বিজ্ঞাপন

‘একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করা’

February 20, 2024 | 3:02 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করেই চলব বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করা। আর আমরা মাথা নত করে চলব না।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘একুশে পদক ২০২৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসাবে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার এই ‘একুশে পদক’ প্রাপ্তদেরসহ মরণোত্তর পদকে ভূষিতদের পরিবারের হাতে হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষকে শিক্ষিত দক্ষ বিজ্ঞান প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন একটি জনশক্তি হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাই। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি সামনে লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কেউ অশিক্ষার অন্ধকারে থাকবে না এবং সবাই যেন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দক্ষতা ও কর্মশক্তি বিকশিত করতে পারে সেদিকেই আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।’

আগামী দিনের পথ চলায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব সেই ঘোষণাও দিয়েছি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের শুধু স্বাধীনতাই দিয়ে যাননি। সাথে তিনি আমাদের একটা মর্যাদাবোধ দিয়ে গেছেন। আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। এই কথাটা সকলকে মনে রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্যের একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বলে গেছেন, আমাদের সামাজিক অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হচ্ছে ৫২’র সেই রক্তের অক্ষরে মাতৃভাষার যে আন্দোলন।’

‘তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। ৭৫’র পর বিজয়ী জাতি বাংলাদেশ সেই মর্যাদা হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু অন্তত আমি এইটুকু দাবি করতে পারি, আবার বাঙালি বিশ্ব দরবারে এখন মাথা উঁচু করে চলতে পারে। সেই মর্যাদা আমরা ফিরিয়ে এনেছি। আর এই মর্যাদা আমাদেরকে সমুন্নত রেখেই আগামী দিনে এগিয়ে যেতে হবে। কারো কাছে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা করে নয়। আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলব।’

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ বছর একুশে পদকের জন্য মনোনীত ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিকের নাম ঘোষণা করা হয়। এ বছর ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে দুইজন, শিল্পকলায় ১২ জন, সমাজসেবায় দুইজন, ভাষা ও সাহিত্যে চারজন এবং শিক্ষায় একজন বিশিষ্ট নাগরিক এ পুরস্কার পাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে মরণোত্তর একুশে পদক পেয়েছেন মৌ. আশরাফুদ্দীন আহমদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী মিয়া। শিল্পকলার বিভিন্ন শ্রেণিতে যারা একুশে পদক পেয়েছেন তারা হলেন— সংগীতে জালাল উদ্দীন খাঁ (মরণোত্তর), বীর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষ, বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর), এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর) ও শুভ্র দেব; অভিনয়ে ডলি জহর ও এমএ আলমগীর; আবৃত্তিতে খান মো. মুস্তাফা ওয়ালীদ (শিমুল মুস্তাফা) ও রূপা চক্রবর্তী; নৃত্যকলায় শিবলী মোহাম্মদ; চিত্রকলায় শাহজাহান আহমেদ বিকাশ; এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও আর্কাইভিংয়ে কাওসার চৌধুরী।

এ ছাড়া সমাজসেবায় মো. জিয়াউল হক ও আলহাজ রফিক আহামদ এবং শিক্ষায় অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু পেয়েছেন একুশে পদক। এ বছর ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক পেয়েছেন চারজন। তারা হলেন-মুহাম্মদ সামাদ, লুৎফর রহমান রিটন, মিনার মনসুর ও রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (মরণোত্তর)।

ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণে ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এ পদক দিয়ে আসছে সরকার। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন চার লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।

একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসনা জাহান খানম। পরে একুশে পদকপ্রাপ্ত ও মরণোত্তর পদকে ভূষিতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গ্রুপ ফটোসেশনে অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/ইআ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন