বিজ্ঞাপন

জানাজা শেষ, বাড়ির পথে সাংবাদিক হাবীবের মরদেহ

January 19, 2022 | 4:57 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘সড়ক দুর্ঘটনায়’ নিহত তরুণ সাংবাদিক ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার হাবীবুর রহমানের মরদেহ নেওয়া হচ্ছে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। এর আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সময়ের আলোতে হাবীবের তিনটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় ডিআরইউ প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা হয় হাবীবের। জানাজা শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার সাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় জানাজা। এরপর হাবীবের কর্মস্থল দৈনিক সময়ের আলোর কার্যালয়ে তার মরদেহ নিয়ে গেলে সেখানে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এখন গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় তার মরদেহ দাফন করা হবে।

আরও পড়ুন- সাংবাদিক হাবীবুর রহমান ‘সড়ক দুর্ঘটনায়’ নিহত

বিজ্ঞাপন

এর আগে, হাবীবের মহরদেহ পৌঁছালে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে নিরবতা নেমে এসে। তার অকালমৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সহকর্মীরা চোখের জল ফেলেন। তারা স্মৃতিচারণ করেন সদা হাস্যোজ্জ্বল এই তরুণ সাংবাদিকের। শোকস্তব্ধ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

ডিআরইউ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে হাবীবের মরদেহে প্রথমে শ্রদ্ধা জানায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সংগঠনটির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস ইউংয়ের পক্ষ থেকে উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার ও কে এম শাখাওয়াত মুন, সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটু ও সারওয়ার-ই-আলম সরকার (জীবন) ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনও উপস্থিত ছিলেন। পরে তথ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে হাবীবের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সাংবাদিক হাবীবুরের মরদেহে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা

বিএফইউজে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষে সংগঠনটির  সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব সংগঠনটির পক্ষে শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু সংগঠনটির পক্ষে শ্রদ্ধা জানান।

হাবীবুর আওয়ামী লীগ ও প্রধামন্ত্রী বিটে কাজ করতেন। আওয়ামী লীগ বিটের সাংবাদিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়াও কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম, রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, দিনাজপুর সাংবাদিক সমিতি ও চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, হাবীবুর রহমানের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। হাবীবের যে জনপ্রিয়তা দেখেছি, কম মানুষই আছে এত বয়সে এমন জনপ্রিয় হয়। তবে তার মৃত্যু থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমরা যারা মোটরবাইক চালাই, তাদের আরও সতর্ক হতে হবে। কারণ এই শহরে কোথায় কোন মৃত্যুকূপ আছে, তা আমরা জানি না। সেই মৃত্যুকূপে যেন আমরা আর পতিত না হই, সেটাই কমিউনিটির সবার কাছে আমার প্রত্যাশা।

হাবীবের মরদেহে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে বিএফইউজে

তিনি বলেন, আমরা আর চাই না সড়ক দুর্ঘটনায় কিংবা অকালে কোনো প্রাণ এভাবে ঝরে যাক। একটি তরতাজা প্রাণ আমাদের কাছ থেকে বিদায় হয়ে গেছে। এটি সত্যিই হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক। ডিআরইউয়ের পক্ষে থেকে হাবীবের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো হবে।

বিজ্ঞাপন

ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব বলেন, আমরা কল্পনাও করিনি হাবীব এভাবে চলে যাবে। হাবীবের সঙ্গে সবার ভালো সম্পর্ক ছিল। তার মধ্যের নেতৃত্বের একটি ভালো প্রত্যাশা ছিল। সাংগঠনিকভাবেও সে ভালো কাজ করেছে। নেতৃত্বের প্রতি সে কমিটেড ও সৎ ছিল। যেকোনো কিছু খুব সিরিয়াসলি করত। তার মৃত্যু খুবই দুঃখজনক।

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বলেন, হাবীবের মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। হাবীব ও আমরা দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংবাদিক হিসেবে তার কাজ ছিল। প্রগতিশীল এই সাংবাদিক দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করেছে। সেক্ষেত্রে হাবীবের অবদান আছে। দেশ যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে, এ রকম সময়ে আমাদের প্রজন্মের এই তরুণ সাংবাদিক, তার খুব বড়ই দরকার ছিল। তার মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। হাবীব পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

হাবীবের মরদেহে ডিআরইউয়ের শ্রদ্ধা

এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে হাতিরঝিলের বেগুনবাড়ি প্রান্তের সিদ্দিক মাস্টারের ঢাল এলাকায় একটি মসজিদের সামনে থেকে হাবীবকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান এক পথচারী। সেখানে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাবীবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায়। তার বাবা মোহাম্মদ পিয়ার মিয়া। হাতিরঝিল এলাকার ৫/এ জোহরা মঞ্জিলে থাকতেন তিনি। তিনি এক সন্তানের জনক।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন