বিজ্ঞাপন

‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সারাদেশ চিৎকার করছে’

March 11, 2022 | 4:13 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে সারাদেশ চিৎকার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সারাদেশ চিৎকার করছে, সারাদেশের মানুষ বলছে— জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে, আমরা আর পারছি না। চালের দাম, তেলের দাম তো বাড়ছেই, পেঁয়াজের দামও বাড়ছে। কারণ একটাই— আপনারা (আওয়ামী লীগ নেতা) সব লুট করছেন, চুরি করছেন, ডাকাতি করছেন। যারা দাম বাড়াচ্ছে, তারা সব আওয়ামী লীগের সদস্য, আওয়ামী লীগের লোক।’

শুক্রবার (১১ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি যখন সয়াবিন তেল কিনতে পারি না, আমি যখন চাল কিনতে পারি না, আমি যখন চিনি কিনতে পারি না, লবণ কিনতে পারি না, পেঁয়াজ কিনতে পারি না, বাসায় ফিরে আমার বাচ্চাগুলোর মুখে কী দেবো সেই চিন্তায় যখন পাগল হয়ে যাই— তখন আপনাদের পদ্মাসেতু, উড়াল সেতু আর উন্নয়ন দেখে কি কোনো লাভ আছে? এটাই হচ্ছে সাধারণ মানুষের মনের কথা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষ, মধ্য আয়ের মানুষ আজ অসহায় হয়ে পড়েছে। এই যে করুণ অবস্থা সাধারণ মানুষের, তাতে এই সরকারের কিচ্ছু গায়ে লাগে না। তাদের মন্ত্রীরা সুন্দর সুন্দর কাপড় গায়ে দিয়ে চমৎকার চমৎকার জায়গায় এদিকে ফুল ওদিকে ফুল নিয়ে বসে বক্তৃতা দেয়, বিবৃতি দেয়। কী বলে? আরে দাম তো সারাবিশ্বেই বাড়ছে, সেই সঙ্গে আমাদের ক্রয় ক্ষমতাও বেড়ে গেছে।’

‘আরে ভাই, ক্রয়ক্ষমতা কাকে বলে? ক্রয়ক্ষমতা মানে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, টরেন্টো, নিউইয়র্কে যারা কেনাকাটা করে অথবা বাড়ি কিনেছে তাদের ক্রয়ক্ষমতার কথা বলছেন, নাকি আমাদের অসহায় নিরীহ মানুষ, কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি জনতার কথা বলছেন? আমার কৃষক ভাইয়ের তো ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি ভোটে না গিয়ে কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে কথা বলতে থাকলে অতল জলে ডুবে যাবে— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এত ভয় কেন নিরপেক্ষ সরকারে? এত ভয় কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে? নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার দিয়ে দেখেন না আওয়ামী লীগ ডোবে না বিএনপি ডোবে! মানুষ বুঝে গেছে আপনাদের চালাকি, ছক বুঝে গেছে। এজন্য যারা অতীতে আওয়ামী লীগে ভোট দিয়েছিল, তারা এখন বলতে শুরু করেছে— আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না।’

তথ্যসন্ত্রাস চলছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকালই স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, এখন বড় সমস্যা হচ্ছে তথ্যসন্ত্রাস। এটা কী? যেটা আসল সেটা বলা হয় না, নকলটা বলা হয়। আজ এই সরকারের যত তথ্য, সব ভুয়া। তারা বলে, জিডিপি বেড়েছে…। সমস্ত ভুয়া।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এদের হিসাব অনুযায়ী এই জিডিপির ৪২ শতাংশ হচ্ছে ঋণ। অর্থাৎ আপনাকে-আমাকে, আমাদের সবাইকে ঋণে জর্জরিত করে দিচ্ছে। আমাদের পকেট থেকে টাকা কেটে ওই সারচার্জ, অমুক চার্জ, তমুক চার্জ নিয়ে আমাদেরকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। এই সরকার যদি বেশি দিন চলে, আমরা কি টিকতে পারব ? আমাদের অস্তিত্ব থাকবে? থাকবে না।’

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন আর কোনো কথা নাই, একটাই কথা। এখন সরে দাঁড়াও, সরে যাও। অনেক হয়েছে। অনেক মানুষকে নির্যাতন করেছ। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছ। অনেক নেতাকর্মীকে গুম করেছ। ৩৫ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়েছ।’

বিজ্ঞাপন

‘মানে মানে সরে যান। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। তা না হলে জনগণই আপনাদের ঘাড় ধরে বের করে দেবে,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল ও প্রচার সম্পাদক শামসুর রহমান শামস।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কৃষক দলের নাসির হায়দার, মামুনুর রশীদ খান, এস এম ফয়সাল, আনম খলিলুর রহমান, ওমর ফারুক শাফিন, সৈয়দ অলিউল্লাহ সিদ্দিকী, টি এস আইয়ুব, ফজলে হুদা বাবুল, শাহ আবদুল্লাহ আল বাকী, শাহ মো. মনিরুর রহমান, মাহমুদা হাবিবা, মনিরুল ইসলাম রয়েল, ইউসুফ আলী মোল্লা, মো. ইশতিয়াক আহমেদ নাসির, সাখাওয়াত হোসেন নান্নু, আসজাদুল আরিশ ডল, শফিকুর রহমান মিঠুসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন