বিজ্ঞাপন

ভিকারুননিসায় ভর্তি বহালের দাবিতে ১৬৯ অভিভাবকের সংবাদ সম্মেলন

March 16, 2024 | 2:35 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ভর্তি বাতিল হওয়া ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বহাল রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিভাবকরা। এ সময় তারা ভর্তি নিয়ে জটিলতার নেপথ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ (মাউশি) ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলেছেন।

বিজ্ঞাপন

অভিভাবকরা বলেন, আমরা মাউশির নিয়ম মেনেই ভর্তি করেছি। তিন মাস ক্লাস করার পর ভর্তি বাতিল করে দেওয়ায় এখন আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে।

শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-এর নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ করেন। এছাড়া আপিল বিভাগে আপিলের প্রক্রিয়াও চলমান বলে জানান তারা।

অভিভাবক প্রতিনিধিরা বলেন, মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্ধারিত বয়সসীমা ছয় প্লাস হওয়ার কথা ছিল। অনলাইন আবেদনের সময় ২০১৫ এবং ২০১৬ সালের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা টেলিটকের সার্ভারে জন্মতারিখ, শ্রেণি ও এলাকার তথ্য দিলে ভিকারুননিসার নামও আসে। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন ফি পরিশোধ করে তারা ভিকারুননিসাসহ পাঁচটি স্কুল সিলেক্ট করে আবেদন ফর্ম পূরণ করেন। পরে লটারির মাধ্যমে ভিকারুননিসায় ভর্তির সুযোগ পায় তাদের সন্তানরা।

বিজ্ঞাপন

ফলে গত তিন মাস ধরে তাদের সন্তানরা অন্যান্য শিশুদের সঙ্গেই নিয়মিত ক্লাস করে আসছিল। এ অবস্থায় গত ৪ মার্চ স্কুল প্রিন্সিপাল কেকা রায় চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে অভিভাবকদের জানানো হয় যে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণ করা ১৬৯ জন শিশুর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, বছরের এই পর্যায়ে এসে অন্য স্কুল বেছে নেওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এসব অভিভাবকরা। একইসঙ্গে তাদের সন্তানরাও বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। শিশুরা মানসিক চাপের শিকার হচ্ছে। এছাড়া অভিভাবকরাও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তারা।

অভিভাবক প্রতিনিধিরা বলেন, স্কুলে ভর্তির জন্য অনেকেই বাসা পরিবর্তন করে স্কুলের কাছাকাছি চলে এসেছেন। অনেকে চাকরিও পরিবর্তন করেছেন। এছাড়া অনেকে দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও ঢাকায় এসেছেন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে।

বিজ্ঞাপন

অভিভাবকরা বলছেন, এই পুরো প্রক্রিয়ায় বিদ্যালয় ও মাউশির মধ্যে সমন্বয়হীনতার ফলেই এটি ঘটছে। মাউশির নিয়ম ছয় প্লাস কিন্তু ভিকারুননিসা স্কুল আলাদা নিয়ম করেছে।

এক অভিভাবক বলেন, স্কুলের মূল নোটিশ বোর্ডে নয়, এক কোনে ছোট করে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জন্মসীমার উল্লেখ ছিল যা চোখে পড়ার মতো না। বয়সীমার এই বিষয়টি তারা ভর্তি বাতিলের নোটিস পেয়েই জানতে পারেন।

আবার মাউশির নীতিমালা অনুযায়ী বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারা এই ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম পুরো প্রক্রিয়া মেনেই সম্পন্ন করেছেন। ভর্তি প্রক্রিয়ার শুরুতেই ব্যবস্থা নিলে এখন এতগুলো শিশুর ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ত না। এছাড়া দেশের অন্যান্য স্কুলে যদি ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জন্ম নেওয়া শিশুরা প্রথম শ্রেণিতে পড়তে পারে সেক্ষেত্রে ভিকারুননিসার ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম কেন এই অভিযোগও করেন তারা।

উল্লেখ্য, মাউশি’র নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ মার্চ ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জন্ম নেওয়া ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে ভিকারুননিসা স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চারটি শাখায় প্রথম শ্রেণিতে বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থিদের ভর্তি বাতিল করতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এক স্মারকে নির্দেশনা দেয় মাউশি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক–আল–জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে মাউশি মহাপরিচালকের নির্দেশনাসংবলিত ওই চিঠি (স্মারক) দাখিল করা হয়। সেদিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মাউশির ওই সিদ্ধান্ত (স্মারক) বাস্তবায়ন (কমপ্লায়েন্স) বিষয়ে হলফনামা আকারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে ৬ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।

সারাবাংলা/আরএফ/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন