বিজ্ঞাপন

শতভাগ খাঁটি সাংবাদিক ছিলেন এ বি এম মূসা

February 26, 2020 | 8:10 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সাংবাদিক এ বি এম মূসা ছিলেন উঁচু মানের সাংবাদিক। তিনি শুধু সংবাদকর্মী নন, সবার সঙ্গেই সমানভাবে মিশতেন। খোঁজ নিতেন সবার সম্পর্কে। তিনি শতভাগ খাঁটি সাংবাদিক ছিলেন। স্পষ্টভাষী ছিলেন, মুখের সামনে কথা বলতে পারতেন। মানবাধিকারের বিষয়ে কখনোই আপস করেননি। পুরো জীবন দেশ ও জাতির পক্ষে সাংবাদিকতা করেছেন এ বি এম মূসা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘এ বি এম মূসার ৮৯তম জন্মদিন: আজীবন সম্মাননা ও স্মারক বক্তৃতা-২০২০’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
এ বি এম মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোকচিত্রী সাইদা খানমকে অনুষ্ঠানে সংগঠনটির পক্ষে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে লেখক-সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘আমার বিরল সৌভাগ্য উনার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। তিনি আমার বস ছিলেন, আমি তার সহকর্মী ছিলাম; সেইসূত্রে উনাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। মূসা ভাইকে দেখেছি একজন ব্যতিক্রমী সাংবাদিক হিসেবে। সংবাদকর্মী থেকে অফিসের পিয়ন, সবার সঙ্গে উনার সম্পর্ক ছিল। প্রত্যেকের ঘরের ও বাড়ির খোঁজ নিতেন। ষাটের দশকের অন্যান্য বড় সাংবাদিকদের মধ্যে এই গুণাবলি দেখা যায়নি। তিনি শতভাগ খাঁটি সাংবাদিক ছিলেন। স্পষ্টভাষী ছিলেন, মুখের সামনে কথা বলতে পারতেন।’

দুর্বল গণতন্ত্রের চেয়ে দুর্বল সাংবাদিকতা বেশি ক্ষতিকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কমনসেন্স থাকলে সংবিধানে কী আছে, হিউম্যান রাইটসে কী আছে, কোড অব কন্টাকে কী আছে বড় বিষয় নয়; তিনি সৎ সাংবাদিক হয়ে উঠতে পারেন। মানবাধিকারের পক্ষে লিখতে পারেন। দুর্বল গণতন্ত্রের চেয়ে দুর্বল সাংবাদিকতা বেশি ক্ষতিকর। সেলফ সেন্সরশিপ খুবই খারাপ জিনিস। এতে সাংবাদিকতার মৌলিকতা নষ্ট হয়। দেশে যেমন দুর্বল গণতন্ত্র আছে তেমনি সাংবাদিকতা রয়েছে এক ধরনের সেলফ সেন্সরশিপ। এটি দেশের জন্য বড় হুমকি।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে ‘মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা পাঠ করেন অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা নিজেরা যা করতে পারে তা থেকে এজন্য তাদের বিরত থাকার কোনো কারণ নেই। সাংবাদিকদের ঐক্য ও আদর্শের শক্তি কত বেশি তা আমরা এরশাদবিরোধী আন্দোলনে দেখেছি। সেই শক্তি সাংবাদিকদের বিস্মৃত হওয়া উচিৎ নয়। কারণ এতে শুধু তার ক্ষতি নয়, মানবাধিকার কাঠামোও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সংবাদপত্রে সমর্থিত সরকারি দলের মানবাধিকার লংঘন সম্পর্কে স্ব-উদ্যোগী হয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশে তুলনামূলক কম উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। বিপরীতে বিপক্ষ দল ক্ষমতায় গেলে তার সম্পর্কে কখনো কখনো ভিত্তিহীন তথ্য প্রকাশ করে থাকে। সংসদ কার্যকর করার ক্ষেত্রে বা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সমর্থিত সরকারি দলের ব্যর্থতা সম্পর্কে প্রতিবদন কম গুরুত্ব দিয়ে ছাপানো বা এক্ষেত্রে বিরোধীদলের অতীত ব্যর্থতা বড় করে দেখানো হয়। সম্পাদকীয় পাতায় নির্দিষ্ট দলের পক্ষের লেখকদের লেখা ছাপানো হয় এবং বিরোধীদলের লেখা নিরুৎসাহিত করা হয়।’

এবছর সংগঠনটি আলোকচিত্রী সাইদা খানমকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করে। আলোকচিত্রী সাংবাদিক হিসেবে বেগম পত্রিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত ছিলেন তিনি। প্রেস ফটোগ্রাফার হিসেবেও কাজ করেছেন। সত্যজিৎ রায়ের ওপর তিনবার তার একক প্রদর্শনী হয়। দেশের সর্বোচ্চ সম্মানমূলক একুশে পদকসহ আন্তর্জাতিক একাধিক পুরষ্কারও পেয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমআই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন