বিজ্ঞাপন

গণশুনানিতে গণআদালত প্রতিষ্ঠার দাবি বিএনপি প্রার্থীদের

February 22, 2019 | 3:47 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছে এমনটি তুলে ধরতে জেলায় জেলায় গণ আদালত প্রতিষ্ঠার দাবি করেছেন বিএনপির পরাজিত প্রার্থীরা।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত ‘গণশুনানিতে’ অংশ নিয়ে তারা এ দাবি করেন।

নির্বাচনে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসনের সহায়তায় ভোট ডাকাতি করেছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির প্রার্থীরা বলেন, ৩০ ডিসেম্বর ভোট হয়নি। ভোট হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর রাতে। হামলা মামলা দিয়ে বিএনপি নেতা কর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

গণশুনানিতে জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে আছেন, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল, ড. নুরুল আমিন বেপারি, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ ও আনিসুর রহমান খান।

আরও পড়ুন: একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানি চলছে

শুনানির শুরুতেই নির্বাচনের দিন কি হয়েছিল সেটি তুলে ধরে বক্তব্য দেন লালমনিরহাট-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী আসাদুল হাবিব দুলু। তিনি বলেন, আমি বলবো গত ৩০ ডিসেম্বর কোনো নির্বাচন হয়নি। ওই দিন দেশে ভোট ডাকাতি হয়েছে। আমার এলাকায় ৭টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট কাষ্ট হয়েছে বলে বলা হয়েছে। দেখা যায় সেখানে অনেক মৃত মানুষও ভোট দিয়েছে। এই হলো আমাদের নির্বাচনের অবস্থা। আমার নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।

বিজ্ঞাপন

কুড়িগ্রাম-২ আসনের গণফোরাম ও ধানের শীষের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, ৩০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। একটি কেন্দ্রে ধানের শীষে ভোট পড়ায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে ব্যালট পেপার পুড়িয়ে ফেলেছিল। সেদিন তারা ব্যালট নয় গণতন্ত্রকে পুড়িয়েছিল। সংবিধান ও জনগনের ভোটের অধিকারকে পদদলিত করেছে।

যশোর-৩ আসনের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, নির্বাচনের আগে আমার উপর তিন দফায় হামলা হয়েছে, আমার এক হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ভোটের দিন সকাল ১০ টার মধ্যে সব ব্যালট শেষ হয়ে যায়। এটা কিসের ভোট হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোট ডাকাতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। জেলায় জেলায় গণ আদালত বসিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ওই আদালতে জনগণ তার রায় দেবে। এক দফা কর্মসূচি দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

সিরাজগঞ্জ-২ আসনের প্রার্থী রুমানা মাহমুদ তার কর্মী মেরি বেগমকে নিয়ে হাজির হন গণশুনানিতে। রুমানা মাহমুদ বলেন, আমাদের উপর পুলিশ গুলি চালিয়েছে। আমরা প্রচার প্রচারণা করতে পারিনি। আমার নেতা কর্মীদের মামলা দিয়ে জেলে রেখেছে। এ সময় রুমানা মাহমুদের কর্মী মেরি বেগম বলেন, নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় আমাকে গুলি করা হয়েছে। তাতে আমার দুটি চোখই অন্ধ হয়ে গেছে। তাতেও আমার দু:খ নাই। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হতো। কিন্তু সেটি নির্বাচন কমিশন করতে পারেনি। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমার ভোটের অধিকার চাই, নইলে আমার চোখ ফেরত চাই।

বরিশাল-৬ আসনের আবুল হোসেন খান বলেন, এটা নির্বাচন ছিল না। এটা ছিল রাষ্ট্রীয় ডাকাতি। প্রশাসনের বিভিন্ন বাহিনীর সহযোগীতা নিয়ে সরকার সুচারুভাবে রাষ্ট্রীয় ডাকাতি করেছে। এর বিরুদ্ধে গণআদালত প্রতিষ্ঠা করে জনগণের রায় নিয়ে গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

পিরোজপুর-২ আসনের ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে এসব শুনানি করে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। আন্দোলনের কর্মসূচি দিন। রাজপথেই সমাধান সম্ভব। এই অবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলন।

এছাড়াও, বিরতি পর্যন্ত গাজীপুর-৩ আসনের ইকবাল সিদ্দিকী, পাবনা-৪ আসনের হাবিবুর রহমান হাবিব, মাদারিপুর- ৩ আসনের আনিছুর রহমান খোকন, বরিশাল- ৪ আসনের নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর, হবিগঞ্জ-১ আসনের রেজা কিবরিয়া, নরসিংদীর খায়রুল কবির খোকন তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দুই অধিবেশনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

সারাবাংলা/এজেডকে/জেএএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন