বিজ্ঞাপন

বদির ৮ স্বজনসহ ১০২ ইয়াবা কারবারি কারাগারে

February 16, 2019 | 6:51 pm

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার: সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির পরিবারের ৮ সদস্যসহ  ১০২ জন তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার বিচারিক আদালত। শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) অবৈধ অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ  আইনের মামলায়  কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন এই  আদেশ দেন।

আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়াদের তালিকায় রয়েছেন—বদির ভাই আবদুশ শুকুর, আমিনুর রহমান, মো. ফয়সাল রহমান ও শফিকুল ইসলাম, ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু, ফুফাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল, খালাতো ভাই মংমং সেন ও বেয়াই শাহেদ কামাল।

এছাড়া উল্লেখযোগ্য ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে দিদার মিয়া ও পৌর কাউন্সিলর নুরুল বশর প্রকাশ নুরশাদ, পশ্চিম লেদার নুরুল হুদা মেম্বার, ইউপি মেম্বার জামাল হোসেন, শামসুল আলম ও কক্সবাজারের আলোচিত ইয়াবা ডন শাহজাহান আনসারিকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সকালে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে  আত্মসমর্পণ করেন এই ১০২ ইয়াবা কারবারি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন সারাবাংলাকে জানান, পুলিশ লাইন থেকে ১০২ আত্মসমর্পণকারীকে কক্সবাজারের বিচারিক আদালতে নেওয়া হয়। পরে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। পুরনো মামলা ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে  টেকনাফ থানায় নতুন করে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : ইয়াবা কারবারিদের শেষ রক্ষা হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ইয়াবা বিক্রেতাদের উদ্দেশে  বলেন, আপনারা কয় হাত থেকে বাঁচবেন? প্রথমে বিজিবির হাতে ধরা পড়বেন, সেখান থেকে র‌্যাবের হাতে পড়বেন, এরপর আপনারা পুলিশের হাতে ধরা পড়বেন। তারপর আছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। বাঁচার কোনো উপায় নেই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর অত্যন্ত শক্তিশালী করা হচ্ছে। কোনো নিস্তার নেই। আমাদের নেটে ধরা পড়তেই হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমারা মাদক আইন সংশোধন করেছি, সেখানে শাস্তি যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ড সংযোজন করা হয়েছে। কাজেই এই জায়গা থেকে ইয়াবাসহ মাদক কারবারিরা নিস্তার পাবেন না। 

আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কক্সবাজারে, ১৬০ ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পণ কাল

এই অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণের পাশাপাশি ইয়াবা কারবারিরা ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা, ৩০টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ জমা দেন।  এ সময় আত্মসমর্পণকারীদের ফুল দিয়ে বরণ করেও নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

আত্মসমর্পণকারীদের একজন টেকনাফের এনাম মেম্বার। তিনি বলেন, আমি চাই অন্ধকার থেকে ভালো জগতে যেতে। ইয়াবার বিরুদ্ধে আমি নিজেই আন্দোলনে নামব।

আরেক আত্মসমর্পণকারী বলেন, টেকনাফের মানুষকে খুব ঘৃণার চোখে দেখে সবাই এই ইয়াবা ব্যবসার কারণে । আমরা আর নীচ হয়ে অন্যের ঘৃণার পাত্র হয়ে থাকতে চাই না।

উল্লেখ্য, গত বছরের মে মাস থেকে  এ পর্যন্ত মোট ৪২ জন মাদক কারবারি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। যাদের ৩৭ জনই টেকনাফের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গত বছরের তালিকায় কক্সবাজার ও টেকনাফের ১১৫১ জন মাদক কারবারির নাম আসে। এর মধ্যে ৭৩ জন  গডফাদার। এই তালিকায়  সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ তার পরিবারের ২৬ জন সদস্য ছাড়াও কক্সবাজার ও টেকনাফের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নামও আছে।

সারাবাংলা/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন