বিজ্ঞাপন

মাতৃত্বকালীন সেবা নিশ্চিতে ‘সেফ লাইফ’ প্রকল্প

September 24, 2021 | 8:31 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ড্টে

ঢাকা: নারীদের মাতৃত্বকালীন সেবা নিশ্চিতে আসছে ‘সেফ লাইফ’ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকল্প এলাকায় মা ও শিশু মৃত্যুর হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনাসহ কমপক্ষে ৯০ শতাংশ গরিব, অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনমানের সার্বিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

এজন্য (জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপদ মাতৃত্ব) শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূলায়ন কমিটির (পিইসি) সভা।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৪৮ কোটি ৭৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং প্রত্যাশী সংস্থা থেকে ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে। প্রক্রিয়াকরণ শেষে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সমাজ সেবা অধিদফতর। চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে।

প্রকল্পের প্রস্তবনায় বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে, প্রসূতি মা ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাস পাবে। মা ও শিশু স্বাস্থ্যের পুষ্টিগত মান উন্নত হবে। গর্ভবর্তী মা ও নবজাতক শিশুর সেবার মান উন্নত ও সুনিশ্চিত হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, বিবিএসের নমুনা জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুর হার খুব বেশি এবং এই হার গ্রামে আরও বেশি। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর উচ্চ হারের প্রধান কারণ হলো বাল্যবিবাহ এবং অদক্ষ ধাত্রী বা আত্মীয়দের সহায়তায় বাড়িতে সন্তান প্রসব করানো। কিশোরী মায়ের নবজাতকের মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাদের সন্তান অপুষ্টির শিকার হয়, ওজন কম হয়। ফলে তারা মারা যায়। নবজাতকের মোট মৃত্যুর ৭৩ শতাংশই ঘটেছে বাড়িতে। নারীদের নিম্ন সামাজিক অবস্থা ও পারিবারিক অসচ্ছলতাই এর অন্যতম কারণ। দেশের বেশিরভাগ শিশুই অপুষ্টিতে ভোগে। অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুরা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে এমনকি অপরিণত বয়সে মারাও যেতে পারে। শিশু মৃত্যুর প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কারণ মারাত্মক অপুষ্টি।

ঢাকা বিভাগের রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ১০টি উপজেলার সাতটি পৌরসভা, ১০৬টি ইউনিয়নের এক হাজার ৮৩৯টি গ্রামের ৪ লাখ ৫২ হাজার ৫৪৩টি পরিবারের মা ও শিশু সেবা কার্যক্রমের জন্য এই প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে। বেসরকারি প্রচেষ্ঠায় আর্থ-সামাজিক খাতে গৃহীত প্রকল্পে সীমিত আকারে সরকারি সাহায্য দেওয়ার নীতিমালার প্রত্যাশি সংস্থা, হেলথ এন্ড এডুকেশন ফর দি লোকাল আন্ডার প্রিভিলাইজড পিপলের ২০ শতাংশ ও সরকারি ৮০ শতাংশ অর্থায়নে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি মোট ৪৮ কোটি ৭৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে চলতি বছরের জুলাই হতে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ৩১৯টি মোটরযান ক্রয়, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ক্রয়, ৫৩ জন জনবল, ৯৯টি কম্পিউটার, ১৩ সেট আসবাবপত্র, ৫ হাজার ১৩৫ জনের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যবিধান সামগ্রী, ৩ হাজার ৫৬০টি প্রচার ও বিজ্ঞাপন, অডিও ভিডিও চলচিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শন, সেমিনার কনফারেন্স এবং জরিপ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

পিইসি সভার কার্যপত্রে বলা পরিকল্পনা কমিশনের মতামত হিসেবে বলা হয়েছে, প্রকল্প এলাকায় ৯ জন করে ১১৩টি পৌরসভা, ইউনিয়নের ১ হাজার ১৭ জন ধাত্রীর সংস্থান রাখা হয়েছে, যাদের মাসিক ভাতা ৪ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। অথচ সুপারভাইজারদের (১১৩ জন) মাসিক ভাতা ১০ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে সুপারভাইজারের সংখ্যা ও ভাতা হ্রাস করে যৌক্তিক পর্যায়ে পুনঃনির্ধারণ করা যেতে পারে।

সারাবাংলা/জেজে/এএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন