October 20, 2018 | 3:15 pm
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিকল্পধারা বাংলাদেশ না থাকার দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অলরেডি তাদের দুই উইকেট পড়ে গেছে, নির্বাচনের আগে আসন ভাগাভাগির সময় এলে দেখা যাবে— কত ধানে কত চাল।
ঐক্যফ্রন্টের জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকির জবাবে এসময় তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যারা ১০ বছরে ১০ মিনিটের জন্য আন্দোলন করতে পারেনি, তারা এসেছে ঐক্যফ্রন্ট করতে!
শনিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে নবগঠিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সাম্প্রদায়িক ও অশুভ জোট হিসেবে অভিহিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় এক্যফ্রন্টের জোট হয়েছে। এটা সাম্প্রদায়িক ও অশুভ শক্তির জোট। তাদের লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া নয়, শেখ হাসিনাকে হঠানো। নীতিগতভাবে তাদের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে না।
সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিলেটে মাজার জিয়ারত এ দেশের রাজনীতিতে একটা ট্রেন্ড। তাই তারা মাজার জিয়ারত করতেই পারে। কিন্তু এই মাজার জিয়ারতকে কেন্দ্র করে যদি কোনো নাশকতা বা সহিংসতা তৈরি হয়, সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় যা যা করণীয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটা করবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ঐক্যফ্রন্টের জনগণের প্রতি কোনো আস্থা নেই। তারা জনগণের কাছে যাওয়ার আগে বিশিশীদের কাছে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে গেছে। তাই আমি মনে করি, তাদরে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে দুই দলের বেরিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, আমরা কোনো দলকে, কোনো জোটকে ভাঙতে চাই না। আওয়ামী লীগ ভাঙনে বিশ্বাসী নয়। যদি কোনো দল ভাঙে, নিজেদের কারণেই ভাঙবে। এখানে আওয়ামী লীগের হাত থাকার প্রশ্নই আসে না।
একাত্তর টিভির টকশো’তে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় আওয়ামী লীগ ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মাসুদা ভাট্টির প্রতি ব্যারিস্টার মঈনুলের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ধরনের মন্তব্য নজিরবিহীন ও শিষ্টাচার বহির্ভূত। এ সময় নারী সাংবাদিকদের দাবির প্রতি একাত্মতাও ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মানি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে এই জোট গঠিত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে এই জোটের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিকল্পধারা বাংলাদেশের আলোচনা চললেও শেষ পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টে তারা নেই। সেদিন ড. কামালের বাসায় আমন্ত্রণ জানানো হলে বিকল্পধারা চেয়ারম্যান ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সে বাসায় উপস্থিত হলেও বাসায় কেউ না থাকায় ফিরে যান। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী রয়েছে, এমন কোনো জোটের সঙ্গে তারা ঐক্য করবে না।
সারাবাংলা/এমএমএইচ/টিআর