বিজ্ঞাপন

জিয়ার খেতাব বাতিলে জামুকার সিদ্ধান্তকে স্বাগত নানকের

February 15, 2021 | 9:58 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন অপরাধের দায়ে তার এই ‘বীরউত্তম’ খেতাবটি বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ মত দেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি আয়োজিত ‘একতরফা প্রহসনের নির্বাচনে’র প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই সমাবেশ আয়োজন করে।

এর আগে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি জামুকা’র ৭২তম সভায় জিয়াউর রহমানের ‘বীরউত্তম’ রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভাতেই বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করে জামুকা। জামুকা’র এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করা হলে সরকার পতনের আন্দোলনের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির নেতারা।

বিজ্ঞাপন

তবে জামুকার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির প্রতি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, জামুকা অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের কেন্দ্রীয় সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, জিয়াউর রহমানের ওই খেতাব প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। ওমনি বিএনপির গায়ে লেগে গেছে? তারা কি জিয়াউর রহমানকে ধোয়া তুলসিপাতা বানাতে চান? এই জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করার কতগুলো যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে বলেও দাবি করেন নানক।

তিনি বলেন, ‘বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনি মোশতাক-শাহরিয়ার-নূরদের সঙ্গে এই জিয়াউর রহমানও জড়িত ছিল। এই জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছিল। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকিরি দিয়েছিল, পদোন্নতি দিয়েছিল। সে কারণেই জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করা উচিত।

জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের আরও কারণ তুলে ধরে নানক বলেন, জিয়াউর রহমান এই দেশে গোলাম আযম, শাহ আজিজসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের পুর্নবাসিত করেছিল। এ কারণেই তো জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে অর্জিত আমাদের জননী-জন্মভূমি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে রূপ দিয়ে দেশকে দ্বিধাবিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। সেই কারণে তার খেতাব বাতিল হওয়া উচিত।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে নানক আরও বলেন, এখন তারা বলছে— জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিল! এখন তারা বলে— বঙ্গবন্ধুর দেওয়া খেতাব, সেই খেতাব কেন বাতিল হবে? আমি বলি— বঙ্গবন্ধু তাকে খেতাব দিয়েছিলেন। সেই বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করবে জিয়াউর রহমান? কেন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকবে— এই প্রশ্নের উত্তর জবাব দেন।

জাতির পিতার খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে জিয়াউর রহমান কেন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন— বিএনপি নেতাদের কাছে সে প্রশ্নও রাখেন নানক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন তাকে খেতাব দিয়েছিলেন, তেমনি এত এত অপরাধের কারণেই জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করা হবেই হবে।

বিএনপিকে নিজেদের চেহারা নিজেরা আয়নায় দেখার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মতিউর রহমান নিজামী, আব্দুল আলীম, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী— এদের মন্ত্রী বানিয়েছে খালেদা জিয়া, এরশাদ, জিয়াউর রহমানরা। এই দেশকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে দিয়েছিল। কাজেই তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। ওরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, ওরা ষড়যন্ত্রকারী। ওদের ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামালসহ মহানগর নেতারা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন