বিজ্ঞাপন

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের শপথ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর

May 31, 2022 | 7:56 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের শপথ নিয়েছে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। শপথের অনুষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রেস্টুরেন্ট স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩১ মে) বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং’ আয়োজিত ‘তামাক: পরিবেশের জন্য হুমকি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, গার্লস গাইড ও স্কাউটসের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জাং রানা। পার্লামেন্টারি ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত সভায় সভাপতিত্ব করেন।

শপথের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব ধরনের তামাকপণ্যের ব্যবহার থেকে নিজেদের মুক্ত রাখার পাশাপাশি অন্যদেরও তামাকজাতপণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করার অঙ্গীকার করেন। এর মধ্য দিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশের বাস্তবায়নের লক্ষ্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অনুষ্ঠানের অতিথিরাও এই শপথ নেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘আমাদের দেশে পুরুষদের চেয়ে নারীরা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য বেশি ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, তরুণ নারীদের মধ্যেও ধূমপানের হার বাড়ছে। পাশাপাশি বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের মতো পাবলিক প্লেস ও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, বাসাবাড়ি ও রেস্টুরেন্ট— সবখানে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে আমাদের নারী ও শিশুরা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সারা দেশে আমাদের যে কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলো রয়েছে, তাদের মাধ্যমেও আমরা তামাক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করব।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ধূমপানের মধ্যে ভালো কিছু নেই। তাই তোমরা কখনো ধূমপান করবে না, অন্য কোনো তামাকপণ্যও ব্যবহার করবে না। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। এর মধ্যে দিয়েই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জাং রানা বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের এর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। তার মতে, তামাক নির্মূল করার মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন সম্ভব হবে।

সভাপতিত্বের বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত বলেন, একটি সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এজন্য জরুরি যে ধূমপান না করেও আমাদের সন্তানেরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে পাবলিক প্লেস, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও রেস্টুরেন্টে স্মোকিং জোন থাকার কারণে শিশু ও নারীরা ভুক্তভোগী হচ্ছে।

এর আগে একটি উপস্থাপনায় তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য তুলে ধরে তামাক কীভাবে পরিবেশের ক্ষতি করছে এবং পাবলিক প্লেস ও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদির মাধ্যমে কীভাবে নারী, শিশু ও অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে— তা তুলে ধরা হয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো-ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পরিচালক রফিকুল ইসলাম। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো-ফ্রি কিডস ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন