বিজ্ঞাপন

তিতাস ১৪ নম্বর কূপ সংস্কার শুরু, দিনে মিলবে দেড় কোটি ঘনফুট গ্যাস

March 19, 2024 | 11:55 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপ বন্ধ রয়েছে প্রায় আড়াই বছর। অবশেষে সংস্কারের মাধ্যমে সচল করে কূপটি থেকে গ্যাস তুলতে যাচ্ছে সরকার। সে লক্ষ্যেই ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার (সংস্কার কাজ) শুরু হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কূপের ওয়ার্কওভার শেষ হবে। তখন এই কূপ থেকে প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাসের এই কূপে ওয়ার্কওভার কাজের উদ্বোধন করেন বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী ফজলুল হক। তিতাসসহ বিভিন্ন গ্যাস ক্ষেত্রের সাতটি কূপ নতুন করে ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে সচল করার প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই কূপে ওয়ার্কওভারের কাজ শুরু হয়েছে। এ সময় জানানো হয়, পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি কূপে ওয়ার্কওভার করা হবে।

বিজিএফসিএল সূত্রে জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে পুরোনো তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ২৩টি কূপ থেকে প্রতিদিন ৩৯২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। তবে এর মধ্যে চারটি কূপ বিভিন্ন কারণে বন্ধ রয়েছে। তার একটি ১৪ নম্বর কূপ। ২০০০ সালে খনন করা হয় সরাইল বিশ্বরোড মোডে অবস্থিত কূপটি। ২০০৯ সাল পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই কূপটি থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়। কূপটির সক্ষমতা ছিল ২৯ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৯ সালেই কূপটি থেকে গ্যাসের সঙ্গে পানি আসতে থাকে। এতে কূপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ওয়ার্কওভার করে ওই বছরই ফের কূপটি থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়। এ সময় এর উৎপাদন সক্ষমতা কমে দাঁড়ায় ২০ মিলিয়ন ঘনফুটে। ২০০০ সাল পর্যন্ত ওই হারেই গ্যাস তোলা হয় তিতাসের এই ১৪ নম্বর কূপ থেকে। তবে ২০০০ সাল থেকেই আবার কূপটিতে গ্যাসের সঙ্গে পানি আসতে শুরু করলে উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। পানির পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে গেলে ২০০১ সালের ১ নভেম্বর কর্তৃপক্ষ কূপটি থেকে গ্যাস উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।

তিতাসের চারটি কূপ ছাড়াও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানির আরও কয়েকটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ রয়েছে নানা কারণে। সার্বিকভাবে গ্যাস উত্তোলনের পরিমাণও তাই কমেছে। এ পরিস্থিতিতে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে তিতাস ছাড়াও মেঘনা, বাখরাবাদ ও হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের বন্ধ থাকা অন্তত সাতটি কূপ ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে সচল করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিজিএফসিএল। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২৩ কোটি টাকা।

প্রকল্প পরিচালক ইসমাইল মোল্লা জানান, প্রকল্পের অধীনে যে সাতটি কূপের ওয়ার্কওভার করানো হবে, এর মধ্যে চারটির কাজ করবে বাপেক্স। তিতাসের ১৪ নম্বর কূপের কাজ শেষ করে পর্যায়ক্রমে বাকি কূপগুলোর ওয়ার্কওভার শুরু হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে ১৪ নম্বর কূপটির ওয়ার্কওভার শেষ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ইসমাইল মোল্লা বলেন, ১৪ নম্বর কূপটি ওয়ার্কওভারের পর সচল হলে এখান থেকে দিনে অন্তত ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া সম্ভব। আর প্রকল্পের অধীন সাতটি কূপের কাজ শেষ হলে জাতীয় গ্রিডে দিনে যুক্ত হবে আরও ৬০ থেকে ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানির এমডি প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, গত ৫৫ বছরে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের কূপগুলো থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ টিএসএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কূপগুলোতে গ্যাস চাপ কমে গেছে। এ কারণে উৎপাদনও কমছে।

ফজলুল হক বলেন, গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক রাখতে কয়েকটি কূপে আমরা ওয়েলহেড কম্প্রেশর স্থাপন করেছি। যে কূপগুলো বন্ধ আছে সেগুলো সচল করার জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্পের অধীনে ওয়ার্কওভার শেষে কূপগুলো চালু হলে গ্যাসের উৎপাদন আরও বাড়বে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজিএফসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (প্রকল্প ও উন্নয়ন) জাকির হোসেন তরফদার, মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আশরাফুল আলমসহ কারিগরি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন