বিজ্ঞাপন

ডলার সংকটে এলসি বন্ধ, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

November 15, 2022 | 8:30 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যাংকগুলোতে দেখা দিয়েছে ডলার সংকট। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। পণ্য আমদানিতে ভাটা পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন আমদানিকারকরা।

বিজ্ঞাপন

আমদানিকারকরা বলছেন, ডলারের অভাবে অনেকে লেটার অব ক্রেডিট বা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না। এখন ভারত থেকে যেসব পণ্য আসছে তা অন্তত মাসখানেক আগে খোলা এলসির মাধ্যমে। নতুন করে এলসি খোলা যাচ্ছে না বলে মাসখানেক পর আমদানি অনেক কমে যাবে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজশাহী শাখার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাণিজ্যিক এলসি খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিষেধ করা হয়নি। তাই এলসি খোলার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।

পণ্য আমদানিকারক মো. মিজান গত মাস থেকে ঘুরছেন অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী শাখাতে। ভারত থেকে পণ্য আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের কাগজই সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে গত এক মাস ধরে কোনো ধরনের এলসি করতে পারেননি তিনি। আর ব্যবসা করতে না পেরে ব্যাংকে সুদ বাড়ছে তার। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন। এতে করে বিপাকে পড়ছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মিজানের দাবি, শুধু তিনি একাই নন। তার মতো আরও বহু ব্যবসায়ীই এলসি খোলার জন্য এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে ছুটে বেড়াচ্ছেন। ব্যাংকে গিয়ে শুনছেন ডলার নেই। ডলার সংকটে চাহিদামতো এলসি খুলতে না পেরে বিপাকে পড়ছেন আমদানিকারকরা। সংকট দ্রুত না কাটলে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা চরম বেকায়দায় পড়বেন। তবে এলসি খোলার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের এক আমদানিকারক বলেন, ডলার সংকটের কারণে এলসি খোলা যাচ্ছে না। এ কারণে ভারত থেকে আমরা কোনো পণ্যই আমদানি করতে পারছি না। এতে আমরা বেশ সমস্যায় পড়েছি। একরকম বেকার হয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। এতে বাড়ছে ঋণের বোঝা। দ্রুত এলসি খোলার সুযোগ না এলে আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীরা পথে বসবে।

এদিকে, স্বাভাবিক আমদানি-রফতানি থাকলে সরগরম থাকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর বাজার। কিন্তু এখন পুরো বাজারে মানুষের সমাগম অনেকটাই কমে গেছে। আমদানি-রফতানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, কাজ নেই। এ কারণে জিরো পয়েন্ট (বন্দর বাজার) যাওয়াই হয় না। বাড়িতে বসে বা আশপাশে ঘুরেফিরে সময় কাটাচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

সোনামসজিদ স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ জানান, এলসি নিয়ে জটিলতার কথা আমার জেনেছি। ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা এলসি করতে পারছেন না। তবে এর প্রভাব এখনই খুব প্রকটভাবে বোঝা যাবে না। কারণ এলসি করার বেশ কিছুদিন পরে মূলত মালামাল আসে। এখন যেসব মালামাল আসছে সেগুলো আগের এলসি করা। এই প্রভাবটা হয়তো আরও ১০ থেকে ১৫ দিন পরে বোঝা যাবে। এই স্থলবন্দর দিয়ে বেশি আমদানি হয় পাথর এবং পেঁয়াজ। এছাড়া ফল, ভুট্টা, ভুসি ও মসলা আসে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, ‘রাজশাহীর কোনো ব্যাংকেই ডলার নেই। তারা সব ডলার এখন ঢাকায় নিয়ে চলে যাচ্ছে। এতে করে আমাদের এলসি খোলা বন্ধ। ব্যবসায়ীরা পড়ছেন লোকসানে।’

চেম্বার সভাপতি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে চলতি মাসের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দিয়েছি। ব্যবসায়ীরা চান অতি দ্রুত এলসি খোলা শুরু হোক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আবুল কামাল আজাদ বলেন, ‘কমার্শিয়াল এলসির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নিষেধ নেই। প্রতিটি ব্যাংক তাদের নিজস্ব বৈদেশিক মুদ্রার মাধ্যমে এলসি ওপেন করবে। সেটি বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নীতি মোতাবেক তদারকি করবে। এক্ষেত্রে জ্বালানি, সার ও খাদ্যের ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়ে আসছে এবং দিয়ে যাবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন