বিজ্ঞাপন

দুবাইয়ে এমভি আবদুল্লাহ, অপেক্ষা করছে বহির্নোঙরে

April 21, 2024 | 6:23 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হারামিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। জেটিতে ভেড়ার জন্য জাহাজটি এখন সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষায় আছে।

বিজ্ঞাপন

জাহাজের ক্যাপ্টেন রোববার (২১ এপ্রিল) বিকেলে এমভি আবদুল্লাহ’র পরিচালনা প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডকে সর্বশেষ বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

এস আর শিপিং লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করীম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি দুবাইয়ের স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটা এবং বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে চারটায় আল হারামিয়া বন্দরে পৌঁছেছে। জাহাজ ব্রাভো অ্যাকাংরেজে অবস্থান নিয়েছে। এখন জাহাজটি আল হারামিয়া পোর্ট কন্ট্রোলের পরবর্তী ইনস্ট্রাকশনের জন্য অপেক্ষা করছে, তারা কখন জেটিতে বার্থিং নেবে। খুব সম্ভবত আজ রাতেই হতে পারে অথবা কাল (সোমবার) সকালে হতে পারে।’

সর্বশেষ বার্তায় জাহাজের ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, দুবাইয়ের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার পর তারা আল হারামিয়া বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বার্থিংয়ের সময়সহ অনুমতি পাবেন বলে আশা করছেন।

বিজ্ঞাপন

জাহাজের মালিকপক্ষ চট্টগ্রামের কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম) গ্রুপের মুখপাত্র মিজানুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাহাজটিকে আল হারামিয়া বন্দরে চার-পাঁচদিন অবস্থান করতে হবে। জাহাজে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কার্গো আছে। কয়লাগুলো দুবাইয়ের আল হারামিয়া বন্দরে খালাস করা হবে। এরপর জাহাজটি আবার চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেবে। তবে কবে নাগাদ রওনা দেবে, সেটি বার্থিংয়ের পর নির্ধারণ হবে।’

এস আর শিপিংয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমালিয়ার সীমানা পার হওয়ার পর জাহাজটি এখন সর্বোচ্চ ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে এগিয়ে আল হারামিয়া বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাতে পারে।

ছবি: সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বাংলাদেশের পতাকা হাতে এমভি আবদুল্লাহ’র নাবিকদের উল্লাস।

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি গত ১২ মার্চ বেলা ১২টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ওই জাহাজের ২৩ নাবিককে জিম্মি করা হয়। জাহাজটি কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল।

বিজ্ঞাপন

নাবিকেরা হলেন- জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুরুদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।

মুক্তিপণ পরিশোধের পর ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৮ মিনিটে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ থেকে নেমে যায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জলদস্যুরা নেমে যাবার পরই জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রিত উপকূল থেকে সোমালিয়ার সীমানা পার করে দেয়।

এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরবসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল কেএসআরএম গ্রুপের এস আর শিপিং লিমিটেডের আরেকটি জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

তবে এবার মাত্র ৩৩ দিনেই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটিকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এস আর শিপিংয়ের কর্মকর্তারা জানান, ২৩ নাবিকের মধ্যে ২১ জন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজেই চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরবেন। দুই নাবিক দুবাই বিমানবন্দরে নেমে যাবেন। তাদের সেখান থেকে বিমানে ফেরার কথা রয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন