December 12, 2019 | 2:08 pm
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন।
তিনি বলেন, সেখানে (বিএসএমএমইউ) যদি তার প্রোপার ট্রিটমেন্ট হয়ই, তাহলে বারবার অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্টের কথা বলা হচ্ছে কেন?
আরও পড়ুন- আপিলেও জামিন পেলেন না খালেদা জিয়া
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করে দিলে এর প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে রাজি হচ্ছে না। কিন্তু আমি যদি অসুস্থ হই, আমি তো বাঁচতে চাইবই। কেউ কি নিজে নিজে মরতে চান? মূল কথা হচ্ছে, বিএসএমএমইউয়ে খালেদা জিয়ার প্রোপার ট্রিটমেন্ট হচ্ছে না। নইলে বারবার অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্টের কথা বলা হচ্ছে কেন?
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন আরও বলেন, বিএসএমএমইউয়ে যদি উন্নত চিকিৎসা হতোই, তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেব কেন চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুর যাবেন? রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী কেন দেশের বাইরে যান চিকিৎসা নিতে? কারণ বিএসএমএমইউয়ে প্রোপার ট্রিটমেন্ট হচ্ছে না। মেডিকেল বোর্ডের যে রিপোর্ট, তাতেও সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী আরও বলেন, আমরা খবর নিয়েছি খালেদা জিয়া প্রোপার ট্রিটমেন্ট চান। উনি (খালেদা জিয়া) উন্নত চিকিৎসা নিতে চাচ্ছেন না— এটা উনাদের (রাষ্ট্রপক্ষ) বক্তব্য। এমন বক্তব্য তো খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আসেনি। আমরা এ বিষয়টিতেই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানে নওয়াজ শরিফকেও কিন্তু বিদেশে পাঠানো হয়েছে। সেখানকার বিচার বিভাগ তার অসুস্থতা বিবেচনায় নিয়ে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে। আমরাও বলেছি, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কথা। কিন্তু আদালত আমাদের কথা শোনেননি।
তিনি বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ আদালতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, যা অতীতে কখনো ঘটেনি। গত কয়েকদিন ধরে আদালত একটি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। এতে আমরা আগেই ধরে নিয়েছিলাম, হয়তো আমরা জামিন পাব না। তারপরও আমরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
তিনি বলেন, আমরা আদালতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন তুলে ধরে আন্তত ১০টি রেফারেন্স দিয়েছি এবং বলেছি, যাবজ্জীবন মামলায় আসামিরও জামিন পাওয়ার নজির আছে। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন। দুদকের আইনজীবী মামলার শুনানিতে যেসব যুক্তিতর্ক করেছেন, সেগুলো অনেকটা মেরিটের ওপর। আমরা বলেছি, আমরা মেরিটের ওপর শুনানি করব না। আমরা মানবিক কারণে জামিন চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু আদালত তা আমলে না নিয়ে আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, আদালত জামিন খারিজ করার কোনো রিজন বলেননি। ফলে মামলার পরবর্তী করণীয় সিনিয়র আইনজীবীদের প্যানেলের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এতেই খারাপ যে তার শরীরে ইনজেকশন পুশ করা যাচ্ছে না। সরকার চাচ্ছে খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রাখতে। আর এই কারণেই তার জামিন হচ্ছে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।
এর আগে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে খালেদা জিয়া রাজি থাকলে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলেছেন আদালত।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর