বিজ্ঞাপন

২৫ জামায়াত নেতার প্রার্থিতা বহাল, ইসির হাতে সুযোগ নেই

December 23, 2018 | 8:34 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ২৫ নেতার প্রার্থিতা বহাল রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এই প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ ইসির হাতে নেই বলেই তাদের প্রার্থিতা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে অনুষ্ঠিত ইসি’র কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া, উচ্চ আদালতের আদেশে যেসব বিএনপি প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, তাদের আসনগুলোতে পুনঃতফসিল করে নতুন করে নির্বাচন আয়োজন বা প্রার্থী পরিবর্তনের সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ইসি সচিব বলেন, আজকের (রোববার) কমিশন সভায় জামায়াতের ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আদেশ বিশ্লেষণ করে কমিশন দেখেছে, বিদ্যমান আইনে এসব প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই। ফলে এই ২৫ জামায়াত নেতার প্রার্থিতা বহাল থাকছে।

উচ্চ আদালতের রায়ে বিএনপি নেতাদের প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত জানিয়ে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশে যেসব বিএনপি প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, সেসব আসনে প্রার্থী পরিবর্তন বা পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু আদালতের আদেশ ও বিএনপির দাবি চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কমিশন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে পুনঃতফসিল বা প্রার্থী পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। ওইসব আসনে যারা বর্তমানে বৈধ প্রার্থী রয়েছেন, তাদের বাইরে নতুন করে কাউকে প্রার্থিতা দেওয়া যাবে না।

২৭ ডিসেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনি জনসভা বিষয়ে ইসি সচিব জানান, এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়। এ বিষয়ে ইসির কিছু করার নেই।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, জামায়াতের ২৫ প্রার্থীর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিবসহ চার জন। তাদের আবেদন তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে গত মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের সেই আদেশের চিঠি বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) ইসিতে পৌঁছায়। ওই দিনই ইসি সচিব জানান, আইন শাখায় বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কমিশনে বিষয়টি উপস্থাপন করবে। এরপর কমিশন তিন দিনের সময়সীমা মেনে সোমবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে।

এদিকে, গত শুক্র ও শনিবার জামায়াতে ইসলামির প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, গৌরব একাত্তরসহ কয়েকটি সংগঠন নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে, এই দাবির বিরোধিতা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

প্রসঙ্গত, ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতাকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া, বাকি তিনজন জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এবারের নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থীরা হলেন— দিনাজপুর-১ আসনে মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ আসনে মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ আসনে মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ আসনে মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ আসনে মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ আসনে মাওলানা ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ আসনে অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আসনে আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ আসনে অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ আসনে অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ আসনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ আসনে মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ আসনে মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ আসনে শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান, সিলেট-৬ আসনে মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ আসনে ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের,  চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আ ন ম শামসুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আযাদ।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে ২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন