বিজ্ঞাপন

হারিছ চৌধুরীর পরিচয় শনাক্তে প্রয়োজনে মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা: ডিবি

March 16, 2022 | 7:17 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। হারিছ চৌধুরীর পরিবারের দাবি, মাহমুদুর রহমান নাম নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেই নামেই তার মৃত্যুসনদ ইস্যু এবং দাফন হয়েছে। আর ডিবি বলছে, তার পরিচয় শনাক্তে প্রয়োজনে সাভারে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন হওয়া সেই ব্যক্তির মরদেহ তুলে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ডিবি’র প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

হাফিজ আক্তার বলেন, আমরা এরই মধ্যে এটি নিয়ে কাজ করছি। পত্রিকায় খবর এসেছে। মরদেহটি উঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করলে কিংবা ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করালে এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে, মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা মরদেহটি কবর থেকে তুলে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানিয়েছেন হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ আবেদন জানান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামিরা।

বিজ্ঞাপন

চিঠিতে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী বলেন, হারিছ চৌধুরীর আসল পরিচয়ের বিষয়টি পরিবারের পাশাপাশি বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশের আইন বিভাগ যদি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা পিতার পরিচয় নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।

চিঠিতে হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ সিলেটের দর্পনগর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান সামিরা। একই আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র সচিব এবং সিআইডি প্রধানের কাছেও পাঠিয়েছেন হারিছ চৌধুরীর মেয়ে।

হারিছ চৌধুরীর স্বজনরা বলছেন, হারিছ চৌধুরীই তার নাম-পরিচয় গোপন করে মাহমুদুর রহমান সেজেছেন। ওই পরিচয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন। ইন্টারপোলের রেড নোটিশধারী হারিছ সব গোয়েন্দার চোখে ধুলো দিয়ে প্রায় ১১ বছর ঢাকায় অবস্থায় করছিলেন।

বিজ্ঞাপন

হারিছ চৌধুরীর জন্ম সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায়। ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা শুরু তার। তবে পরে ১৯৭৭ সালে যোগ দেন জিয়াউর রহমানের জাগদলে। বিএনপি গঠনের পর সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরে যুবদলসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। ১৯৯১ সালে তাকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী করা হয়। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তার রাজনৈতিক সচিব করা হয় হারিছকে।

২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের তালিকায় ওঠে হারিছ চৌধুরীর নাম। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাসহ আলোচিত কয়েকটি মামলার আসামি ছিলেন তিনি। এই দুই মামলায় সাজাও পান তিনি। কিন্তু এর মধ্যেই ২০০৭ সাল থেকেই নিখোঁজ ছিলেন হারিছ। দীর্ঘ দেড় দশকেও তার কোনো সন্ধান পাননি কেউ।

এর মধ্যে গত ৬ মার্চ দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ১১ বছর ধরে দেশেই রয়েছেন হারিছ চৌধুরী। তবে এর মধ্যেই তিনি নাম পাল্টেছেন। মাহমুদুর রহমান নামে এনআইডি, পাসপোর্ট নিয়েছেন। থাকতেন রাজধানীর গ্রিন রোডে। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান। পরদিন তাকে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের জালালাবাদের কমলাপুর এলাকায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন মাদরাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন