বিজ্ঞাপন

ডিএনএ পরীক্ষার ফল— অভিশ্রুতি শাস্ত্রীই বৃষ্টি খাতুন

March 11, 2024 | 12:58 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় প্রাণ হারানো অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর প্রকৃত পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল— তিনি কৃষ্টিয়ার সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুন দম্পতির কন্যা বৃষ্টি খাতুন কি না। শেষ পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী আর বৃষ্টি খাতুন মূলত একই ব্যক্তি। বৃষ্টি খাতুনই পরিচিত ছিলেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১০ মার্চ) অভিশ্রুতি ওরফে বৃষ্টির ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল জানা যায়। একই সঙ্গে বেইলি রোড ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো অজ্ঞাত আরেক মরদেহেরও পরিচয় মিলেছে ডিএনএ পরীক্ষায়। তিনি অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে নিখোঁজ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন (২৬)।

রোববার রাত ১১টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষায় বৃষ্টি খাতুন ও নাজমুলের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। ডিএনএ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন- বৃষ্টি খাতুন না অভিশ্রুতি শাস্ত্রী— জানা যাবে ডিএনএ পরীক্ষায়

বিজ্ঞাপন

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, অভিশ্রুতি ওরফে বৃষ্টি খাতুনের মা-বাবা হিসেবে দাবি করা সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুনের শরীর থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাদের নমুনার সঙ্গে মরদেহ থেকে সংগৃহীত নমুনা মিলে গেছে। সিআইডি ল্যাবের পরীক্ষার ফল বলছে, অভিশ্রুতি বা বৃষ্টির মা বিউটি খাতুন, বাবা সবুজ শেখ। অন্যদিকে নাজমুলের মরদেহের দাবিদার হিসেবে তার মা-বাবার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই নমুনার সঙ্গে মরদেহের নমুনা মিলেছে। অর্থাৎ তারাই নাজমুলের মা-বাবা।

ডিআইজি নাহিদুল বলেন, ডিএনএ প্রতিবেদনে সই করে থানায় পাঠানো হবে। ডিএনএ প্রতিবেদন অনুযায়ী মরদেহ দুটি নিজ নিজ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলা হবে।

এদিকে রোববার রাতে সবুজ শেখ জানিয়েছেন, মেয়ের পরিচয় শনাক্তের বিষয়ে তাকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। নাজমুলের মামা মো. হোসেন জানান, তাদেরও এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নয়, ‘বাবা’র দাবি মেয়ের নাম বৃষ্টি খাতুন

এর মধ্য দিয়ে বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে নিহত গণমাধ্যমকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা কেটে গেলো। অগ্নিকাণ্ডে অভিশ্রুতি ওরফে বৃষ্টির মৃত্যুর পর জানা যায়, তিনি বন্ধু, সহকর্মী ও ফেসবুকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বিউটি বেগম ও সবুজ শেখ দাবি করেন, মেয়েটির নাম বৃষ্টি খাতুন। মেয়েটি তাদেরই সন্তান। আবার এক মন্দিরের পুরোহিত দাবি করেন, মেয়েটি অভিশ্রুতি, যিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মন্দিরে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল।

এসব পরস্পরবিরোধী দাবিতে অভিশ্রুতি ওরফে বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ সিদ্ধান্ত নেয়, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হবে। সে পরীক্ষায় জানা গেল, বিউটি-সবুজ দম্পতির সন্তান বৃষ্টি।

বন্ধু-সহকর্মীদের তথ্য বলছে, বৃষ্টিই একসময় সনাতন ধর্ম গ্রহণ করেন। নাম ধারণ করেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। এ সময় পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগহীনতা তৈরি হয়। অভিশ্রুতি পরিচয়েই নিয়মিত মন্দিরে যাতায়াতও করতেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীর বাসিন্দা নজরুল ইসলামের পরিবারের দাবি ছিল, কোজি কটেজে আগুন লাগার সময় নাজমুলরা চার বন্ধু মিলে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন। পরে তার আর সন্ধান পাচ্ছিল না পরিবার।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন