বিএনপির অবস্থান ইহুদিদের পক্ষে: তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ফিলিস্তিন ও ইসরাইল ইস্যুতে নিশ্চুপ থেকে বিএনপি ইহুদিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

রোববার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরন্দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিএনপি একটি বৃহত্তর গোষ্ঠীকে খুশি রাখতে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল ইস্যুতে কোনো কথা বলছে না অভিযোগ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ যে ফিলিস্তিনে পাখি শিকারের মত করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, হাজার হাজার অসহায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, এই নিয়ে বিএনপি ও মির্জা ফখরুলের মুখে কোcbf কথা নেই, আপনারা এদের চিনে রাখুন। ইসরায়েল ইস্যুতে নিশ্চুপ থেকে বিএনপি মূলত ইহুদিদের পক্ষ নিয়েছে।’

‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সেটার প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমিও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রতিবাদ জানিয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। আর বিএনপির মুখে কোনো কথা নেই। একটি বৃহত্তর গোষ্ঠী অখুশি হতে পারে সে কারণে বিএনপি এ নিয়ে কোcbf কথা বলে না। অর্থাৎ তাদের অবস্থান ইহুদিদের পক্ষে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ফিলিস্তিনের অসহায় নিরীহ মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে, বিএনপি’র মহাসচিবকে যখন সাংবাদিকরা এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে প্রশ্ন করেন, তখন তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, হামাসের ওপর কিংবা ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর হামলা নিয়ে কথা বলার সময় নেই, আমরা দেশে অনেক সমস্যায় আছি। তার মানেটা কী?

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত এখন অনেক লম্বা লম্বা কথা বলছেন, দেশটাকে তারা বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চান। দেশটাকে বিক্রি করে দিতে চায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে সমগ্র পৃথিবী প্রশংসা করছে, আর বিএনপি-জামাতের হিংসা হচ্ছে। পদ্মা সেতু হবার আগে বলেছিল এই সেতু হবে না।’

‘পদ্মা সেতু হওয়ার পর লজ্জায় চুপি চুপি রাতের অন্ধকারে সেতু পার হয়েছে বিএনপি নেতারা। এখন পদ্মা সেতুতে রেল চালু হয়েছে। আমি তাদের আহ্বান জানাই, ট্রেনে চড়ে পদ্মা সেতু পার হওয়ার জন্য, আপনাদের টিকেটের টাকাও আমরা দিয়ে দেব।’

বিএনপি সেমিফাইনালে গেরে গেছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল অক্টোবর মাসে নাকি ফাইনাল খেলা। তারা তো সেমিফাইনালেও জিতেনি। তারা বলেছিল খালেদা জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়ার কি মুক্তি হয়েছে? হয়নি। তাহলে সেমিফাইনালে হেরে গেছে বিএনপি।’

‘যারা সেমিফাইনালে হেরে গেছে তাদের সাথে কি ফাইনাল খেলা হয়? হয় না। তারা যদি খেলতে চাই, তাহলে যুবলীগের সঙ্গে খেলতে পারে। আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে খেলবে না।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ২২ টি প্রকল্পের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ নানা ধরনের ভাতা প্রদান করছে। এর বাইরে ওএমএসের চাল ও ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হচ্ছে।’

‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে উপকারভোগী আছেন, তারা যে পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করেন সরকার তার দ্বিগুণ পরিশোধ করেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য যেভাবে নানা ধরনের সুবিধা আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে এটা অতীতে কেউ করেনি।’

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সব ধরনের ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নে দুই থেকে তিন হাজার উপকারভোগী আছে। তারা সরকারের নানা ধরনের ভাতা পাচ্ছে। আগেও খালেদা জিয়া, এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের সরকার ছিল, কিন্তু এসব আগে কখনও ছিলনা। শেখ হাসিনা যখন ১৯৯৬ সালের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পান তখন থেকে এসব ভাতা চালু হয়েছে।’

‘২০০১ সালে যখন বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসেন, তখন এসব ভাতা সংকুচিত হয়ে গেল। তাই আবারও যদি সে বিএনপি ক্ষমতায় আসে আপনারা যারা এ ধরনের ভাতা পাচ্ছেন সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।’

শ্রীপুর-খরন্দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেনের সভাপতিত্বে ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা, উপজেলা সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, ইউনিয়ন সভাপতি রতন চৌধুরী, সাবেক সহ সভাপতি নুরুল হুদা, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সেকান্দর আলম বাবর।

সারাবাংলা/আইসি/একে