফ্রন্টের প্রার্থী মখলেসুর রহমান বিএ পাস। জাকের পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলামের লেখাপড়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। বিএনএমের প্রার্থী শরিফুল ইসলাম এমএসএস পাস। সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মনসুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমসিপিএস।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে জাসদের প্রার্থী জুলফিকার মান্নান জামী এমএ পাস। বিএনএমের প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুস সামাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ পাস। স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক স্নাতক করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুদ্দিন রিন্টু এসএসসি পাস। জাকের পার্টির প্রার্থী রিপন আলী পড়েছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ।

প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আহমদ শফিউদ্দিন বলেন, ‘এখন টাকা হলেই মানুষ নেতা বা জনপ্রতিনিধি হতে চান। প্রভাব বিস্তার করতে চান। কিন্তু সংসদ সদস্যরা যদি উচ্চশিক্ষিত না হন, তাহলে কল্যাণমুখী আইন প্রণয়নে তারা কী ভূমিকা রাখবেন? মানুষ তাদের কাছে আর কীই বা প্রত্যাশা করবে। কাজেই এ বিষয়ে স্পষ্ট আইন দরকার।’

সারাবাংলা/জিএস/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন