বিজ্ঞাপন

অধিদফতরের গ্যারেজে বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের পিপিই, জানে না স্টোর

August 24, 2020 | 9:09 pm

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির শুরুতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংকটের বিষয়টি সামনে আসে প্রকটভাবে। এই সমস্যা সমাধানে ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স আন্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি)’ প্রকল্পের আওতায় দুই লক্ষ্য পিপিই সরবরাহ করার কাজ পায় এসআরএস ডিজাইন অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মে মাসে প্রতিষ্ঠানটি পিপিই সরবরাহ করা শেষ করে চুক্তিবাবদ ২৪ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে এরইমধ্যে। কিন্তু জরুরি অবস্থায় সরবরাহ করা সেই পিপিই এখনও পড়ে আছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গ্যারেজে। অথচ এসব পিপিই’র বিষয়ে কিছুই জানেন না স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্টোর কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

অধিদফতরের স্টোরেও এই পিপিই’র কোনো অন্তর্ভুক্তি নেই। এ বিষয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও পাওয়া যায়নি কোনো সদুত্তর।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের গ্যারেজের শেষ সীমায় পড়ে আছে কার্টনভর্তি পিপিই। জুন মাসের শুরুর দিকে এখানে তিন হাজার চারটি কার্টন পিপিই থাকলেও আগস্টে এখানে সেই পরিমাণ কার্টন ছিল না। কার্টনের গায়ে লেখা ‘APPROVED PPE, DGHS COVID-19, ERPP PROJECT’।

ইআরপিপি প্রকল্পের আরও যত অনিয়ম-

বিজ্ঞাপন

এই কার্টনগুলোর কিছু অংশের ওপরে লেখা ‘লেভেল-১’, ব্যাচ নম্বর ও লট নম্বর। তবে সব কার্টনে এসব তথ্য দেখা যায়নি। বিভিন্ন সাইজ উল্লেখ করা কার্টন থাকলেও কিছু কার্টনের ওপরে কোনো ধরনের ব্যাচ নম্বর বা সাইজও উল্লেখ ছিল না। কিছু কার্টনে দেখা যায় বিশ্বব্যাংকের নাম উল্লেখ থাকলেও সেগুলো মুছে দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এই সব পিপিই নিয়ে কোনো কিছুই জানানো হয়নি স্টোরকে। তাই এগুলোর বিষয়ে কিছুই জানা নেই তাদের। অন্যদিকে প্রকল্প পরিচালকরাও বলতে পারছেন না জরুরি প্রয়োজনের কেনা এই পিপিইগুলোর ভবিষ্যৎ কী?

মে মাস থেকে গ্যারেজে পড়ে থাকা এসব পিপিই’র কার্টনেই লেখা রয়েছে, এগুলো ‘লেভেল-১’ মানের পিপিই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ মানের পিপিই সাধারণ মানুষের ব্যবহারের উপযোগী। কিন্তু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা ও রোগীদের নমুনা সংগ্রহে নিয়োজিতদের জন্য ৬৪ জেলায় এসব পিপিই বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে অধিদফতর। শুধু তাই নয়, নিয়ম অনুযায়ী এসব পিপিইর মান যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি থাকলেও কমিটির সদস্যরা এসব পিপিই সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরিভিত্তিতে অনুমোদন পাওয়া ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স আন্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি)’ প্রকল্পের আওতায় এসব পিপিই কেনা হয়েছে। ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার এই প্রকল্পের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের অর্থায়ন আসছে বিশ্বব্যাংকের স্বল্প সুদ ও সহজ শর্তের ঋণ থেকে। বাকিটা খরচ হবে সরকারের তহবিল থেকে। এই প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ২০০ টাকা করে পিপিই সরবরাহের কাজ পায় এসআরএস ডিজাইন অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

১৯ মে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে পিপিই সরবরাহের চুক্তি হলেও তার আগেই পণ্য সরবরাহ করা হয়। এ বিষয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তারা কোনো সদুত্তর দিতে না পারলেও এসআরএস ডিজাইন অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাইফুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে মূল চুক্তির আগে আরেকটি কন্টাক্ট অ্যাগ্রিমেন্ট করা হয়। আমাদেরকে বলা হয়, দ্রুততার সঙ্গে পণ্য সরবরাহ করতে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে পণ্য সরবরাহ করি।’

কোথায় পণ্য সরবরাহ করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমাদেরকে প্রথমে বলা হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরে পণ্য সরবরাহ করতে। আমরা সেখানেই করি। পরে আমাদের জানানো হয় প্রকল্পে জনবল সংকট আছে তাই যেনো আমরা নিজেরাই কুরিয়ারে সরবরাহ করি। আর সেই হিসেবে আমরা সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য ডেলিভারি করি।’

বিজ্ঞাপন

গ্যারেজে পিপিই, গ্রহণ করেননি কেউ!

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১৪ মে এসআরএস ডিজাইন অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের তিনটি ডেলিভারি চালানে (চালান নম্বর ৪৭০, ৪৭১ ও ৪৭২) ১২৪০ কার্টনে আসে ৩১ হাজার পিস পিপিই। পরে ১৮ মে আরও পাঁচটি চালানে (চালান নম্বর ৪৭৯, ৪৮০, ৪৮১, ৪৮২ ও ৪৮৩) ১৭৬৪ কার্টনে করে সরবরাহ করা হয় ৪৪ হাজার ১০০ পিস পিপিই। আটটি ডেলিভারি চালানে এসআরএস ডিজাইনের পক্ষে সাইফুল ইসলাম নামে একজন কর্মকর্তা সই থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে কে এই পিপিই’র চালান গ্রহণ করেছেন, তারও কোনো সই নেই কোথাও। তিনটি চালানে প্রকল্পের পক্ষ থেকে তাপস চন্দ্র নামে একজন ব্যক্তি পণ্য বুঝে পাওয়ার স্বাক্ষর করেন।

তাপস চন্দ্র সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাকে ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় নিয়োগ করা হয়। আমাকে বলা হয় পিপিই বুঝে নিতে আর তাই আমি বুঝে নিয়ে স্বাক্ষর করেছিলাম। কিন্তু এর বেশিকিছু আমি জানি না।’

পণ্য বুঝে নিতে কোনো মান নিয়ন্ত্রণ যাচাই কমিটির সুপারিশ দেখা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো নির্দেশনা আমার ছিল না।’

অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, ‘গ্যারেজে থাকা পিপিই কোথা থেকে কোন প্রকল্পের আওতায় এসেছে, তাও জানা ছিল না তাদের। এই পিপিইগুলোর কার্টনেও ছিল না কোনো স্টিকার।’

এ বিষয়ে স্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিনারুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘কার্টনগুলো কিসের, আসলে তা সঠিক জানা নেই। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না। আমাদের এখানে বিভিন্ন দাতা প্রতিষ্ঠানের পিপিই আসলে সেগুলো আমরা রিসিভ করি। মান যাচাই সাপেক্ষে কর্মকর্তারা নির্দেশ দিলে আমি সেগুলো রিসিভ করে থাকি। তবে গ্যারেজে যে পিপিইগুলো আছে সেগুলো বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। সেগুলো শুনেছি একটা প্রকল্পের আওতায় এসেছে কিন্তু যেহেতু কোনো কাগজ আমার কাছে নাই বা সেগুলো রিসিভ করার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা ছিল না তাই আমাদের স্টোরের হিসেবে সেগুলো রিসিভ করা হয়নি।’

সারাবাংলার অনুসন্ধান বলছে, সংশ্লিষ্ট প্রায় সবগুলো নিয়ম ভেঙে, কোনো অনুমোদন ও স্টোরের কারও অনুমতি ছাড়াই ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় কেনা পিপিই পড়ে আছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গ্যারেজে।

এই সব পিপিই কেনার সময় তার মূল্য যাচাই বা পর্যালোচনার কাজ করার কথা থাকলেও তা নিয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কমিটির সদস্যরা।

৯ এপ্রিল ইআরপিপি প্রকল্পের জরুরি পণ্য ও সেবা কার্য ক্রয় করার নিমিত্তে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি করা হয়।

এই কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সেন্টারের (এমআইএস) পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পের আওতায় একটি কমিটি করা হয়েছে। যার একটি মিটিংয়ে আমি উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু সেখানে দরযাচাই সম্পর্কিত কোনো বিষয় ছিল না। তাই এ বিষয়ে আসলে কিছু বলতে পারছি না।’

মান যাচাইয়ের নিয়ম মানা হয়নি

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর পিপিই’র প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় গত ২৯ এপ্রিল বিভিন্ন পর্যায়ের পিপিই’র মান যাচাইয়ের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচটি ল্যাবরেটরিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই ল্যাবরেটরিগুলো পরীক্ষা করে অনুমোদন দিলেই পিপিই উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে অনাপত্তিপত্র দেবে ওষুধ প্রশাসন।

এছাড়া, বিশ্বব্যাংকের ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় পিপিই কেনার প্রস্তাব থাকায় এসব পিপিই’র মান যাচাইয়েও গত ৯ মে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো পিপিই কেনার আগে এই কমিটি থেকে অনুমোদন পেতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার সূত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, চিকিৎসা খাতে নিয়োজিতদের সুরক্ষায় পিপিই’র মানের সঙ্গে আপস করার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে অবশ্যই পিপিই সরবরাহের আগে দেশীয় পাঁচ ল্যাবরেটরির সার্টিফিকেট লাগবে। এরপর সেটি যাবে যাচাই কমিটিতে। সেখান থেকে অনুমতি পেলেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্টোরে পৌঁছাবে পিপিই। কেবল পিপিই নয়, যেকোনো সুরক্ষা সরঞ্জামের ক্ষেত্রেই একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। আর সব প্রক্রিয়ার পর স্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি মান নিয়ন্ত্রক কমিটির অনুমতিপত্র দেখে নিজে সই করে এসব পণ্য বুঝে নেবেন।

এদিকে, ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় সুরক্ষা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে মান যাচাইয়ে গঠিত ছয় সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কমিটি গঠনের বিষয়েই শুধু আমাদের জানানো হয়েছিল, একটা মেইল এসেছিল। কিন্তু কমিটির সদস্য সচিব এ বিষয়ে আর কিছু জানাননি। কমিটির কার্যক্রম পরবর্তী সময়ে কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাই এই পিপিইগুলোর বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এগুলোর মান নিয়েও কিছু বলতে পারব না।’

নমুনা সংগ্রহকারীদের জন্য ‘লেভেল ১’ পিপিই যথেষ্ট কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী বলেন, ‘রোগীর সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে এসে থাকেন টেকনোলজিস্টরা। তাই লেভেল-১ পিপিই দিয়ে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে না। এক্ষেত্রে যদি কিয়োস্কের ভেতরে থেকে কেউ নমুনা সংগ্রহ করে, তাহলে হয়তো লেভেল-১ পিপিই কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে। কিন্তু যাদের করোনায় আক্রান্তদের সরাসরি সংস্পর্শে আসতে হচেছ, তাদের সুরক্ষার জন্য লেভেল-৩ বা লেভেল-৪ পিপিই ব্যবহার করাই নিরাপদ।

এই কমিটির আরেকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কমিটিতে থাকার বিষয়টি সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের ফোনের পরে তিনি জানতে পারেন!

এসআরএস ডিজাইন অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাইফুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের (ডিজিডিএ) পক্ষ থেকে যে ল্যাবরেটরিগুলোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমাদের তাদের কাছ থেকে অ্যাপ্রুভাল নেওয়া আছে। আমরা বাংলাদেশে খুব ভালো মানে পিপিই দিয়ে থাকি। আমরা ডিজিডিএ থেকেও অনুমতি নিয়েছি। সবকিছু আমরা নিয়মের মধ্যে থেকেই করেছি।’

ডেলিভারি চালানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনো কর্মকর্তার সই নেই কেন— এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে যে চালান আছে, তাতে সবার সই আছে।’

এ বিষয়ে সারাবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ইআরপিপি প্রকল্পের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। ১৪ জুলাই তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি আগামীকাল আপনার সঙ্গে কথা বলব।’ ১৫ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে অফিসে গিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি দেখা করেননি। দফায় দফায় ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ইআরপিপি প্রকল্পে নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ডা. কাজী শামীম হোসেনকে। জুলাইয়ের শেষভাগ থেকে দফায় দফায় ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। অফিসে গিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। তাই এখন কোনো বিষয়ে কথা বলতে পারছি না।’

তবে প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এসআরএস ফ্যাশনস অ্যান্ড ডিজাইন, জাদিদ অটোমোবাইলসসহ এপ্রিল, মে মাসের দিকে হওয়া কার্যক্রমের বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাইছেন না কর্মকর্তারা। প্রকল্প পরিচালকের পরিবর্তনের কারণে এই প্রকল্পের সবকিছু এখন নতুনভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় কী কী কেনাকাটা হয়েছে ও কাদেরকে নিরাপত্তা সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে— এমন প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়া যায়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানের কাছেও। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব না।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট ইআরপিপি প্রকল্পের বিভিন্ন চুক্তি ও অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটির একজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। তদন্তাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’ নিজের নামও প্রকাশ করতে চাননি তদন্ত কমিটির এই সদস্য।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ৮৫০ কোটি টাকা সহজ শর্তের ঋণ দিয়ে ইআরপিপি প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। ১৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ ব্যবস্থায় প্রকল্পটিতে অনুমোদন দেওয়ার পর ২ জুন প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়। পরিকল্পনা কমিশনে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জন্য প্রকল্পটির অনুকূলে ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দের আবেদন জানানো হয়। তিন বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটি ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত চলমান থাকবে।

সারাবাংলা/এসবি/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন