বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় মেয়াদে তিন লক্ষ্য আইনমন্ত্রীর

January 8, 2019 | 11:04 am

।। আব্দুল জাব্বার খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা:  দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পেয়ে তিন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। সোমবার (৭ জানুয়ারি) দ্বিতীয় মেয়াদে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর গুলশানের বাসায় সারাবাংলাকে দেওয়া বিশেষ  সাক্ষাৎকারে এই লক্ষ্যের কথা জানান তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, এবারে তিনটা বিষয়ে আমি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবো। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে- বিশাল মামলার জট কমানো।

দেশে এখন ৩৪ লাখ মামলার জট রয়েছে রয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশে সত্যি মামলার সংখ্যা সেটা আগে নির্ণয় করবো। এরপর তড়িৎ পদক্ষেপ নিয়ে এই মামলার জট কমিয়ে ফেলা হবে এবং আগামী ছয় মাসের মধ্যে আমি এটা করবো।

বিজ্ঞাপন

দেশে একটি ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি তৈরি আইন মন্ত্রীর দ্বিতীয় লক্ষ্য, যেখানে বিচারকরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এটি করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রীর তৃতীয় লক্ষ্য, ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসকে আরও শাক্তিশালী করা। তিনি বলেন, বিনা খরচে জনগণ যেন বিচার পায় তার ব্যবস্থা করতেই হবে।

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধর্ষনের ঘটনায় দোষীদের বিচারের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান আইনমন্ত্রী।  এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সুবর্ণচরের ধর্ষনের ঘটনার বিষয়ে নিশ্চয়ই আমি অত্যন্ত তড়িত পদক্ষেপ নিব। আমি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো এ ঘটনার তদন্ত যেন দ্রুত শেষ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমার পেছনের রেকর্ড কিন্তু আছে, তদন্ত শেষ হয়ে যখন কোনো মামলা আসে, তখন প্রসিকিউশনকে দিয়ে তা দ্রুত শেষ করি। ঠিক সেই পন্থায় আমি এটাকেও শেষ করবো। জনগণ এবং ভিকটিম যাতে সুষ্ঠ বিচার পায়, মামলাটি শেষ করতে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল হোক বা নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল হোক, সুষ্ঠু বিচার এবং দ্রুত বিচার যেন হয় তার ব্যবস্থা আমি করবো।’

দেশে এই প্রথমবারের মতো টানা দ্বিতীয় মেয়াদে আইনমন্ত্রী হয়েছেন আনিসুল হক। এই বিষয়ে তার অনুভূতি জানতে চায় সারাবাংলা।

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই একটু তো উদ্বেলিত। তার আগে আমি বলতে চাই- জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি আমাকে দ্বিতীয় বারের মতো দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি চেষ্টা করবো তিনি আমার উপরে যে আস্থা রেখেছেন তার মর্যাদা রক্ষা করতে। সেটাই আমার বড় প্রচেষ্টা। জনগণ যাতে স্বল্প খরচে সুষ্ঠু ও তড়িৎ বিচার পায় সেই প্রচেষ্টা আমি চালিয়ে যাব। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সহায়তা করবো।’

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু হত্যার আসামিসহ বিদেশে পলাতক দণ্ডিত আসামিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে অনেক কথাই বলতে পারি না। তার কারণ হচ্ছে অনেক পদক্ষেপই আমাদের সতর্কতার সঙ্গে নিতে হয়। কারণ হচ্ছে, কী পদক্ষেপ নিচ্ছি তা যদি বলে ফেলি তাহলে পলাতকরা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ফেলে, এজন্যই অনেক কথাই বলতে পারবো না। কিন্তু এইটুকু আশ্বস্ত থাকেন, এই সরকার তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা চেষ্টা করা দরকার তার সবটুকু করবে।’

গত মেয়াদে কোন কাজ না করতে পারা বা কোনো কাজে সফল না হওয়া নিয়ে অক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে সে প্রসঙ্গেও কথা বলেন আইনমন্ত্রী। বলেন, ‘আক্ষেপ নয়, তবে সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা যদি দূরভিসন্ধি, ষড়যন্ত্র না করতো, দূর্নীতি না করতো তাহলে আমার মনে হয় অনেকটা স্বস্তির সঙ্গে আমি কাজ করতে পারতাম।’ ওই সময়টা একটু চ্যালেঞ্জিং ছিল বলেও তিনি জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘এমন অনেক কথাই আছে আজকে আমি বলতে পারবো না। তার মধ্যে যুদ্ধাপরাধের বিচারে তিনি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। কাঙ্খিত রায় পেতে আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে।’

আদালতকে ব্যবহার করে সরকার আবার ক্ষমতায় এসেছে বিএনপির মহাসচিবের এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুধু উনাদের (বিএনপি)কে এ কথাই বলবো। তারা যারা আজকে এ কথা বলছেন, আপনারা সাংবাদিক, আপনারা দেখেছেন, তাদের দলের মধ্যে কতটা অব্যবস্থাপনা। আমি একটা উদাহরণ দেই, আমার আসনেও তাদের পক্ষ থেকে চারজনকে মনোনয়ন দিয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন মুশফিকুর রহমান। যিনি তার সম্পদ বিবরণী পূরণ করেনি যা আবশ্যক ছিল। সেজন্য উনারটা বাতিল হয়েছে। এরপর উনার অল্টারনেটিভ যাকে দেওয়া হয়েছিল, তিনি যে দিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পরিষদ থেকে পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন সেই দিনই মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এটা কি আদালতের দোষ? নাকি উনাদের অব্যবস্থাপনা? আমি তাদেরকে বলবো তারা যেন উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে না চাপায়।’

জামায়াতের বিচার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘এ আইনের যেটুকু সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে সেটা নিশ্চয় সংশোধন করবো। বিএনপি জামায়াতের বিরুদ্ধে শুধু বাংলাদেশের আদালতে রায় হচ্ছে তা নয়। বিদেশি আদালতেও তাদেরকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের অপরাধ বিচারের জন্য আইনের যে সংশোধনী প্রয়োজন সেটুকু করা হবে। এই ক্ষেত্রে সময় নির্দিষ্ট করে বলা একটু অসুবিধা।’

সারাবাংলা/এজেডকে/জেএ/এসএমএন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন