বিজ্ঞাপন

আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে মধ্য এশিয়ার শীর্ষ নেতাদের বৈঠক

August 6, 2021 | 10:28 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের শীর্ষ নেতারা আলোচনার জন্য তুর্কমেনিস্তানে একত্রিত হয়েছেন। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহার করার পর থেকে প্রতিবেশী দেশটিতে চলমান যুদ্ধপরিস্থিতি তাদের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। খবর আলজাজিরা।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৬ আগস্ট) দেশটির কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী আভাজায় শহরে বৈঠকে বসে কাজাখস্তান, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান। আগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চল দখলে নেওয়ার পর বেশকয়েকটি বড় শহরে দেশটি সেনাবাহিনীর সঙ্গে তালেবান যোদ্ধাদের তুমুল লড়াই শুরু হওয়ার সপ্তাহের মাথায় ৫টি দেশের নেতারা এই আলোচনায় মিলিত হলেন। এর মধ্যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত রয়েছে।

এর আগে গত বুধবার তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বার্দিমুখামেদভ বলেছিলেন, আফগানিস্তান ‘আমাদের সকলের চিন্তার কারণ’। এদিন আলোচনায় যোগ দিতে আসা তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমামালি রাহমনকে স্বাগত জানান তিনি। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন তা সম্প্রচার করে।

এদিকে রাশিয়া ও উজবেকিস্তানের সেনাবাহিনী আফগান সীমান্তের কাছে তাদের পূর্ব নির্ধারিত যৌথ সামরিক মহড়া শেষ করেছে। শুক্রবার মহড়ার কমান্ড হেডকোয়ার্টারের বরাত দিয়ে ইন্টারফ্যাক্স বার্তা সংস্থা এ খবর দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাশিয়া জানিয়েছে, এই অনুশীলনে দুই দেশের এক হাজার ৫০০ সেনা অংশ নিয়েছিল। আফগানিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি পুরো মধ্য এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে উভয় দেশ উদ্বিগ্ন।

মহড়াটি পর্যবেক্ষণ ও আলোচনা করতে গত বৃহস্পতিবার এই অঞ্চলে এসেছিলেন রাশিয়ার একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।

চলতি মাসের শেষের দিকে মার্কিনসহ অন্যান্য বিদেশি সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের কাজ শুরু করার ঘোষণা দেওয়ার পর গত মে থেকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি আবারও অবনতি হয়।

বিজ্ঞাপন

গত জুনে তালেবানের সঙ্গে লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানে পালিয়ে যায় আফগান সেনারা। এ সময় তাজিকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের প্রধান স্থলবন্দর শির খান দখল করে নেয় তালেবান যোদ্ধারা।

তবে তালেবান অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছে, তাদের মধ্য এশিয়া নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। তারা আগামীতে আফগানিস্তানে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তাই উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে সরকারি যোগাযোগ স্থাপন করেছে তারা।

তবে তালেবানের কথা অস্বীকার করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কাবুলের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দেশটিতে তৈরি হওয়া নিরাপত্তা শূন্যতা মধ্য এশিয়ার পাশাপাশি এই অঞ্চলের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।

রুশ সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ গত বৃহস্পতিবার আলোচনার জন্য উজবেকিস্তানে পৌঁছেছেন। এ সময় তিনি সামরিক মহড়াটি পর্যবেক্ষণ করবেন, যা আগামী সপ্তাহে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

উজবেকিস্তানের সেনা বাহিনীর জেনারেল স্টাফের প্রধান সঙ্গে আলোচনার পর গেরাসিমভ বলেছিলেন, সম্ভব্য সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবিলা করতেই এই মহড়ার আয়োজন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মধ্য এশিয়ার জন্য প্রধান হুমকি আফগানিস্তান থেকে এসেছে। তাই এই অঞ্চলে অস্ত্রের সরবরাহ বৃদ্ধি করছে মস্কো।

যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মতো বৃহৎ শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোকে ছাড়াই মধ্য এশিয়ার দেশগুলো আভাজায় বার্ষিক শীর্ষ সম্মেললে মিলিত হওয়ার বিষয়টি ভূ-রাজনীতি ও কূটনীতিতে একটি বিরল ঘটনা।

সারাবাংলা/এনএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন