বিজ্ঞাপন

মানুষকে বোকা বানানোর জন্য সমৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে: ফখরুল

November 7, 2020 | 10:50 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মানুষকে বোকা বানানোর জন্যই সমৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। বিকেলে শুরু হওয়া এ সভা শেষ হয় রাত আটটার দিকে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সমৃদ্ধির যে কথা বলা হচ্ছে— এটা মানুষকে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয়। বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থায়। শুধু তাই নয়, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং সমস্ত প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হয়েছে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা আজ বিপন্ন। মানুষের অধিকারকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। অধিকার নেই বললেই চলে। ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। তাদের (ক্ষমতাসীন) লক্ষ্য শহীদ জিয়া। তারা ভেবেছিল যে, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার পর জাতীয়তাবাদের যে আদর্শ, বাংলাদেশের স্বাধীন-সার্বভৌমত্বের যে পরিচিতি সেই পরিচিতি ধবংস করে দিয়ে তারা তাদের মতো করে আবার সেই ১৯৭২-৭৫ সালের শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির এখন মূল দায়িত্ব ৭ নভেম্বরের যে চেতনা, স্বাধীনতা-সার্বভৌত্বকে সুসংহত করবার যে চেতনা, গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার যে চেতনা, সেই চেতনাকে সমুন্নত রাখবার জন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা। এর নেতৃত্ব অবশ্যই বিএনপিকে দিতে হবে।’

তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সুসংগঠিত হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হবো। এবং দলমত নির্বিশেষ সকলকে এক করে একটা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমরা এই অপশক্তিকে পরাজিত করে একটা নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করে আবার জনগণের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।’

৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় আয়োজিত কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা প্রদান করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা ৭ নভেম্বরকে ভয় পায়। তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভয় পায়। বিএনপিকে ভয় পায়। তাই যখনই বিএনপি সংগঠিত হয়, জনগণের পাশে এসে দাঁড়ায় তখন সেটাকে নস্যাৎ করার জন্য বিভিন্নভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন চালায়।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকের এই বাংলাদেশ ৭ নভেম্বরের বাংলাদেশ নয়, আজকের এই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ নয়। আমাদের ৭ নভেম্বরের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ এদেশের মালিক, সেই মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং সেটি দিতে হলে অবশ্যই আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুসংহত করতে হবে, আমাদের একটা স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি থাকতে হবে, আমাদের অর্থনীতিকে মজবুত করতে হবে। গণতন্ত্র হত্যাকারী, অর্থনীতি ধ্বংসকারীদের দিয়ে এটা সম্ভব হবে না। সেজন্য শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘দেশে গত ১১ বছর ধরে একটা মিথ্যাচারের রাজনীতি দেখছি। ইতিহাসকে বিকৃত করে মিথ্যা বলার একটা সংস্কৃতি দেশে গড়ে উঠেছে, যা অত্যন্ত দূঃখজনক। ক্ষমতাসীনরা বার বার মিথ্যা কথাগুলোকে সত্য বলে প্রমাণিত করার চেষ্টা করছে সেই গোয়েবেলসের মতো। প্রপাগান্ডার মেশিন এমনভাবে চালিয়েছে- মনে হয় তারা যা বলছেন তা সত্য কথা।’

তিনি বলেন, ‘তারা বলেন যে, শহীদ জিয়া মার্শাল ল জারি করেছেন। কিন্তু এটা সত্য নয়। এই মার্শাল ল জারি করেছেন খন্দকার মোশতাক। তিনি (জিয়াউর রহমান) কোনো সরকারকে অপসারণ করে ক্ষমতায় আসেননি। তিনি মোটেও সংসদ ভাঙেননি। খালেদ মোশাররফ সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। এসব কথা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। যত মিথ্যাচার করা হোক না কেন জিয়া শুধু স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে নয়, ৭ নভেম্বরের পরে জাতি গঠনে তার যে ভূমিকা- এই দুটি কারণে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ড. মইন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ।

বিকেলে এই ভার্চুয়াল আলোচনা শুরুর আগে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার প্রকাশনায় ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর: সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও বাংলাদেশের নবজন্ম’ ই-বুকের উদ্বোধন করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন