বিজ্ঞাপন

সত্য-সাহসে অনড় কাদের মির্জা অনিয়মের প্রতিবাদ করবেন-ই

January 30, 2021 | 8:44 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। এজন্য আমি কথাগুলা বলছি। আমি সাহস করে সত্য কথা বলব। অন্যায়, অবিচার ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রতিবাদ করব।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তবে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলেননি বড় ভাই ওবায়দুল কাদের।

আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আসলে হাইকমান্ডের নির্দেশে আমরা যেসব কর্মসূচি নিয়েছিলাম সেগুলো স্থগিত করছি। আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের সাহেব ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা বলেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে নোয়াখালীর অপরাজনীতির বিষয়ে ইতোমধ্যে অভিযোগ গেছে। সেগুলো উনি যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। আমরা এক মাস পর আবার বিষয়টি আপনাদের জানাব।’

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন; তাহলে কি আপনি ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিলেন?- এর জবাবে বসুরহাটের নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘হাইকমান্ডের নির্দেশে আমরা এটা প্রত্যাহার করে নিয়েছি। কিন্তু আমরা একটি মাস দেখব। এই এক মাসে যদি নোয়াখালীর অপরাজনীতি বন্ধ না হয়, টেন্ডারবাজি, চাকরি বাণিজ্য, প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটিয়ে যে অপরাজনীতি চলছে- সেগুলো যদি বন্ধ না হয়, যদি অস্ত্রবাজি বন্ধ না হয়, তাহলে এক মাস পর আমরা আবার প্রেস ক্লাবে আপনাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী কর্মসূচি দেবো।’

বিজ্ঞাপন

বিগত সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে আপনি যে কথা বলেছেন সেগুলো নিয়ে ওবায়দুল কাদের আপনাকে কি কিছু বলেছেন?- এ বিষয়ে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘না, কি জন্য বলবে? আমি গঠনতন্ত্র অনুসারে কথা বলেছি। আমাদের ঘোষণাপত্রে আছে যে, আমার বাক স্বাধীনতা আছে।’ এ সময় গঠনতন্ত্রের ঘোষণাপত্রের ৫৮পৃষ্ঠায় ৩(২) ধারার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আমি এজন্য কথাগুলা বলছি। আমি সাহস করে সত্য কথা বলব। অন্যায়, অবিচার ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই প্রতিবাদ করব। আমি চাই, পরবর্তী নির্বাচনগুলো যাতে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। এর জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যার উদাহরণ আমাদের বসুরহাট পৌরসভা।’

তার মানে আগের নির্বাচনগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ মনে করেন আপনি?- এর জবাবে মির্জা কাদের বলেন, ‘এর আগের কিছু কিছু নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। সব নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ এটা ঠিক না। আর বাংলাদেশে এই যে ভোট চুরির রাজনীতি, এটা শুরু করছে জিয়াউর রহমান হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে। ১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হইছে, সে নির্বাচনটা নিরপেক্ষ হইছে, বিএনপি ক্ষমতায় আইছে। আর মাগুরা নির্বাচনসহ বিএনপি-জাতীয় পার্টির আমলে যত নির্বাচন হইছে, একটাও নিরপেক্ষ হয় নাই। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের অনেক দৃষ্টান্ত আছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন- এই নির্বাচনগুলোতে বিএনপি বলেছে যে, বারোটার পর ভোট কারচুপি হইছে। কিন্তু দিনের শেষে দেখা গেল সেখানে বিএনপি জয়লাভ করেছে। এরকম অনেক নজির আছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে সমন্বিতভাবে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় সুষ্ঠু হয় নাই। ফেনীতে সুষ্ঠু হয় নাই। আমি মিথ্যা বলতে পারব না। হাতিয়াতে সুষ্ঠু হয় নাই। চৌমুনীতে ভোট নিরপেক্ষ হইছে, সুষ্ঠু হইছে। আমরা বলছি চৌমুনীতে কোনো অনিয়ম যদি করা হয়, তাহলে নোয়াখালীর ডিসি-এসপিকে দায়ী থাকতে হবে। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই এবং জননেত্রী শেখ হাসিনাই তা পারেন।’

বিজ্ঞাপন

এসব সমস্যা সমাধানে আপনার নেত্রী ও ভাই ওবায়দুল কাদেরের কথায় আস্থা রাখছেন কিনা?- এর উত্তরে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আস্থা আছে, শতভাগ আস্থা আছে। আস্থা না থাকলে ওনার সাথে বসছি কেন? শতভাগ আস্থা আছে। থাকবে না কেন? নেত্রী আমাদের যে নির্দেশ দেবে, তা আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। নেত্রীর নীতি-নৈতিকতা আছে। কখনো কথা বলে তা থেকে সরে যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘আজকে দেখেন, নেত্রীর যে উন্নয়ন তা বিশ্বের রোল মডেল। ৭০ হাজার গরীব মানুষের মধ্যে ঘর বিতরণ করছে- এটা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন না? এটা কি অস্বীকার করতে পারবেন। তারপরে আমার ভোটের সময় আমি সাধারণ এক মহিলার কাছে ভোট চাইতে গেলাম; আমাকে বলল যে, আপনি কি জন্য এসেছেন? আমি তো ভয় পাইয়া গেছি। কিনা কি সে বলে। পরে সে বলল, জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশে পদ্মাসেতু করছে, এটা বিশ্বে বিরল। তাকে ভোট দিব না তো কাকে ভোট দিব। জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী তিন বছর যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে বাংলাদেশে কোনো কাজ আর বাকি থাকবে না।’

আগামী সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন