বিজ্ঞাপন

‘নতুন প্রজন্ম দেশ গড়ার সৈনিক, বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে তারাই’

February 24, 2022 | 4:19 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নতুন প্রজন্মকে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হিসেবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর প্রকাশনা উৎসব, বঙ্গবন্ধু স্কলার বৃত্তি প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের চূড়ান্ত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

রাজধানী সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এত গান, এত কবিতা, এত রচনা লেখা হয়েছে যা পৃথিবীর অন্য কোনো নেতার নামে লেখা হয়েছে কি না জানি না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে মানুষ আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম সেই আদর্শে আদর্শবান হয়ে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘টার্গেট ছিল ২০২১ সালের মধ্যে অর্থ্যাৎ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে একটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাব। আমরা কিছুটা পেরেছি, উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি। এর পরে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি ২০৪১ সালের মধ্যে। আজকের নতুন প্রজন্ম ২০৪১ সালের সৈনিক হবে, দেশকে এগিয়ে যাবে, উন্নয়নশীল দেশ হতে আমরা ধাপে ধাপে উন্নত দেশে উন্নীত হব।’

নতুন প্রজন্মের প্রশংসা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়ার জন্য সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। সোনার মানুষ এখন তৈরি হচ্ছে।’

তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে এবং প্রত্যেকে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বটা হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। বিশ্বকে জানার সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন আর অন্ধকারে পড়ে থাকছে না। বরং বাংলাদেশের মেধাবী ছেলেমেয়েরাও বিশ্বের কাছে নিজেদের ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারছে। জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। প্রযুক্তির সেটাই হচ্ছে বড় অবদান।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের আজকের যে অবস্থা সেটা ১৩/১৪ বছর আগেও এমন ছিল না। কিন্তু আমরা সেই পরিবর্তনটা আনতে পেরেছি। এটা হলো আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এটা অব্যাহত রাখতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং উন্নয়নের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে দারিদ্রের হার কমিয়েছে, স্বাক্ষরতার হার বাড়িয়েছে। মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা দিতে পেরেছে। সেইসঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর যে গুরুত্ব দিয়েছিলাম সেখানেও আমরা যথেষ্ট সফল হয়েছি।’

দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সরকার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ, অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। শিক্ষায়, জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, অর্থনৈতিকভাবে, বাংলাদেশের মানুষ উন্নত হবে, সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে।’

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর লেখা ১১টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। ১১টি বইয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা ‘কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর’ বইটির সম্পাদনা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ছাড়াও অনুষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নির্বাচিত ১৩ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ‘বঙ্গবন্ধু স্কলার’ বৃত্তি এবং ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজ’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বিজয়ী ১০০ জনের মধ্যে নির্বাচিত ১০ জনকে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তাদের প্রত্যেককে বৃত্তি হিসেবে এককালীন তিন লাখ টাকার অ্যাকাউন্ট পে চেক, সনদ এবং একটি সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ১০ জনের হাতে ল্যাপটপ এবং প্রধানমন্ত্রীর সই করা সার্টিফিকেট তুলে দেন স্পিকার। বাকীদের পুরস্কার যার যার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানায় আয়োজক কমিটি।

মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জাতির পিতার জীবন ও কর্ম সর্ম্পকে তরুণ প্রজন্মকে জানানোর উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয় ১০০ দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজ’ প্রতিযোগিতা। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর হতে ২০২১ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে আয়োজিত এই কুইজ প্রতিযোগিতায় নিবন্ধন করেন ১৫ লাখ ৭৬ হাজার প্রতিযোগী। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় ১০ হাজারের বেশি ব্যক্তি পুরস্কৃত হয়েছেন।

মুজিববর্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এবং জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বিত আয়োজনে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু স্কলার’ বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি এবং আন্তর্জাতিক প্রকাশনা ও অনুবাদ উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম। অনুষ্ঠানে উপকমিটির আহ্বায়ক এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ধারণ করা বক্তব্য প্রচার করা হয়। এছাড়া স্বাগত বক্তব্য দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুজিববর্ষের থিম সংগ ‘তুমি বাংলা ধ্রুবতারা, হৃদয়ের বাতিঘর’ পরিবেশন করা হয়।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন