বিজ্ঞাপন

ছোট কোনো দল বিশ্ব শাসন করতে পারবে না— জি-৭’কে চীনের সতর্কবার্তা

June 13, 2021 | 3:33 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ছোট কোনো দল বিশ্ব শাসন করতে পারবে না বলে জি-৭’কে সতর্ক করে দিয়েছে চীন। কয়েকটি দেশের ছোট একটি দল বিশ্বের ভাগ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিন অনেক আগেই অতিবাহিত হয়েছে বলেও জানিয়েছে বেইজিং। লন্ডনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র চলমান জি-৭ সম্মেলনের ব্যাপারে এক বিবৃতিতে তার দেশের এমন অবস্থানের কথা জানান।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১১ জুন) থেকে যুক্তরাজ্যের কর্নওয়ালের কার্বিস বে নামক এক রিসোর্টে বৈঠকে বসেছেন জি-৭ নেতারা। উন্নত দেশগুলোর এ জোট শনিবার চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ মোকাবিলায় নতুন এক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। হোয়াইট হাউজের প্রস্তাবিত এ উদ্যোগের নাম ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড (বি৩ডব্লিউ)’। এর আওতায় সারাবিশ্বে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অবকাঠামো খাতে সহায়তা দেবে জি-৭।

জি-৭’র এ পরিকল্পনা মূলত চীনের ট্রিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভেরই বিকল্প। জো বাইডেন এ ব্যাপারে বলেন, ‘বি৩ডব্লিউ পরিকল্পনাটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের উন্নতমানের বিকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাপী বহু দেশে রেল, সড়ক, সমুদ্র বন্দর ইত্যাদি তৈরি করা হবে’। শনিবার উন্নত দেশগুলোর জোটের সম্মেলনে পরিকল্পনাটিকে সমর্থন দেওয়ার পরই চীনের তরফ থেকে কড়া সমালোচনা করা হলো।

এ ব্যাপারে লন্ডনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘এমন এক সময় ছিল যখন কয়েকটি দেশের ছোট গ্রুপ বৈশ্বিক সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব ফলাতো, তবে এখন আর সেই দিন নেই। আমরা সবসময় বিশ্বাস করি— কোনো দেশ ছোট বা বড়, শক্তিশালী বা দুর্বল, গরীব বা ধনী যাই হোক—সবাই সমান। বৈশ্বিক বিষয়গুলো সব দেশের পরামর্শের মাধ্যমে পরিচালনা করা উচিত’।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৩ সালে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ চালু করেন। এর মাধ্যমে বিশ্বের স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে থাকে চীন। বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে সহায়তা করতে চুক্তিবদ্ধ হয়। জি-৭ সদস্য ইতালি ২০১৯ সালে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এ উদ্যোগের আওতায় চীন এশিয়া থেকে ইউরোপে লাখ লাখ কোটি ডলারের অবকাঠামো সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। চীনের এ প্রকল্পের বিকল্প হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্র মূলত বি৩ডব্লিউ পরিকল্পনার কথা জানালো।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বে অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি হিসেবে একক অবস্থান পাকাপোক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশটি বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ এক পরাশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

১৯৭৯ সালে ইউরোপের দেশ ইতালির চেয়েও চীনের অর্থনীতির আকার ছোট ছিল। তবে চীন বদ্ধ অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তে মুক্ত অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ, বিদেশি বিনিয়োগ আহ্বান ও বাজার সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুতই অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় পরাশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে চীন। আর স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বিনিয়োগ করে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক প্রভাবও বৃদ্ধি করছে দেশটি।

বিজ্ঞাপন

জি-৭ এর সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও জাপান শনিবার যে বি৩ডব্লিউ উদ্যোগে সমর্থন দিয়েছেন তা মূলত চীনের বিরুদ্ধে নেওয়া একাধিক উদ্যোগের একটি। ধারণা করা হচ্ছে চলতি জি-৭ সম্মেলনেই চীন বিরোধী আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। সম্মেলনটিতে নেওয়া এসব পরিকল্পনার ব্যাপারে চীনও নীরব নয়।

আরও পড়ুন

সারাবাংলা/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন