বিজ্ঞাপন

সাহেদের সর্বোচ্চ সাজার অপেক্ষায় রাষ্ট্রপক্ষ, আসামিপক্ষে শঙ্কা

September 28, 2020 | 8:11 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে। আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

আসামি সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে দাবি করে সর্বোচ্চ সাজা (যাবজ্জীবন) কারাদণ্ডের অপেক্ষায় রয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ হওয়ায় আশঙ্কায় রয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

চলতি মাসের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার এক নম্বর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।

রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার খবর-

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম দ্রুতই শেষ হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের প্রচেষ্টার কোনো ঘাটতি রাখেনি। আশা করছি আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেবেন আদালত। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তাদের আশা, সাহেদ খালাস পাবেন।

সাহেদের পক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো মামলার বিচার এত দ্রুত শেষ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। সরকার মামলাটির বিচার যেভাবে এত দ্রুত শেষ করলেন, এটা নিয়ে আমরা আশঙ্কায় আছি। রাষ্ট্রপক্ষ সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। আশা করছি, সাহেদ খালাস পাবে।

এই মামলায় গত ৩০ জুলাই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. শায়রুল। চলতি বছরের ১৩ আগস্ট মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। ১৯ আগস্ট আদালত ডিবি পুলিশের দেওয়া চার্জশিট আমলে নেন। গত ২৭ আগস্ট সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত বিচার শুরু করেন। ১০ সেপ্টেম্বর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৫ সেপ্টেম্বর। মাত্র চার কার্যদিবসে চার্জশিটভুক্ত ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয় আদালতে।

বিজ্ঞাপন

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন সাহেদ। গত ২০ সেপ্টেম্বর সাহেদের পক্ষে তার আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। ওই দিন আদালত মামলাটির রায় ঘোষণার তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ঠিক করে দেন আদালত।

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা করোনা চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছিল খোদ অধিদফতরেও। সারাবাংলার অনুসন্ধানে জানা যায়, আরও ছয় বছর আগেই এই হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। অনুসন্ধানে একে একে বেরিয়ে আসে এই হাসপাতালের আরও সব অনিয়মের কথা।

পরে গত ৬ জুলাই রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে তাদের বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন অনিয়ম-অভিযোগের প্রমাণ মেলে। স্বাস্থ্য অধিদফতর এই হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযানের পরদিন ৭ জুলাই হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুরের শাখা দু’টি সিলগালা করে সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‌্যাব।

অভিযানের সময় রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে আট জনকে আটক করলেও সাহেদ ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ধরা যায়নি। পরে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সাহেদের ঘনিষ্ঠ তারেক শিবলীকে রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ীই ১৫ জুলাই ভোরে সাহেদকে সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করে র‌্যাব। ওই সময় তার কাছে অস্ত্র পাওয়া যাওয়ায় অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলাটিরই আজ রায় ঘোষণা করবেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

সাহেদকে ডিবিতে হস্তান্তর

এমডির তথ্যে চেয়ারম্যান গ্রেফতার

রিজেন্ট হাসপাতালের ৭ জন রিমান্ডে

‘জাল টাকায় ঋণ পরিশোধ করতেন সাহেদ’

স্বাস্থ্য অধিদফতর ও রিজেন্টের চুক্তিতে যা ছিল

‘দালালের সহায়তায় দেশত্যাগের চেষ্টা করছিল সাহেদ’

‘বোরকা পরে নৌকায় ভারতে পালাতে চেয়েছিল সাহেদ’

রিজেন্ট চেয়ারম্যান সাহেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর

‘অপরাধ ঢাকতে কৌশল নিয়েছিল রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ’

সাহেদকে নিয়ে গোপন বাসায় র‌্যাবের অভিযান, জাল টাকা উদ্ধার

সারাবাংলা/এআই/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন