বিজ্ঞাপন

সচিবালয়ের আদলে নিরাপত্তা বলয়ে আসছে পরিকল্পনা কমিশন চত্বর

April 29, 2024 | 8:45 pm

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করা আনসারদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যুক্ত হয়েছে পুলিশের নতুন টিম। নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই চত্বরে প্রবেশ করতে হলে জনসাধারণকে পাস ও সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ব্যবহার করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশন। একই চত্বরে রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), জনতা ব্যাংকের একটি শাখা, পোস্ট অফিসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে গঠিত টিম দিয়ে এর প্রধান ফটক ও পেছনের ফটকসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হতো। কিন্তু এখন বদলে যাচ্ছে সেই অবস্থা। নিরাপত্তার এই নতুন ব্যবস্থার কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জনতা ব্যাংকের গ্রাহকরা।

সূত্র জানিয়েছে, প্রায় প্রতি মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়াও বছরে দুবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুটি কমিটি চেয়ারপারসন হিসেবে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ফলে তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে সামনে এসেছে।

পরিকল্পনা কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ঈদের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৪০ জন পুলিশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, বাংলাদেশ সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) এখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে থাকবেন। বর্তমানে নিরাপত্তাব্যবস্থার ট্রায়াল চলছে। এরপর সচিবালয়ের মতো পাস ও অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডসহ অন্যান্য পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। সেজন্য অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য স্থাপনা তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান পরিকল্পনা সচিবসহ পরপর তিনজন সচিব নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। এতদিন সেটি কার্যকর না হলেও এবার তা করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে দায়িত্ব পালনকারী ৪০ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে ২০ জন পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে অবস্থিত ব্যারাকে থাকেন। বাকিরা সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করে ফিরে যান। মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, সাংবাদিকদের প্রবেশের ক্ষেত্রে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড না হওয়া পর্যন্ত কমিশন থেকে দেওয়া অস্থায়ী কার্ডই কার্যকর থাকবে। প্রয়োজনে এই কার্ডের মেয়াদ বাড়ানো হবে।

এদিকে নিরাপত্তার এই কড়াকড়িতে জটিলতার মুখে পড়ছেন জনতা ব্যাংকের গ্রাহকরা। টাকা তোলা বা জমা দেওয়াসহ নিয়মিত ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যাংকের এই শাখায় যেতে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে প্রবেশেই ঝামেলায় পড়ছেন তারা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা লেনদেনসহ আনুষাঙ্গিক যেকোনো কাজ করতে যাতায়াতের বিকল্প পথের ব্যবস্থা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

নিরাপত্তা জোরদার প্রসঙ্গে সাবেক পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কমিশনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি সংরক্ষিত থাকে। সেগুলোর নিরাপত্তার জন্য কঠোর ব্যবস্থার প্রয়োজন আছে। তবে মনে রাখতে হবে, যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে নথি রক্ষিত থাকে, তারা নিয়মের বাইরে গিয়ে সেগুলো ফাঁস করে দিলে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে কিছু হবে না। এ ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ সতর্কতা জরুরি। আর যদি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নষ্ট বা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি চুরি বা ধ্বংস করা হতে পারে বলে শঙ্কা থাকে, তাহলে বাইরের নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার।’

এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই সচিব বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পালনের সময় এমন কোনো নিরাপত্তাহীনতা বোধ করিনি। এখন কেন এত কঠোরতার প্রয়োজন, তা বলতে পারছি না।’

 

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/রমু

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন