বিজ্ঞাপন

ডিজিটাল সিকিউরিটি মামলায় রাষ্ট্রচিন্তা’র দিদার গ্রেফতার

May 6, 2020 | 10:35 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর উত্তর বাড্ডার নিজ অফিস থেকে ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামের একটি সংগঠনের অন্যতম সংগঠক দিদার ভূঁইয়াকে র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়ার একদিন পর তার বিষয়টি জানিয়েছে র‌্যাব-৩। র‍্যাবের দাবি তাকে তুলে নেওয়া হয়নি বরং সরকারবিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় তাকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৬ মে) সন্ধ্যায় সারাবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব-৩ অপারেশন অফিসার এএসপি আবু জাফর রহমতুল্লাহ। তাকে রমনা থানায় করা মামলায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় দিদারের অফিসে যায় সাদা পোশাকে কয়েকজন ব্যক্তি। নিজেদের র‌্যাবের লোক পরিচয় দিয়ে দিদার ভূঁইয়াকে নিয়ে যায়। একইসঙ্গে তার অফিসের দুটি সিপিইউ, একটি ল্যাপটপ এবং একটি মোবাইলও নিয়ে যায়।

গতকাল দিদার ভূঁইয়ার বোন জামাই জাকির চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেছিলেন, উত্তর বাড্ডার হল্যান্ড সেন্টারের পেছনে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় থাকেন দিদার। ওই ভবনের ছয় তলায় অ্যাবাক টেকনোলজি নামে তার একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ ও ‘পরিবর্তন চাই’ নামে দুটি সংগঠনের অন্যতম সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার সময় তিনি অফিসে অবস্থানকালে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

তবে সে সময় দিদারকে আটক করেছে কিনা এ বিষয় নিশ্চিত হতে র‍্যাব-৩ ও র‍্যাবের মিডিয়া উইং একাধিকবার যোগাযোগ করেও সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তার পরিবার। তাই বুধবার বিকেলে দিদারের সন্ধানে তার স্ত্রী ও মেয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান চান। তবে তাদেরকে সেখানে দাঁড়াতে দেয়নি নিরাপত্তা কর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন র‍্যাব কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, সরকারবিরোধী বিভিন্ন কার্টুন একে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিত একটি চক্র। তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদ ও মিনহাজ মান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে র‌্যাব-৩ প্রবাসী সাংবাদিক, কার্টুনিস্টসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে।

বিজ্ঞাপন

মামলায় আসামিরা হলেন- কার্টুনিস্ট আহম্মেদ কবির কিশোর, ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ, রাষ্ট্রচিন্তা সংগঠনের অন্যতম সংগঠক দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, মিনহাজ মান্নান, প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল ও সাহেদ আলম, সায়ের জুলকারনাইন, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কার্টুনিস্ট কিশোর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার বানাতো। আর সেসব পোস্ট করতো মুশতাক ও দিদার। আর এ অপরাধেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, র‌্যাব-৩ পর্যালোচনা করে দেখেছে, ‘i am bangladeshi’ পেজের এডমিন সায়ের জুলকারনাইন, আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ ও মোস্তাক আহমেদ নামে পাঁচজন দীর্ঘদিন ধরে পেজ চালাচ্ছে। যেখানে জাতির জনক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মহামারি সম্পর্কে গুজব, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিপ্রায়ে অপপ্রচার বা মিথ্য জেনেও তারা গুজব ছড়াচ্ছিল। এতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারাবাংলাকে বলেন, দিদারুল ইসলামকে থানায় হস্তান্তর করেছে র‍্যাব-৩। কাল তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএইচ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন