বিজ্ঞাপন

বাজেটে সব রফতানি খাতকে সমান সুবিধা দেওয়ার দাবি

April 1, 2019 | 9:48 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সব রফতানি খাতকে সমান সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রফতানি খাতের নেতারা। তারা বলছেন, রফতানি খাতে কর বৈষম্য রয়েছে। অথচ সব খাতই রফতানির মাধ্যমে দেশে ডলার আনছে। তাই আগামী বাজেটে সব রফতানি খাত সমান সুবিধা পাওয়ার দাবি জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে রফতানি খাতের নেতারা এ দাবি জানান। এসময় বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমএ), প্লাস্টিক রফতানিকারক সমিতি (বিপিজিএমইএ), গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ রফতানিকারক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সব রফতানিকারকরাই বিদেশ থেকে ডলার আনেন। তাই রফতানি খাতে বৈষম্য থাকা উচিত নয়। রফতানি খাতের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পলিসি করে দেওয়া উচিত, যেন প্রতিবছর বাজেটের আগে এনবিআরে এসে ধরনা দেওয়া না লাগে। ব্যবসায়ীরা এনবিআরের চাহিদা অনুযায়ী ট্যাক্স দিতে পারত। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় বাধা ব্যাংক ঋণের সুদের হার। দুর্বৃত্তরা হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে, আর যারা সৎভাবে ব্যবসা করছে ঋণের সুদ দিয়ে তাদের এর খেসারত দিচ্ছে হচ্ছে।

বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, তৈরি পোশাক খাতে ৩২ বিলিয়ন ডলার রফতানি হয়। এ অর্থের ৫০ শতাংশের দাবিদার টেক্সটাইল খাত। তৈরি পোশাকের পশ্চাৎপদ শিল্প হিসেবে টেক্সটাইল খাত গড়ে ওঠায় ১৬-১৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হচ্ছে না। আর স্থানীয় পর্যায়ে টেক্সটাইল খাতের আকার ১২ বিলিয়ন ডলার। এ খাতে ২ কোটির বেশি মানুষ জড়িত। অর্থনীতিতে এত অবদানের পরও টেক্সটাইল খাত কর বৈষম্যের শিকার। করপোরেট ট্যাক্স ১৫ শতাংশ দিতে হচ্ছে। কিন্তু গার্মেন্টস খাত দিচ্ছে ১২ শতাংশ। তাই আগামী বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের মতো করপোরেট ট্যাক্স নির্ধারণের প্রস্তাব দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিপিজিএমইএ সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, সরকার সবসময় বলে আসছে রফতানি খাতকে বহুমুখী করা দরকার। কিন্তু কাজকর্মে বাকি খাতকে মূল্যায়ন করা হয় না। সব রফতানি খাতকে সমান সুবিধা দেওয়া উচিত। বর্তমানে প্লাস্টিক খাত ৩৫ শতাংশ করপোরেট কর দেয়। রিসাইকেল শিল্পে কর অবকাশ এবং শিল্পের যন্ত্রাংশ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

গার্মেন্টস অ্যাকিসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল কাদের খান তৈরি পোশাক খাতের মতো করপোরেট ট্যাক্স ১২ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানিয়ে বলেন, প্রচ্ছন্ন রফতানি করলেও অ্যাকসেসরিজ খাতকে ৩৫ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হয়, এটা বৈষম্য। গত কয়েক বছর ধরে এ নিয়ে প্রস্তাব দিয়ে সুফল পাওয়া যায়নি। করপোরেট ট্যাক্সের কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বিটিটিএলএমএ সভাপতি শাহাদাত হোসেন সোহেল বলেন, গত ছয় মাসে টেরিটাওয়াল খাতে রফতানিতে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এ খাতকে বাঁচাতে হলে তৈরি পোশাকের মতো করপোরেট কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনা এবং নগদ প্রণোদনার ওপর কর অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সভাপতির বক্তব্যে বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রিলংকা, ভারত থেকে টেকনিশিয়ানরা বাংলাদেশে এসে কাজ করছে। তারা বিপুল পরিমাণ ডলার নিয়ে যাচ্ছে। ভারতের রেমিটেন্সের বড় অংশ যায় বাংলাদেশ থেকে। অনেক ব্যবসায়ী বিদেশি কর্মীদের বেতন সঠিকভাবে ঘোষণা দেয় না। তাই এ ধরনের বিদেশি কর্মীদের কাছ থেকে এনবিআর সঠিক কর আদায় করতে পারছে না। বাজেটে আগে অথবা পরে এ ধরনের বিদেশিদের কাছ থেকে কর আদায় করতে জরিপ চালানো হবে।

সভায় এনবিআরের ভ্যাট নীতি সদস্য রেজাউল হাসান, আয়কর নীতি সদস্য কানন কুমার রায়সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এসজে/টিআর

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন