বিজ্ঞাপন

চীনকে ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী অবকাঠামো খাতে সহায়তা দিতে চায় জি-৭

June 12, 2021 | 8:56 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশ্বের স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে উন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ বিশাল আকারের এক অবকাঠামো সহায়তার পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে (বিআরআই) টেক্কা দিতে চায় জি-৭।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১১ জুন) থেকে যুক্তরাজ্যের কর্নওয়ালের কার্বিস বে নামক এক রিসোর্টে বৈঠকে বসেছেন জি-৭ নেতারা। ২০১৯ সালে করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এ সম্মেলনে এবারই  সশরীরে যোগ দিচ্ছেন সদস্য দেশগুলোর নেতারা। এবারের সম্মেলনে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণে জোর দিচ্ছেন তারা।

শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জি-৭ বৈঠকে ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড (বি৩ডব্লিউ)’ নামক একটি উদ্যোগ প্রস্তাব করেন। এ উদ্যোগের মাধ্যমে স্বল্প আয়ের দেশগুলোকে অবকাঠামো খাতে সহায়তা দেওয়া হবে।

এ উদ্যোগের ব্যাপারে হোয়াইট হাউজের তরফ থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হয়। হোয়াইট হাউজ জানায়, ২০৩৫ সাল নাগাদ স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে ৪০ লাখ কোটি ডলার অর্থের প্রয়োজন। জি-৭ দেশগুলো এ অর্থের জোগান দিতে চায়। শনিবার জি-৭ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছে সদস্যরা।

বিজ্ঞাপন

হোয়াইট হাউজের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘বি৩ডব্লিউ ল্যাটিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান দেশগুলো থেকে শুরু করে আফ্রিকা, ইন্দো-প্যাসিফিক পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী হবে। এর উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু, স্বাস্থ্য, ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা। আগামী বছরগুলোতে বি৩ডব্লিউ বিশ্বের স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অবকাঠামো খাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করবে’।

উল্লেখ্য, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৩ সালে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ চালু করেন। এর মাধ্যমে বিশ্বের স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে থাকে চীন। বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে সহায়তা করতে চুক্তিবদ্ধ হয়। জি-৭ সদস্য ইতালি ২০১৯ সালে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এ উদ্যোগের আওতায় চীন এশিয়া থেকে ইউরোপে লাখ লাখ কোটি ডলারের অবকাঠামো সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। চীনের এ প্রকল্পের বিকল্প হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্র মূলত বি৩ডব্লিউ পরিকল্পনার কথা জানালো।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বে অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি হিসেবে একক অবস্থান পাকাপোক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশটি বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ এক পরাশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৯ সালে ইউরোপের দেশ ইতালির চেয়েও চীনের অর্থনীতির আকার ছোট ছিল। তবে চীন বদ্ধ অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তে মুক্ত অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ, বিদেশি বিনিয়োগ আহ্বান ও বাজার সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুতই অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় পরাশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে চীন। আর স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বিনিয়োগ করে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক প্রভাবও বৃদ্ধি করছে দেশটি।

জি-৭ এর সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও জাপান শনিবার যে বি৩ডব্লিউ উদ্যোগে সমর্থন দিয়েছেন তা মূলত চীনের বিরুদ্ধে নেওয়া একাধিক উদ্যোগের একটি। ধারণা করা হচ্ছে চলতি জি-৭ সম্মেলনেই চীন বিরোধী আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন