বিজ্ঞাপন

পোশাক খাতে নিরাপত্তার অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছে ইইউ মিশন

November 16, 2023 | 10:53 am

স্টাফ করেসপেন্ডেন্ট

ঢাকা: এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) বাণিজ্য ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি মূল্যায়ন করতে ঢাকা সফর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি পর্যবেক্ষক মিশন। ১২ থেকে ১৬ নভেম্বর— চার দিনের সফরে পর্যবেক্ষক মিশনটি বাংলাদেশের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন, তৈরি পোশাকের ব্র্যান্ড এবং বিজিএমইএ-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।

বিজ্ঞাপন

ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর পাওলা পাম্পালোনি এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন। কর্মসংস্থান ও বাণিজ্য সম্পর্কিত ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন দলটিতে। ইইউর ওয়েবসাইটে সফরের একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে প্রতিনিধি দলটি।

এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) ব্যবস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই সুবিধার আওতায় অস্ত্র ছাড়া বাকি সব বৈধ পণ্য ইইউর বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত রফতানি করা যায়। তবে এই সুবিধা পেতে হলে দেশগুলোকে মানব ও শ্রম অধিকারের মূল কনভেনশনগুলো মেনে চলতে হয়। ২০২২ সালে ইইউর বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি হয়েছে ২৪ বিলিয়ন ইউরোর বেশি। বাংলাদেশ ইবিএ সুবিধার সবচেয়ে বড় সুফলভোগী একটি দেশ।

বাংলাদেশ সফর করা ইইউ কর্মকর্তারা তাদের পর্যবেক্ষণে পোশাক খাতে নিরাপত্তার মান নিয়ে অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার উন্নতির জন্য নেওয়া কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

তবে শ্রম ও মানবাধিকার উভয় ক্ষেত্রেই কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে মূল ইবিএ কনভেনশনগুলো মেনে চলার জন্য প্রচেষ্টা জোরদারের প্রয়োজন আছে বলে উল্লেখ করেন তারা। ইবিএ কনভেনশনের উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, যেমন সামাজিক এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর), মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রক্ষা এবং সুশীল সমাজের কার্যক্রম পরিচালনার পরিবেশ তৈরি করা। ইইউ বাংলাদেশকে এ বিষয়ে ২০২৩ সালের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর)-এর সুপারিশ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে উৎসাহিত করেছে।

শ্রম অধিকারের বিষয়ে মিশনটি সুপারিশ করে যে, বাংলাদেশ তার নীতি ও অনুশীলনগুলো আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করবে। পর্যবেক্ষণ দলটি জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা (এনএপি) সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। বিশেষ করে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শের মাধ্যমে সংগঠনের স্বাধীনতা, সম্মিলিত দর কষাকষি এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রতিনিধিত্বমূলক অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ শ্রম আইনের সাম্প্রতিক সংশোধনী শুধুমাত্র আংশিকভাবে ইইউ এবং আইএলও-এর উদ্বেগের সমাধান করেছে বলে মনে করে ইইউ পর্যবেক্ষণ মিশনটি। এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দলটি দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে ইইউ এবং আইএলও-এর উদ্বেগ আমলে নিয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইনের আরও সংশোধনী দ্রুত চালু করার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে। এনএপি-এর অধীনে সম্মত সময়সূচিতে বিলম্ব লক্ষ্য করে ইইউ দলটি কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সংস্কার ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পর্যবেক্ষণ দলের প্রধান ডিরেক্টর পাওলা পাম্পালোনি বলেন, বাংলাদেশ সফর মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকার পূরণের গুরুত্ব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একটি মূল্যবান সুযোগ করে দিয়েছে যা ইবিএ ব্যবস্থার একটি অন্তর্নিহিত অংশ। প্রয়োজনীয় সংস্কার ত্বরান্বিত করার জন্য আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ এবং ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাব।

ইইউ বাংলাদেশ সরকার এবং সকল অংশীজনের সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সংলাপের মাধ্যমে ইবিএ সম্মতির পরবর্তী পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে। পরবর্তী ইইউ জিএসপি রিপোর্ট নভেম্বরের শেষের দিকে প্রকাশ হবে। ইবিএ শর্তাবলীর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্মতির বিশদ মূল্যায়ন থাকবে ওই রিপোর্টে। ইইউ পরবর্তী ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনে শ্রমখাতে সংস্কারের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে। ২০২৪ সালের শেষ দিকে যৌথ কমিশনের ওই পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

সারাবাংলা/আইই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন