বিজ্ঞাপন

৪ সপ্তাহে সর্বোচ্চ মৃত্যু, ১ সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে ২৩%

June 5, 2021 | 7:19 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগেও দেশে করোনা সংক্রমণ ও করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুর গতি কিছুটা ছিল নিম্নমুখী। সেখানে গত এক সপ্তাহে আগের সপ্তাহের তুলনায় নমুনা পরীক্ষা থেকে শুরু করে সংক্রমণ ও মৃত্যু— সবই বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব বলছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় সবশেষ সপ্তাহে প্রায় এক-চতুর্থাংশ বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। যদিও এই সময়ে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে ১০ শতাংশেরও কম। অর্থাৎ সংক্রমণের হার গেল সপ্তাহে বেড়েছে আগের সপ্তাহের তুলনায়। অন্যদিকে এই সপ্তাহের আগের দুই সপ্তাহে করোনায় মৃত্যুর পরিমাণ ছিল কমতির দিকে। অথচ গত সপ্তাহে আগের সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যুও বেড়েছে এক-চতুর্থাংশ বা ২৫ শতাংশের বেশি। সবশেষ ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই সপ্তাহেই মৃত্যু সর্বোচ্চ।

শনিবার (৫ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে করোনা সংক্রমণের সাপ্তাহিক এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের পর থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত শেষ হয়েছে ৬৫ সপ্তাহ, যেটি চলতি ২০২১ সালের ২২তম এপিডেমিওলজিক্যাল সপ্তাহ। ৩০ মে থেকে আজ ৫ জুন পর্যন্ত ছিল এই সপ্তাহটি। এর আগে ২৩ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত ছিল করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর থেকে ৬৪তম এবং চলতি ২০২১ সালের ২১তম এপিডেমিওলজিক্যাল সপ্তাহ।

বিজ্ঞাপন

বেড়েছে নমুনা পরীক্ষা

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে, ৬৪তম সপ্তাহে দেশে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৬৫১টি। পরের ৬৫তম সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে। এই সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ১১৯ হাজার ২০২টি। সপ্তাহের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ।

সংক্রমণ ও সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী

নমুনা পরীক্ষার মতো এই সপ্তাহে এসে করোনা সংক্রমণও বেড়েছে। আগের সপ্তাহে ৯ হাজার ৬৬০ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। সেখানে গত সপ্তাহে এসে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৯২৮ জনের শরীরে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণ অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় আগের সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সংক্রমণের হারও বেড়েছে। আগের সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। সেখানে গত সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ছিল ১০ শতাংশ। শতাংশের হারে ১ দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়েছে সংক্রমণ।

মৃত্যু ৪ সপ্তাহে সর্বোচ্চ

সবশেষ চতুর্থ সপ্তাহের পর টানা দুই সপ্তাহ করোনায় মৃত্যুর হার ছিল নিম্নমুখী। সেখানে সবশেষ সপ্তাহে এসে আগের সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি। ৯ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ৬২তম সপ্তাহে দেশে করোনায় মৃত্যু ছিল ২৫৬ জনের। এরপর ১৬ থেকে ২২ মে পর্যন্ত ৬৩তম সপ্তাহে মারা গিয়েছিলেন ২২৪ জন। ৬৪তম সপ্তাহ তথা ২৩ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত একসপ্তাহে এই সংখ্যা আরও কমে ২০১ জনে নেমে আসে।

টানা দুই সপ্তাহ করোনায় মৃত্যুর পরিমাণ কমে এলেও এ সপ্তাহে এসে মৃত্যু বেড়েছে। এই সপ্তাহে ২৫২ জন মারা গেছেন করোনা সংক্রমণ নিয়ে। আগের সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর সবশেষ চার সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু এ সপ্তাহেই।

বিজ্ঞাপন

সুস্থতা বেড়েছে ৫৭ শতাংশের বেশি

সংক্রমণ-মৃত্যু বাড়লেও গত সপ্তাহে এসে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থতার পরিমাণ বেড়েছে আগের সপ্তাহের তুলনায় আরও বেশি। আগের সপ্তাহে ৭ হাজার ৬১০ জন করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। সেখানে গত সপ্তাহে সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ১৭ জন। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ৫৭ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই আশঙ্কা করছিলেন, ঈদুল ফিতরে যেভাবে মানুষ অবাধ চলাচল করেছে, তাতে ঈদুল ফিতরের সপ্তাহ দুয়েক পর থেকে সংক্রমণের গতি বেড়ে যেতে পারে। ঈদুল ফিতরের পর তৃতীয় সপ্তাহে এসে করোনা সংক্রমণ ও করোনায় মৃত্যুর সংখ্যায় ঊর্ধ্বগতি তাদের সেই আশঙ্কারই প্রতিফলন হতে পারে। করোনায় সংক্রমণ-মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতির এই ধারা অব্যাহত থাকলে জনস্বাস্থ্যবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী দেশকে আবার কঠোর বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন