বিজ্ঞাপন

কোটা আন্দোলন: রাশেদ খানসহ ২০ শিক্ষার্থীর জামিন

August 20, 2018 | 4:50 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খানসহ এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ২০ শিক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছে আদালত।

সোমবার (২০ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের একাধিক এজলাস তাদের জামিন দেন। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ ও রমনা থানায় একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে শাহবাগ থানায় দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি ২২ জন। অন্যদিকে, রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় পাঁচ জনকে। জামিন পাওয়া ২০ শিক্ষার্থীর মধ্যে কয়েকজন একাধিক মামলার আসামি।

বিজ্ঞাপন

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এছাড়া বাকি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, নাশকতা ইত্যার অভিযোগ ছিল।

বিজ্ঞাপন

শাহবাগ থানায় দায়ের করা ২০ নম্বর মামলার আসামিরা হলেন মাসুদ আলম মাসুদ, আবু সাঈদ ফজলে রাব্বী, রাকিবুল হাসান, রাশেদ খান, আতিকুর রহমান, সাইদুর রহমান।

২২ নম্বর মামলার আসামি সোহেল ইসলাম, মাসুদ সরকার, জসিম উদ্দীন, আবু সাঈদ, আলী হোসেন, রাকিবুল হাসান, মশিউর রহমান, জসিম উদ্দিন আকাশ, মাসুদ আলম মাসুদ।

২৩ নম্বর মামলার আসামি সাখাওয়াত হোসেন, ফারুক হোসেন, তরিকুল ইসলাম, মাসুদ আলম মাসুদ, রাকিবুল হাসান, আবু সাঈদ, ফজলে রাব্বী।

১ (৭) নম্বর মামলার আসামি রাশেদ খান।

বিজ্ঞাপন

রমনা থানায় দায়ের করা মামলার আসামি ইউসুফ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম তৌহিদ, আলমগীর হোসেন, মাহবুবুর রহমান আরমান ও সাখাওয়াত।

কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার চেয়ে গত ৮ এপ্রিল শাহবাগে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। দিনভর অবস্থান অব্যাহত থাকলে ওইদিন সন্ধ্যায় তাদের সরিয়ে দিতে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। পুলিশের অভিযানে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ ছেড়ে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অবস্থান নেন। রাতভর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘাত শুরু হয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।

আন্দোলনের দুই দিন পর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।

আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উপাচার্যের বাসা ভাঙচুর, পুলিশকে মারধর, কর্তব্যে বাধা, ওয়াকিটকি ছিনতাই এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা চারটি মামলায় কারাগারে থাকা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল।

একে একে মামলা হওয়ায় ধরপাকড়ের মধ্যে পড়েন কোটা আন্দোলনকারী নেতারা। আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাশেদকে খানকেও গ্রেফতার করা হয়।

গত ১ জুলাই দুপুরে মিরপুর-১৪ নম্বরের ভাষানটেক বাজার এলাকার মজুমদার রোডের ১২ নম্বর বাসা থেকে রাশেদকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

পরে শাহবাগ থানায় করা আইসিটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। মামলাটি দায়ের করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়।

মামলার নথিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন, যা প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন। এরপরও গত ২৭ জুন রাশেদ খান ‘কোটা সংস্কার চাই’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে ভিডিও লাইভে এসে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মানহানিকর বক্তব্য ও মিথ্যা তথ্য দেন।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের এ মামলায় রাশেদ খানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায় ভাঙচুরের আরেক মামলায় রাশেদকে আরও পাঁচ দিন রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

রিমান্ড শেষে গত ১৮ রাশেদকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর জামিন নাকচ করে রাশেদকে কারাগারে পাঠান। এরপর থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন।

রাশেদসহ কারাগারে ছিলেন আরও ছয় জন। একাধিকবার জামিন চেয়েও তাদের জামিন হয়নি। অবশেষে ঈদুল আজহার দুই দিন আগে তারা জামিন পেলেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কার, মূল্যায়ন ও বাতিল সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের কমিটি করেছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমকে উচ্চ পর্যায়ের এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

এরইমধ্যে ওই কমিটি মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখে বাকি কোটাগুলো বাতিল করার পক্ষে মত দিয়েছে। গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে আদালতের মতামত নেওয়া হবে।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা না রাখার বিষয়ে সরকার অ্যাটর্নি জেনারেলের মন্তব্যও চেয়েছে। সোমবার (২০) আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার মন্তব্য জানিয়েছেন। তবে মন্তব্যের বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য জানাতে চাননি।

সারাবাংলা/এআই/টিআর/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন