বিজ্ঞাপন

রাঙ্গামাটিতে ইউপিডিএফ কর্মীকে গুলি করে হত্যা

February 25, 2024 | 11:34 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলীতে নিপুন চাকমা ওরফে চোগা (৩৫) নামে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) এক কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বঙ্গলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটেছে।

নিপুন চাকমা বঙ্গলতলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বালুখালী গ্রামের কমলা কান্তি চাকমা ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বোধিপুর এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন নিপুন চাকমা। রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে করে এসে ইউপিডিএফ কর্মী নিপুন চাকমাকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমা হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বঙ্গলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শনিবার রাতে কনসার্টের অনুষ্ঠান চলাকালে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) মুখপাত্র অংগ্য মারমা জানান, শনিবার রাতে বাঘাইছড়ি বঙ্গলতলীতে তাদের এক কর্মীকে গুলি করে হত্যার বিষয়টি শুনেছেন। নিহতের পরিচয় এবং কিভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে সেটি তিনি নিশ্চিত হতে পারেননি।

বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, শুনেছিলাম শনিবার রাতে বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ইউপিডিএফএর দলের সঙ্গে তাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে গোলাগুলি হয়েছিল। ঘটনার রাতে এবং আজ রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো লাশ খুঁজে পায়নি। তবে আমরা তদন্ত করছি।

বিজ্ঞাপন

তবে স্থানীয় একটি রাজনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরই স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে গুলিবিদ্ধ মরদেহটি রাখা হয়েছে। নিপুণ চাকমা ওরফে চোগা ইউপিডিএফের সামরিক শাখার ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতা’ ছিলেন।

এদিকে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউপিডিএফ।

বিবৃতিতে ইউপিডিএফের বাঘাইছড়ি ইউনিটের সংগঠক অক্ষয় চাকমা জানিয়েছেন, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলীতে শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে (নব্য মুখোশ) সন্ত্রাসীরা নিপন চাকমা (৩৫) নামে ইউপিডিএফের এক সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার সময় একদল সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসী মোটর সাইকেলযোগে বঙ্গলতলীতে এসে ইউপিডিএফ সদস্য নিপন চাকমার ওপর গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।

বিজ্ঞাপন

ইউপিডিএফ নেতা অক্ষয় চাকমা এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ‘কাপুরুষোচিত’ ও ‘ন্যাক্কারজনক’ উল্লেখ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদে ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীরা একের পর এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করলেও খুনিদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

বিবৃতিতে তিনি ইউপিডিএফ নেতা অবিলম্বে নিপন চাকমার খুনিদের আইনের আওতায় এনে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাস বন্ধের দাবি জানান।

এর আগে, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের অনিলপাড়ায় গুলি করে ইউপিডিএফের চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ওই সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে মারা যান ইউপিডিএফের সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহসভাপতি লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফ সদস্য রুহিন ত্রিপুরা।

পানছড়ির চার খুনের দেড় মাসের মাথায় গত ২৪ জানুয়ারি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় আরও দুইজনকে হত্যা করা হয়। তখন মারা যান, ইউপিডিএফ সদস্য রবি কুমার চাকমা ও শান্ত চাকমা ওরফে বিমল। ৪ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় আরও দুইজন খুন হয়েছেন। তারা হলেন- ইউপিডিএফ সদস্য দীপায়ন চাকমা ও আশুক্য চাকমা ওরফে আশীষ (৪৫)।

সর্বশেষ ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে একই উপজেলায় ঘাতকের বুলেটে খুন হলেন ইউপিডিএফের আরেক কর্মী। এ নিয়ে তিন মাসের মধ্যেই পাহাড়ে ইউপিডিএফের ৯ নেতাকর্মী প্রতিপক্ষের গুলিতে প্রাণ হারালেন।

সারাবাংলা/ইআ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন