বিজ্ঞাপন

১০ লাখ বেসরকারি শিক্ষক কেমন আছে, খোঁজ নিয়েছে বাংলাদেশ?

September 19, 2020 | 7:41 pm

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। সারাবিশ্বের অন্য যেকোনো পেশা থেকে এই পেশার সম্মান ও মর্যাদা অনেক বেশি। একটি দেশ বিশ্বের মধ্যে কতটা এগিয়ে যাবে তা সেদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকদের গুরুত্ব অনুধাবন করে বলে দেওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে লকডাউনের পরে সব খুলে দেওয়ার পরও শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার কারণে কত লাখ পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে তার হিসেব নেই। অনেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছে। আবার অনেকের জীবন থমকে গেছে। অনেকেই না বুঝে অযথাই মনে করছেন, আগে ফি নিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে। আসলে এ ধরনের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাত্র ২ থেকে ৫ শতাংশ। আর এই লভ্যাংশগুলো মালিকপক্ষ একাই পেয়েছে। শিক্ষক সবসময় শুধু তার পাওয়া বেতনটুকুই পেতো। তাই হঠাৎ কোনো কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় বাড়লেও এতে শিক্ষকের কোনো লাভ নেই।

১৭ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় শিক্ষকদের দুর্দশা। অধিকাংশ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষকদের বেতন অর্ধেক দিচ্ছে। আবার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান অর্ধেক বেতনও দিচ্ছে না। ফলে শিক্ষকরা তাদের পরিবারের ভরণপোষণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বেশিরভাগ শিক্ষকদের পেশাগত ধরনের কারণেই অন্য বিকল্প কাজ করতেন না। কিছু শিক্ষক তাদের জমানো টাকা দিয়ে পরিবারের ভরণপোষণের চেষ্টা করেছেন। তবে লম্বা সময় ধরে এ অবস্থা জারি থাকায় তাও আর সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকদের বেতন এদেশে এত বেশি নয় যে ৪/৫ মাস ভরণপোষণ চালানোর মতো টাকা তারা জমিয়ে রাখতে পারবেন। তাই ৪/৫ মাস পর জমানো টাকা শেষ হয়ে গেছে তাদের।

দীর্ঘদিনব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে বঙ্গবন্ধুকন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গত জুন মাসে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে পাঁচ হাজার ও আড়াই হাজার টাকা করে প্রদান করেন। তবে বাস্তবতা হলো জুলাই, আগস্ট মাস চলে গেল, এখন সেপ্টেম্বর মাস চলে— অনেক শিক্ষক, কর্মচারী প্রণোদনার টাকা হাতে পায়নি। এর কারণ হিসেবে টেকনিক্যাল কোনো সমস্যার কথা শুনা যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

নীতিনির্ধারকদের কাছে জানতে চাই ছয় মাসে কিভাবে একজন শিক্ষক পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে তার পরিবারের ভরণপোষণ করবে? দেশের বেসরকারি শিক্ষকদের কি বাসা ভাড়া দিতে হয় না? দেশের বেসরকারি শিক্ষকদের কি পরিবার নেই? বেসরকারি শিক্ষকদের কি খাদ্যের প্রয়োজন পড়ে না? জানি এই মুহূর্তে সরকারের একার পক্ষে এই ১০ লাখ পরিবারের ৬ মাস ভরণপোষণ সম্ভব নয়। করোনাভাইরাস মহামারিতে সব সেক্টরেই কর্মহীনতা বিরাজ করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য স্থগিত হয়ে আছে। অন্য সেক্টরে উৎপাদন কমে গেছে। তাই দেশের মানুষের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল কিছুই স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলে দিয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলে দেওয়া হচ্ছে না? স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে বেতন না পাওয়া কিংবা অর্ধ বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিন।

অভাবের এই দেশে, কত শত রকমের পেশায় মানুষ জড়িত। সকল পেশার মানুষের দ্বারাই দেশটা টিকে আছে। কিন্তু অন্য সব কিছু কোনোমতে চালিয়ে নিতে পারলেও শুধু বেসরকারি শিক্ষকরাই কেন শাস্তি ভোগ করবে?  বেসরকারি শিক্ষক পেশাটা অভিশাপ এই ভাবনা তৈরি হওয়ার আগে আশা করছি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

লেখক: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

বিজ্ঞাপন
প্রিয় পাঠক, লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই ঠিকানায় -
sarabangla.muktomot@gmail.com

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব, এর সাথে সারাবাংলার সম্পাদকীয় নীতিমালা সম্পর্কিত নয়। সারাবাংলা ডটনেট সকল মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে মুক্তমতে প্রকাশিত লেখার দায় সারাবাংলার নয়।

সারাবাংলা/এসবিডিই/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন