বিজ্ঞাপন

৫ দিন আগে হত্যার কন্ট্রাক্ট, ৩ দিন আগে টিপুর নাম পান শুটার মাসুম

March 27, 2022 | 4:13 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর শাহজাহানপুরে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যার ঘটনার পাঁচদিন আগে হত্যার কন্ট্রাক্ট পান গ্রেফতার হওয়া মাসুম মোহাম্মদ আকাশ (৩৪)। ডিবি জানিয়েছে, ‘কাট আউট’ পদ্ধতিতে তিনি এই কন্ট্রাক্ট পান। আর হত্যার তিন দিন আগে টিপুর নাম পান। এ সময় তাকে একটি পিস্তল ও গুলি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান এ কে এম হাফিজ আকতার এ সব তথ্য জানান।

ডিবি প্রধান বলেন, হত্যার আগের দিন টিপু রেস্টুরেন্ট থেকে বাসার উদ্দেশ্যে বের হলে রাস্তা অনুসরণ করে গুলি করার প্রস্তুতি নেয় মাসুম। কিন্তু বেশি লোকজন থাকায় সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ঘটনার দিন ২৪ মার্চ অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি টিপুর মালিকানাধীন গ্রান্ড সুলতান রেস্টুরেন্টে অবস্থান করে মাসুমকে আপডেট দিতে থাকেন। টিপুর গতিবিধি নজরে তাকে হত্যার মিশন সফল করেন শুটার মাসুম।

হত্যার পর শুটার মাসুম সীমান্ত দিয়ে দেশত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য গাড়িভাড়া করে তিনি জয়পুরহাট চলে যান। সেখান থেকে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দিন জয়পুরহাট সীমান্ত দিয়ে যেতে না পেরে মাসুম বগুড়ায় চলে আসেন। পরদিন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগে মাসুমের অবস্থান নিশ্চিত হয় পুলিশ। বগুড়া পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় মাসুমকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের টিম।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘তার সহযোগী একজন ছিলেন এই ঘটনার পেছনে, তাকেও গ্রেফতার করব। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও অস্ত্র উদ্ধার করা হবে।’

টিপুকে হত্যাকাণ্ডে কত টাকা কন্ট্রাক্ট হয়েছে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘কত টাকার বিনিময়ে তা জানা যায়নি। তবে গ্রেফতার মাসুমের এলাকায় বেশকিছু মামলা রয়েছে।’

সেই মামলা থেকে অব্যাহতির আশ্বাস পেয়ে টিপুকে হত্যার কন্ট্রাক্ট পান তিনি।

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির প্রধান বলেন, ‘মাসুম বলেছেন, তার নামে ৬/৭ টি মামলা আছে। এরমধ্যে একটি মার্ডার মামলাও আছে। এ কারণে তিনি সবসময় পালিয়ে থাকতেন। তিনি ফেরারি ছিলেন। বাসায় স্ত্রী কন্যা রয়েছে, স্কুল শিক্ষক বাবা আছেন। তবে মাসুম কারও সাক্ষাৎ করতেন না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আকতার বলেন, ‘আমাদের তথ্য উপাত্ত, তদন্তে পাওয়া তথ্য, আগের দিনের সংগ্রহ করা তথ্য সব বলে দেয় টিপু হত্যায় মাসুমই শুটার ছিলেন। এছাড়া গ্রেফতারের পর তিনিও টিপুকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।’

ডিবি জানিয়েছে, রাজধানীর গোড়ান এলাকায় মাসুমের ডিস ব্যবসা আছে।

জানা যায়, মাসুম মোহাম্মদপুর আর্ট কলেজ থেকে গ্রাফিক ডিজাইনে পড়াশোনা শেষ করেন। মাসুম গোড়ান এলাকায় স্থানীয় ছাত্রলীগের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

ডিবি জানিয়েছে, কোনো মামলায় তিনি হাজিরা দিতেন না। এসব মামলা নিয়ে মাসুম হতাশাগ্রস্ত জীবনযাপন করতেন। মাহিরা নামে তিন বছরের এক কন্যা থাকলেও ফেরারি জীবন যাপনের কারণে তাকেও দেখতে পারতেন না। এ সব মামলা থেকে অব্যাহতি ও জীবনে আরও ভালো কিছু পাওয়ার লোভে মাসুম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে বলে ডিবির ধারণা।

মাসুমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার বাইশকানি গ্রামে। তার বাবার নাম মোবারক হোসেন। ঢাকায় পশ্চিম মাদারটেক এলাকার ৬০/১৫ নম্বর বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। তবে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে কখনও বাসায় ঘুমুতেন না।

আরও পড়ুন
আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা, প্রাণ গেল কলেজছাত্রীরও
টিপুর শরীরে ৭ গুলি, প্রীতির একটিই: ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন
টিপুর স্ত্রীর মামলা— হত্যার হুমকি ছিল ৪-৫ দিন আগে
আ. লীগ নেতা টিপু ও কলেজছাত্রী হত্যায় জড়িত শ্যুটার গ্রেফতার
মতিঝিলে আ. লীগ নেতা ও কলেজ ছাত্রীকে হত্যার ফুটেজ পুলিশের হাতে

 

সারাবাংলা/ইউজে/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন