বিজ্ঞাপন

‘এফএও সম্মেলনে প্রাধান্য পাচ্ছে জলবায়ু স্থিতিস্থাপক কৃষি পদ্ধতি’

March 10, 2022 | 5:51 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি এফএও সম্মেলনে প্রধান্য পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এই সম্মেলন থেকে বাংলাদেশ যথেষ্ট উপকৃত হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সম্মেলনে সাসটেইনেবল ফুড সিকিউরিটি (টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা) নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স এগ্রি সিস্টেম (জলবায়ু স্থিতিস্থাপক কৃষি পদ্ধতি) তৈরির বিষয়ে কথা হচ্ছে। সম্মেলনে গুরুত্ব পাচ্ছে কৃষির ডিজিটালাইজেশনর বিষয়টিও। কৃষির প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রসার ঘটানো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চলমান জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৬তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলনের তৃতীয় দিন এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। সম্মেলনের তৃতীয় দিনে কৃষিমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান এফএও সম্মেলনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ক্ষুধার্ত মানুষের খাদ্য নিশ্চিতে ঐক্যের ডাক শেখ হাসিনার

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী এফএওভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আরও সহযোগিতার কথা বলেছেন। এফও’কে আরও রিসোর্স মোবিলাইজেশ করতে হবে, যেন জলবায়ু পরিবর্তনের মতো যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। এর জন্য বিভিন্ন ফসলের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, এফএও’র ৪৬টি দেশ যেন এই প্রযুক্তিগুলো একে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে, সে বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ এখন কৃষি খাতে যে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে, তার কথাও তিনি তুলে ধরেন। এই তিনটি বিষয় হলো— মেকানাইজেশন, কমার্শিয়ালাইজেশন ও এগ্রো প্রসেসিং। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই তিনটি করতে গিয়ে বাংলাদেশের কৃষিকে আমরা মডার্নাইজেশন করেছি। কৃষির আধুনিকায়নের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন। আমরাও আমাদের বক্তব্যে এই বিয়ষটি তুলে ধরেছি।

বিজ্ঞাপন

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা সম্প্রতি লক্ষ করছি— উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত একদম উৎপাদনের মাঠে প্রযুক্তি নিয়ে যাওয়া হয়, চাষিদের সরবরাহ করা হয়। এটি একটি বড় এজেন্ডা আজকের মিটিংয়ের। উৎপাদনের পর থেকে প্রতিটি ভ্যালু চেইনে প্রযুক্তি ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা বলছি— কম্পিউটার, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট, রোবট— এগুলোও শুরু করে দিয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আবহাওয়ার পূর্ভাবাসেও প্রযুক্তির আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে। সেখানেও ডিজিটালাইজেশনের প্রয়োজন রয়েছে। কীটনাশকবিহীন কৃষির কথাও সম্মেলনে উঠে এসেছে।

তিনি বলেন, সম্মেলনে এফএও’র মহাপরিচালক এসেছেন। এটি অনেক বড় বিষয়। বাংলাদেশের কৃষিতে এফএও’র ভূমিকা অনেক। উন্নয়নশীল দেশগুলো এ সংস্থা থেকে প্রচুর সহযোগিতা পায়। প্রযুক্তির বিস্তার ও অর্থিক সহায়তা সবচেয়ে বেশি আসে। ফলে বাংলাদেশের জন্য এ সম্মেলন আয়োজন বেশ ইতিবাচক হবে। আমি মনে করি, এটি আমাদের জন্য বড় একটি সুযোগ ছিল। সেই সুযোগ আমরা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি।

আরও পড়ুন- ‘বাংলাদেশের কৃষি বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে যারা এফএও সম্মেলনে এসেছেন, ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছেন, সম্মেলন আয়োজনের পুরো বিষয়টি নিয়ে তারা খুবই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অতীতের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও বাংলাদেশ কত চমৎকারভাবে এফএও সম্মেলনের আয়োজন করেছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ শুধু নয়, এটাকে কীভাবে গুণগত মানসম্পন্ন, জলবায়ুর প্রভাবকে মোকাবিলা করে উৎপাদন বাড়ানো, দেশে শুধু নয়-দেশের বাইরে কীভাবে সরবরাহ করা যায়— এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের কৃষির অগ্রগতির প্রশংসাও করেছেন বলে জানান শ ম রেজাউল করিম।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে কীভাবে আরও উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেটি এ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে আসবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের জন্যও তা সহায়ক হবে।

এফএও’র এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলনের আজ ছিল তৃতীয় দিন। এর আগে দুই দিন এফএও’র সদস্য দেশগুলোর কৃষি সচিবদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের উদ্বোধন করেন। এশিয়া ও প্যাসিফিকভুক্ত ৪৬টি দেশের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। এফএও’র মহাপরিচালক, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন