বিজ্ঞাপন

রাজধানীতে বসবে ২৫টি পশুর হাট, স্বাস্থ্যবিধিই বড় চ্যালেঞ্জ

May 24, 2021 | 11:17 pm

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মাত্র কয়েকদিন আগেই গেল মুসলামানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল ফিতর। তবে আর মাস দুয়েক পরেই আরেকটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। এই ঈদের প্রধান নিয়ম ও রীতি হলো পশু কোরবানি। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বসে পশুর হাট। মুসলমানরা সেই হাটগুলো থেকে পশু কিনে কোরবানি দেয়।

বিজ্ঞাপন

দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজধানীতেও প্রতিবছর বসে পশুর হাট। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ২৫টি পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে স্থায়ী দুটি এবং অস্থায়ী পশুর হাট ২৩টি। স্থায়ী হাটি গাবতলী ও সারুলিয়া। আর বাকি ২৩টি হাট অস্থায়ী ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বসবে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ১৩টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ১০টি পশুর হাট বসবে। তবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (২৪ মে) দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পশুর হাটের সংখ্যা দুয়েকটি কমতেও পারে বলে জানিয়েছেন তারা। জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সারুলিয়া পশুর হাটের পাশাপাশি আরও ১৩টি স্থানে এবং ঢাকা উত্তর সিটির গাবতলী পশুর হাটের পাশাপাশি আরও ১০টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসার কথা রয়েছে। গত বছরের মতো এবারও করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেই পশুর হাটগুলো বসতে যাচ্ছে। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, পশুর হাটে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কাজ করা হচ্ছে। হাট বসানোর আগে ইজারাদারদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হবে। জনসাধারণকে সচেতন করতে পোস্টার লিফলেট বিতরণ করা হবে। এছাড়া পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য সার্বক্ষণিক মাইকিং করা হবে। জনগণ যাতে অধিক সচেতন হয় সে ব্যাপারে প্রচারণা জোরদার থাকবে।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাটের জন্য সারুলিয়া স্থায়ী হাটের পাশাপাশি আরও ১৩টি হাটের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এরই মধ্যে কমিটি করা হয়েছে। কমিটি যদি মনে করে হাটের সংখ্যা কমানো প্রয়োজন, তাহলে নির্ধারিত হাটের সংখ্যা কমতেও পারে।’

ডিএসসিসি অধীন হাটগুলো হলো- সারুলিয়া, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, গোপীবাগ বালুর মাঠসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক-ই, এফ, জি, এইচ সেকশন ১ ও ২ এর খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা, গোলাপবাগে সিটি করপোরেশন মার্কেটের পেছনের খালি জায়গায় এবং পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।

ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট ছাড়া আমরা আরও ১০টি অস্থায়ী হাট বসানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। ১০ জুনের পর চুড়ান্তভাবে সব তথ্য জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে গাবতলীসহ মোট ১১টি হাটের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হাটের জন্য আরও আবেদন আসছে, তাই এ সংখ্যা বাড়তে পারে। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে হাটের সংখ্যা কমতেও যেতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

ডিএনসিসির অধীন হাটগুলো হলো- গাবতলী, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই সেকশন ৩-এর খালি জায়গা, উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমের অংশ, ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের ফাঁকা জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, কাওলা শিয়ালডাঙ্গাসংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা এবং উত্তরখান মৈনারটেক শহীদনগর হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গা।

গত বছর করোনা মহামারিতে দুই সিটি করপোরেশনের অধীনে মোট ২৪ টি (ডিএনসিসি ১০, ডিএসসিসি ১৪টি) পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ বিবেচনায় সেখান থেকে কমিয়ে উত্তরে ৬টি এবং দক্ষিণে ১১টি হাট বসানো হয়। হাট কমানোর ফলে গতবছর ঈদের দুদিন আগেই রাজধানীতে পশুর সংকট দেখা দেয়। তাই উভয় সংকট মোকাবিলায় এবার সঠিক চিন্তাটাই করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন