বিজ্ঞাপন

বোরহানউদ্দিনে ৬ দফায় মুসলিম ঐক্য পরিষদের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

October 21, 2019 | 6:28 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ভোলা: ভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় ভোলার পুলিশ সুপার ও বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে কঠোর বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণার আল্টিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোলা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন- বোরহানউদ্দিনে পুলিশের মামলা, আসামি ৫ হাজার

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির ভোলা জেলার যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, আল্লাহ ও নবী রাসুলদের নিয়ে কটূক্তিকারীর বিরুদ্ধে যদি দেশে কঠিন শাস্তির আইন থাকত, তাহলে বোরহানউদ্দিনে পুলিশের গুলিতে চার মুসলিমকে নিহত হতে হতো না। আমরা এ ঘটনায় হতাহতের জন্য পুলিশকেই দায়ী করছি।

বিজ্ঞাপন

ছয় দফা উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, মহানবী (স.) ও মহান আল্লাহ তায়ালা এবং ইসলামের ব্যাঙ্গ ও কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির আইন করতে হবে। বিপ্লব চন্দ্র শুভর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দিতে হবে। সংঘর্ষে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদেরকে সরকারি খরচে চিকিৎসা দিতে হবে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদেরকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে ভোলার পুলিশ সুপার ও বোরহানউদ্দিনের ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে।

মিজানুর রহমান আরও বলেন, আমরা সরকারের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ আমাদের ছয় দফা দাবি জানাচ্ছি। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের সব দাবি পূরণের সার্বিক ব্যবস্থা ও সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া না হলে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ বৃহত্তর কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

এ সময় সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা বশির উদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি শান্ত রাখার স্বার্থে আমাদের আজকের সরকারি স্কুল মাঠের সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। তবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। মঙ্গলবার বিকালে ভোলার প্রতিটি উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি, বুধবার সকাল ১১টায় জেলা শহরে মানববন্ধন এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহতদের জন্য দোয়া-মুনাজাত করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা ইয়াকুব আলী চৌধুরী, মাওলানা মো. ইউসুফ, মাওলানা আতাহার আলী, মাওলানা তৈয়বুর রহমান, মাওলানা মহিউদ্দিন, মাওলানা মাহাবুবুর রহমান, সংগঠনের সদস্য সচিব মাওলানা তাজুদ্দিন ফারুকীসহ অন্যরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার জের ধরে রোববার সকাল ১১টার দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিনে ‘তৌহিদি জনতা’র সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে এলাকাবাসীর সমাবেশ করার কথা থাকলেও পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নিশ্চয়তা পেয়ে আলেম সমাজ তাদের পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ কর্মসূচি বাতিল করেন। তা সত্ত্বেও পরদিন ঈদগাহে মানুষ জড়ো হতে থাকলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এসময় আলেমরা নিশ্চিত করেন, তারা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করবেন না। পরে পুলিশের সঙ্গে আরেকদফা আলোচনার পর উপস্থিত সবাই ঈদগাহ ময়দান ত্যাগ করেন।

এদিকে, সাধারণ মানুষসহ মুসল্লিরা ঈদগাহ ত্যাগ করলেও অন্য একটি গ্রুপ ঈদগাহে প্রবেশ করে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে উত্তেজিত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে একদল লোক বিনা উসকানিতে মাদরাসার অফিস কক্ষে অবস্থানরত পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর আক্রমণ করে। এসময় পুলিশের ওপর গুলিও চালানো হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রথমে টিয়ার শেল ও পরে শটগান থেকে গুলি ছোড়ে। পুলিশ ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চার জনের মধ্যে অন্তত দু’জনের মাথা ভোঁতা অস্ত্র দ্বারা থ্যাঁতলানো বলে নিশ্চিত করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন