বিজ্ঞাপন

চুড়িহাট্টার আগুনে হতাহতে শোকের ঘোষণা আসবে: প্রধানমন্ত্রী

February 23, 2019 | 11:17 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টার আগুনে হতাহতদের জন্য রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এটা একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা যা আমাদের সবাইকে ব্যথিত করেছে।

হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি শোক কর্মসূচি ঘোষণা করবো। আজ ছুটির দিন আগামীকাল রোববার অফিস খুললে কেবিনেট সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে শোকের ঘোষণা আসবে।

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইন্সটিটিউটে ‍চুড়িহাট্টায় আগুনে দগ্ধদের দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি আরও বলেন, আগুনে দগ্ধদের চিকিৎসায় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়ণে আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নেভানোর জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে।

আগুন ছড়িয়ে পড়ার পেছনে এখানকার কেমিক্যাল গুদামগুলো দায়ী এমনটা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মোবাইল কোর্ট বসিয়েও কারখানগুলো অপসারণ করেছি। কিন্তু সেগুলো আবার বসেছে। এগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে। আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় আগুন নেভানোর কাজ বিঘ্নিত করার জন্য সংবাদকর্মীদের প্রতি দোষারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সংবাদ কর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আগুন নেভানো ব্যাহত হয়েছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বিশেষ করে টিভি সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন। এটা কি প্রশ্ন করার সময়! উত্তর আশা করেন কিভাবে? তারা কাজে যাবেন। অথচ তাদের আটকে রেখে প্রশ্ন করা হচ্ছে।

আগুন নেভানোর জন্য পানির উৎসের অপ্রতুলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় এক সময় অনেক পুকুর ছিলো সেগুলো ভরাট করে ফেলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া খালগুলো উদ্ধারের ওপর গুরুত্ব জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় পুরনো ঢাকার ধোলাই খাল ও আশপাশে অনেক খাল ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেগুলো দখল হয়ে গেছে, স্থানীয়রা ভরাট করে ফেলার কারণে ওই এলাকায় দুর্ঘটনার সময় পানি পাওয়া যায়না। আগুন নেভানোর সময় যদি পানি না পাওয়া যায়, তাহলে ফায়ার সার্ভিসের কী করার আছে? বলেন প্রধানমন্ত্রী।

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলো প্রশস্ত করার জন্য মেয়রকে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুরান ঢাকার রাস্তাঘাট একেবারে সরু। সেই রাস্তায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার কোনো উপায় নেই।

তিনি বলেছেন, পুরান ঢাকার সরু রাস্তা, গলি নতুন করে গড়তে হবে। এত সরু গলি থাকার কারণে আগুন লাগলে সাথে সাথে সেখানে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, পুরান ঢাকায় এত গলি যে, আমরা হেলিকপ্টার দিয়েও পানি দিতে পারিনি। এটাও খেয়াল রাখতে হয়েছে যে হেলিকপ্টারের বাতাস থেকও আগুন ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই নিরাপদ দূরত্ব থেকে হেলিকপ্টারে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পুরান ঢাকার এই কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে চেয়েছিলাম

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে নিমতলীতে ঘটা অগ্নিকাণ্ডের পর আমরা পুরান ঢাকার এই কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে চেয়েছিলাম। তার জন্য কেরানীগঞ্জে জায়গা করে দিয়েছিলাম। প্রজেক্ট নিইয়েছিলাম। কিন্তু মালিকরা রাজি হয়নি। আধুনিক গোডাউন তৈরি করে দিতে যাচ্ছিলাম। কারণ এসব কেমিক্যাল সুরক্ষার জন্য জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। কিন্তু যেহেতু মালিকরা রাজি হয়নি, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।

তিনি জানান, আমরা প্রথমে যেভাবে প্রজেক্ট শুরু করেছিলাম, সেভাবেই করে দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী জানান, বার্ন ইউনিটে আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনে দিয়েছি। তিনি ৭২ ঘণ্টা পার না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও সেবাকর্মী ছাড়া গণমাধ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষদের প্রতি রোগীদের কাছে না যাওয়ার আহ্বান জানান। কারণ এতে ইনফেকশন হতে পারে, রোগীরা মুমূর্ষু হয়ে পড়তে পারে।

এদিকে, এ ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর সেবার জন্য উদ্ধারকর্মী ও চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি রপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, স্থানীয় সাংসদ হাজী সেলিম, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিচালক ব্রি. জে এ কে এম নাসিরউদ্দিন, ঢামেকের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন, পরিচালক অধ্যাপক  ডা. আবুল কালাম সহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এমএইচ/জেএএম/জেএ/আরএ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন