বিজ্ঞাপন

বৈরী সম্পর্কের মাঝেও চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যে রেকর্ড

February 8, 2023 | 9:02 am

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেও গত বছর যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত মার্কিন সরকারি পরিসংখ্যানে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, ২০২২ সালে দুই দেশের মধ্যে ৬৯০.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে, যা এযাবৎকালে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৮ সালে চীন-যুক্তরাষ্ট্র ৬৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য করেছিল, যা এতদিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল।

বিজ্ঞাপন

মার্কিন ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যানালাইসিস-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, চীন থেকে প্রধানত খেলনা, ও অন্যান্য প্লাস্টিকজাতীয় পণ্য আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন এবং অন্যান্য খাদ্যপণ্যের আমদানি বাড়িয়েছে চীন।

গত বছর তাইওয়ান ইস্যু ও জিনজিয়াং প্রদেশে মানবাধিকার বিষয়ে চীনের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দাগিয়েছেন আমেরিকান রাজনীতিবিদরা। তাইওয়ান সফর করে বেইজিংয়ের সঙ্গে নজিরবিহীন কূটনৈতিক সংঘাতে জড়িয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। কিন্তু বাণিজ্যের পরিসংখ্যান বলছে এ সময় চীনে রফতানি আগের বছরের চেয়ে ২.৪ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্ররা। গত বছর চীনে ১৫৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে দেশটি।

অন্যদিকে চীন থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি বেড়েছে ৩১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত বছর চীন থেকে ৫৩৬.৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বছরের প্রথম প্রান্তিকে মার্কিন ভোক্তাদের শক্তিশালী অবস্থান চীন থেকে পণ্য আমদানির হারকে ত্বরান্বিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

একই সময় চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতিও প্রসারিত হয়েছে। ২০২২ সালে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৮২.৯ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগের বছরের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। এই সংখ্যা ২০১৮ সালের ৪১৯.৪ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড ঘাটতির পর সর্বোচ্চ।

বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই দেশের সম্পর্ক যতই উত্তেজনাপূর্ণ হোক না কেন, মার্কিন আমদানিকারকদের জন্য চীনের সস্তা পণ্য কেনার সুবিধা নেওয়া অনেকটা বাধ্যতামূলক। অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পরও চীনের পণ্য তাদের জন্য বেশ সস্তা।

২০২২ সালে চীনের সামগ্রিক আন্তর্জাতিক পণ্য বাণিজ্য রেকর্ড বার্ষিক উচ্চতায় পৌঁছেছে। গত মাসে সিনহুয়ার এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চীনের জেনারেল এডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টম-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর চীন পণ্য বাণিজ্য করেছে ৬.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের, যা এর আগের বছরের চেয়ে ৭.৭ শতাংশ বেশি। গত বছর চীন ৩.৫৩ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, যা এর আগের বছরের চেয়ে ১০.৫ শতাংশ বেশি। একই সময় চীনে আমদানি হয়েছে ২.৬৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য, যা এর আগের বছরের চেয়ে ৪.৩ শতাংশ বেশি।

বিজ্ঞাপন

তবে কঠোর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে চীনে গত বছর মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ শতাংশ, যা গত কয়েক দশকের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে দুর্বল প্রবৃদ্ধি। তবে গত বছরের ডিসেম্বর হঠাৎ বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেয় চীন সরকার। এতে দেশটির অর্থনীতির পালে ফের হাওয়া লাগে। সবমিলিয়ে চলতি ২০২৩ সালে চীনের অর্থনীতির গতি নিয়ে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা অনেকটাই কেটে গেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.১ শতাংশ, যা এর আগের বছর ছিল ৫.৯ শতাংশ। তবে দেশটিতে বর্তমানে বেকারত্বের হার সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। এছাড়া মূল্যস্ফীতিও কমছে। এতে মার্কিন অর্থনীতিতে চলমান হতাশা অনেকটাই দূর হয়েছে।

সারাবাংলা/আইই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন