বিজ্ঞাপন

অবশেষে বাংলাদেশকে হারাতে পারল জিম্বাবুয়ে

July 23, 2021 | 8:16 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

রেগিস চাকাভা ও রায়ান বার্লের দারুণ দুই ইনিংসে ১৬৬ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই দ্রুত গতিতে রান তুলতে চেয়েছে বাংলাদেশ। তবে ভাগ্য সহায়তা করল কমই, হাঁকাতে গিয়ে বারবার সীমানায় ধরা পড়ে বড় বিপদে পড়ে যায় সফরকারীরা। পরে আফিফ হোসেন ধ্রুব, অভিষিক্ত শামীম পাটোয়ারীরা চেষ্টা করেও দলকে বিপদ থেকে তুলতে পারেনি। ফলাফল, অবশেষে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের দেখা পেলো জিম্বাবুয়ে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৩ জুলাই) হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে বাংলাদেশকে ২৩ রানে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। এই জয়ে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে এখন ১-১ ব্যবধানে সমতা। অর্থাৎ আগামী ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তৃতীয় টি-টোয়েন্টিটা হয়ে দাঁড়ালো অলিখিত ফাইনাল।

এর আগে একমাত্র টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও প্রথম টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে চলতি সফরে জিম্বাবুয়েতে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের মুখ দেখল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে সর্বশেষ জিতেছিল ২০১৮ সালের নভেম্বরে, সিলেট টেস্টে।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের ১৫২ রানের টার্গেট সহজেই পেরিয়েছিল বাংলাদেশ। আজ টার্গেটটা বড় ছিল বলে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে চেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু সফরকারী ব্যাটারদের শট বারবারই গেছে জিম্বাবুয়ানদের ফিল্ডারদের হাতে। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে মুজারাবানির বলে সরাসরি বোল্ড নাইম শেখ (৫)। খানিক বাদে হাঁকাতে গিয়ে আউট প্রথম টি-টোয়েন্টির ম্যাচ সেরা সৌম্য সরকার (৮)।

বিজ্ঞাপন

এরপর শেখ মেহেদি হাসানকে নিয়ে একটু প্রতিরোধের আভাস দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটিটি ছিল ২৮ রানের। এই প্রতিরোধের মুখেই হঠাৎ আবার ধস। ৪৫ থেকে ৫৩, এই ৮ রানের ব্যবধানে ফিরে যান সাকিব আল হাসান (১২), শেখ মেহেদি হাসান (১৫) ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৪)। সাকিব ক্যাচ দেন বৃত্তের ভেতরে, মাহমুদউল্লাহ-মেহেদি সীমানায়।

দলীয় ৬৮ রানর মাথায় নুরুল হাসান সোহানও (৯) তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফিরলে বড় বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। তারপর কিছুক্ষণ চোখ জোড়ানো ব্যাটিং দেখান অভিষিক্ত শামীম পাটোয়ারী। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের পর ঘরোয়া ক্রিকেটেও পারফর্ম করে জাতীয় দলে ঢোকা এই তরুণ নেমেই মারকাটারি ব্যাটিং শুরু করেন। তার ব্যাটে জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছিল হয়তো কেউ কেউ। কিন্তু লম্বা হয়নি শামীম ঝড়।

মাত্র ১৩ বলে ৩টি চার ২টি ছক্কায় শামীমও ফিরেছেন সীমানায় ক্যাচ হয়ে। তারপরও নিভু নিভু করে জয়ের যে সম্ভবনা টিকে ছিল আফিফ হোসেন ধ্রুব কিছুক্ষণ পর সীমানায় ধরা পরলে সেটা নিভে গেছে। ২৫ বলে ২৪ রান করে ফিরেছেন আফিফ। পরে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ১৫ বলে এক চার এক ছয়ে ১৯ রানের ইনিংসটা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। এক বল বাকি থাকতে ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস।

বিজ্ঞাপন

জিম্বাবুয়ের পক্ষে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও লুক জংওয়ে। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন টেন্ডাই চাতারা ও ব্লেসিং মুজারাবানি।

এর আগে জিম্বাবুয়ের বড় সংগ্রহে বড় অবদান ওয়েসলে মাদভেরের। ওপেনিংয়ে নেমে ৫৭ বলে ৭৩ রান করেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। দ্বিতীয় ওভারে মারুমানিকে সরাসরি বোল্ড করেন শেখ মেহেদি হাসান। উইকেট মিলতে পারত তৃতীয় ওভারেও। তাসকিন আহমেদকে ঠিকভাবে পুল করতে না পেরে বল আকাশে ভাসিয়েছিলেন তিনে নামা রেগিস চাকাভা। কিন্তু সহজ সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।

তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম ও শেখ মেহেদি হাসানের ভুল বোঝাবুঝিতে ক্যাচ পড়ে দুজনের মাঝখানে। ‘জীবন’ পাওয়া চাকাভা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১৬ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানের বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন। তবে অপর প্রান্তে ওয়েসলে মাদভেড়ে ছিলেন দারুণ ছন্দে। এই মাদভেরেই বেশি ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে।

বিজ্ঞাপন

ডিন মায়ার্স, রায়ান বার্লদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে জিম্বাবুয়েকে দেড়শ’র ওপারে নেওয়াতে সবচেয়ে বড় অবদান মাদভেরের। ১৮তম ওভারে শরিফুলের বলে হাঁকাতে গিয়ে আফিফ হোসেনের হাতে ধরা পড়ার আগে ৫৭ বলে ৭৩ রান করেছেন জিম্বাবুয়ান ওপেনার। তার ইনিংসে চারের মার ৫টি, ছক্কা ৩টি।

শেষ দিকে গুরুত্বপূর্ণ একটা ইনিংস খেলেছেন রায়ান বার্ল। মাত্র ১৯ বল খেলে ৩৪ রান করে শেষ অবদি অপরাজিত ছিলেন। ইনিংসে চার মেরেছেন ২টি, ছক্কাও দুটি। এছাড়া ডিন মায়ার্স ২১ বলে করেছেন ২৬ রান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ের ইনিংস।

বাংলাদেশের পক্ষে শরিফুল ইসলাম ৩৩ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদি হাসান ও সাকিব আল হাসান।

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন