বিজ্ঞাপন

সারা দেশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস পালিত

February 21, 2024 | 2:30 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

ঢাকা: সারা দেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের প্রথম প্রহরে জেলায় জেলায় শহীদ মিনারে গিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে স্থানীয় প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে:

চট্টগ্রাম: মাতৃভাষা বাংলার জন্য অকাতরে প্রাণ দেওয়া বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে চট্টগ্রামের মানুষ। একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে চট্টগ্রামের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার পর থেকেই নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে অস্থায়ী শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। বিভিন্ন সংগঠনসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের হাতে হাতে ছিল ফুল।

বিজ্ঞাপন

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’— শহিদ মিনার ঘিরে সমবেত কণ্ঠে ছিল কালজয়ী সেই গান। আবার অনেকে শুধু রাজনৈতিক স্লোগানই দিয়েছেন।

পুলিশের সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী শহীদ মিনারে প্রথম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় চসিকের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা মেয়রের সঙ্গে ছিলেন।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার অতিরিক্ত আইজি কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম এবং মহানগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মোজাফফর আহমেদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা ফুল দেন। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেসক্লাবসহ আরও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক জাতিগোষ্ঠী স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে। কিন্তু ভাষার জন্য রক্ত দেওয়ার ইতিহাস অন্য কোনো জাতির নেই। একমাত্র বাঙালি জাতি মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে। এ ভাষাকে সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠা করাই হোক আমাদের একুশের অঙ্গীকার।’

বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম বলেন, ‘১৯৫২ সালের এ দিনে রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতির বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই আত্মত্যাগের অনুপ্রেরণায় ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। আমাদের শপথ হোক, বাংলা ভাষা কিংবা জাতিস্বত্তার বিরুদ্ধে কোনো আঘাত এলে আমরা যেন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে পারি।’

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘মাতৃভাষা বাংলার সর্বস্তরে প্রচলনের জন্য সরকার যে আইন করেছে এবং হাইকোর্ট যে রুল জারি করেছেন, তার আলোকে আমরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সরকারি দফতর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষা যেন প্রাধান্য পায় সে জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। সর্বস্তরে সাইনবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুনগুলো যেন বাংলায় লেখা হয়, সেটার উদ্যোগও আমাদের আছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের ভাষা শহিদদের স্মৃতি সংরক্ষণের বিষয়েও আমরা কাজ করছি।’

প্রতিবছরের মতো এবারও একুশের ভোরে শহিদ মিনার অভিমুখে প্রভাতফেরি হবে।

ময়মনসিংহ:

বিভাগীয় জেলা ময়মনসিংহে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। নগরীর টাউন হলে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সদর আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্ত।

এরপর বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, রেঞ্জ ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধূরী, পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূঞা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ-বিএনপি, অঙ্গ সহযোগি সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ স্মরণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

কিশোরগঞ্জ:

যথাযোগ্য মর্যাদায় কিশোরগঞ্জে পালিত হচ্ছে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

সরকারি গুরুদয়াল কলেজ মাঠে রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথম প্রহরে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ।

এছাড়া জেলা পরিষদ, পৌরসভা, সদর উপজেলা পরিষদ, আওয়ামী লীগ, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরাও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মাগুরা:

শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে সংসদ সদস্য ডক্টর বীরেন শিকদার মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্কুল কলেজের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পরে কালেক্টরেট প্রাঙ্গণ থেকে এক প্রভাত ফেরী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। জেলা প্রশাসন এর আয়োজন করে।

জয়পুরহাট:

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জয়পুরহাটে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম,জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট।

এরপর একে একে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ।

কুষ্টিয়া:

কুষ্টিয়ায় যথাযগ্যে মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কুষ্টিয়া কালেক্টর চত্বরের শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা ও পুলিশ সুপার এইস এম আব্দুর রকীব।

এরপর জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি দফতর ও পেশাজীবী সংগঠন ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

রাঙ্গামাটি:

যথাযোগ্য মর্যাদায় পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে পালিত হচ্ছে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।

এরপর একেএকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সরকারি দফতর শ্রদ্ধা জানায়।

ভোরে প্রভাত ফেরিসহ শহিদ মিনারে বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), জাতীয় পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন।

খুলনা:

মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কাঠ দিয়ে তৈরি শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় খুলনার রূপসা উপজেলার ৩নং নৈহাটি ইউনিয়নের আমদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কাঠ দিয়ে শহিদ মিনারটি তৈরি করা হয়েছে। শহিদ মিনারটির সামনে আলপনা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী প্রভাতফেরি শেষে সারিবদ্ধভাবে শহিদ মিনারের সামনে দাঁড়িয়েছে। একে একে তারা ফুল হাতে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানায়।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সহসভাপতি খাঁন আক্তারুজ্জামান বলেন, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের বছরে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এতবছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি হয়নি। সরকারের কাছে দাবি জানাই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করার জন্য।

৫ম শ্রেণির কোমলমতি শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন জানায়, বই পড়ে মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস জানতে পেরে ভাষা শহিদদের প্রতি এভাবেই গভীর শ্রদ্ধা জানায়। আমাদের বিদ্যালয়ে স্থায়ী কোনো শহিদ মিনার না থাকায় কাঠের তৈরি অস্থায়ী শহিদ মিনারে আমরা ফুল দিয়ে এবছর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। গতবছর আমাদের বিদ্যালয়ে কলা গাছ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করা হয়েছিলো। ওই শহিদ মিনারে আমরা শ্রদ্ধা জানিয়েছিলাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুলবুল রায় জানান, আমি কিছুদিন আগে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। এখানে এসে দেখি আমাদের বিদ্যালয়টিতে শহিদ মিনার নেই।।
এ বছর শিক্ষার্থীরা নিজেরাই কাঠ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করে, সেখানে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। বিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ করা হলে খুব ভালো হতো।

এ ব্যাপারে জানতে রূপসা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে খুলনার শহিদ হাদিস পার্কে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে।

এসময় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন খুলনা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও মহানগর কমান্ড, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক, খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন, খুলনা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ, খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

নরসিংদী:

নরসিংদীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস। এ উপলক্ষে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।

শহরের স্টেডিয়াম সংলগ্ন নরসিংদীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথমে প্রদীপ প্রজ্বলন ও ফুলের তোড়া দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও সিভিল সার্জন(ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফারহানা আহমেদ।

এরপরপরই মুক্তিযুদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় ভাষার জন্য আত্মত্যাগী বীরদের চরণে।

এছাড়া নরসিংদীর বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলের শুভেচ্ছা জানান সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তাসহ হাজারো জনতা। জেলা প্রশাসন ছাড়াও অন্যান্য বিভাগ, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা ফুলের তোড়া দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় ভাষা শহীদদের প্রতি। তাছাড়া দিনব্যাপী বিভিন্ন স্কুল-কলেজসহ সব সরকারি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হবে দিবসটি।

নাটোর:

নাটোরে মহান শহিদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা ১ মিনিটে শহরের সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ শহিদ মিনারে সব ভাষা শহিদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহিদ মিনারে বীর শহিদদের প্রতি প্রথমে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা আওয়ামী লীগ। পরে জেলা প্রশাসক আবু নাসের ভূঁঞা, পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলিসহ রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এছাড়াও সকাল হতেই সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ও সামাজিক সংগঠন হাতে ফুল ও ফুলের তোড়া নিয়ে শহিদ মিনারে ফুল দিতে আসেন।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় শহরের কান্দিভিটার জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কালো পতাকা উত্তোলন, এক মিনিট নিরবতা পালন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভাষা শহিদ এবং সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শংকর চৌধুরী স্টেডিয়াম চত্বরে ১০ দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি সব মসজিদে দোয়া মাহফিল ও অন্য প্রার্থনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা:

যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটিকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচি পালন করা হয়।

শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চুয়াডাঙ্গার সরকারি কলেজের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে হাজারও মানুষের ঢল নামে।

এদিন রাত ১২টা ১ মিনিটেই ভাষা শহীদদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা জানান চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা এবং পুলিশ সুপার আর.এম. ফয়জুর রহমান, পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন ও চুয়াডাঙ্গা প্রেস ক্লাব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এর আগে, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ক্লাব সভাপতি রাজীব হাসান কচির সভাপতিত্বে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় ক্লাব সদস্যরা অংশ নেন।

এদিকে দিবসটি কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ উপলক্ষে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধান সড়ক বাংলা বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে হামদ-নাত, রচনা, শিশুদের কবিতা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ও নির্ধারিত দেয়াল ও রাস্তায় আল্পনা আঁকা হয়।

কক্সবাজার:

সারা দেশের ন্যায় কক্সবাজারেও বিনম্র শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা আহমেদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি আবু তাহের চৌধুরীসহ সর্বস্তরের মানুষ।

এদিকে, ভোরে দিবসটি উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনির্মিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।

বগুড়া:

ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বগুড়ায় মহান শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। এদিন আলোচনা সভা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এছাড়া অমর একুশে উপলক্ষে শুরু হয়েছে ১০ দিনব্যাপী বই মেলা।

একুশের প্রথম প্রহরে বগুড়া কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষরে ঢল নামে। বগুড়া শহীদ মিনার চত্বর বগুড়া শহীদ খোকন পার্ক ঘিরে সামনের সড়কে ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের ছিল দীর্ঘ লাইন। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ মিনার।

এছড়া বগুড়া সফররত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুয়াঘাট প্রেসক্লাব ও সেখানকার সাহিত্য সংগঠনের কবি সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের একটি প্রতিনিধি দল সকালে বগুড়া শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।

অপর দিকে অমর একুশে উপলক্ষে বগুড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে বই মেলা। শহীদ খোকন পার্কের চত্বর বই মেলায় প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। অমর একুশে উপলক্ষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন