বিজ্ঞাপন

অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, মামলা ঠেকাতে ‘আপত্তিকর ছবি’ ধারণ

January 31, 2021 | 11:59 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ করে আসছে চক্রটি। তারা অপহরণের পর অপহরণের শিকার ব্যক্তির পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করত। এরপর ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে ২-৩ লাখ টাকা পেলেই তারা তাকে ছেড়ে দিত।

বিজ্ঞাপন

তবে তাদের অপকর্মের শেষ এখানেই নয়। মুক্তিপণ আদায়ের আগেই চক্রের নারী সদস্যদের দিয়ে অপহরণের শিকার ওই ব্যক্তির ‘আপত্তিকর ছবি’ ধারণ করে রাখত, যেন তারা লোকলজ্জার ভয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে না পারে।

এমন সব সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণকারী এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) উত্তর বিভাগের একটি দল। রোববার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আকতার এসব তথ্য জানান।

ডিবি পুলিশ যে ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে তারা হলেন— সাদেকুল ইসলাম, ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, কুতুব উদ্দিন, মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি।

বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজ আকতার বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক ব্যক্তি। এ সময় অপহরণকারী চক্রের চার-পাঁচ সদস্য মাইক্রোবাসে করে তার কাছ আসেন। পরে কৌশলে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। পরে ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি।

মুক্তিপণ পাওয়ার পর চক্রটি উত্তরার ল্যাব এইড হাসপাতালের সামনে ফেলে যায় ভুক্তভোগীকে। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি উত্তর বিভাগের একটি দল এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করেছে। এর আগেও এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

হাফিজ আকতার জানান, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ করে আসছিল। নানা কৌশল অবলম্বন করায় ভুক্তভোগীরা ভয়ে পুলিশের কাছে আসত না। চক্রটি নারী সদস্যদের দ্বারা অপহৃত ব্যক্তিদের এমন কিছু অশ্লীল ছবি তুলে রাখত, যাতে করে ভুক্তভোগীরা পরে আর সামাজিক লজ্জার ভয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে পারে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এছাড়া তারা ভুক্তভোগীদের অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখাত, যেন তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে না যায়। পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে তাদের ‘আপত্তিকর’ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলেও হুমকি দিত।

এক প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, রাজধানীর উত্তরা ও ঢাকা দক্ষিণের কিছু এলাকায় তাদের কার্যক্রমের ছাপ আমরা পেয়েছি। আসলে যেই জায়গাতে সুবিধা পায়, সেই জায়গাতেই তারা অপহরণ করে। এক্ষেত্রে তারা খুবই সাধারণ মানুষদের অপহরণ করত, যেন সেটি নিয়ে খুব বেশি আলোচনা না হয়। অপহরণের পর দুই-তিন লাখ টাকা পেলেই তারা ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিত।

এ ধরনের ঘটনার শিকার হলে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাফিজ আকতার বলেন, আমরা বলতে চাই— কেউ যদি এই যদি এই চক্রটির মাধ্যমে অপহৃত হয়ে থাকেন, তাহলে গোপনে আমাদের কাছে এসে জানান। আমরা সক্রিয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তবে আমরা যখন এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করতে শুরু করি, তখন ভুক্তভোগীরা একের পর এক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এখন পর্যন্ত মোট চার জন ভুক্তভোগী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন