বিজ্ঞাপন

খেলা হবে, নির্বাচন আর রাজনীতির মাঠে আসুন: বিএনপিকে কাদের

July 16, 2022 | 2:38 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি বলে আমাদের পতনের নাকি সাইরেন বাজে? কোথা থেকে শুনলেন, সাইরেনটা কোথায় শুনলেন? রাস্তায় যখন গাড়ি চলে এ সাইরেন শুনেছেন? সাইরেন শুনতে পাবেন আপনাদের বিদায় ঘণ্টার, নেতিবাচক রাজনীতি আপনাদেরকে অপ্রাসঙ্গিক করে ফেলেছে। আপনাদেরই বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে। আওয়ামী লীগের বিদায় ঘণ্টা নয়।

বিজ্ঞাপন

খেলা হবে খেলা হবে, রাজনীতির মাঠে খেলা হবে। নির্বাচনের মাঠে খেলা হবে। আসুন; খেলায় আসুন। নির্বাচন আর রাজনীতির মাঠে আসুন। আগুন নিয়ে খেলবেন না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে সে আগুনের খেলা প্রতিরোধ করবে।

শনিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর যৌথভাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, এক/এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন মিথ্যা বানোয়াট, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ২০০৭ সালে ১৬ জুলাই তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী আওয়ামী লীগ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই দিন শুধু শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস নয়; এই দিন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বন্দী দিবস। এদিন শেখ হাসিনাকে বন্দী করে আমাদের বিকাশমান গণতন্ত্রকেই বন্দী করা হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনে জেলে ছিলাম। রাজনীতির অনেকেই জেলে গেছে। আমাদের নেত্রী বন্দী হয়েছিলেন। ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। কিন্তু প্রথম বন্দী হন শেখ হাসিনা। তারা এসে বিরোধী দলের নেতাদেরই প্রথম বন্দী করে, সরকারি দলের নেতা তখনও বাইরে। কী দুর্ব্যবহার, মতিয়া আপা বলেছেন। এত অপমান তারা নেত্রীকে করেছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে সামান্যতম শ্রদ্ধা তারা দেখাতে পারেননি, দেখায়নি।’

নেতাকর্মীদের সেই প্রেক্ষাপট স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, নেত্রীর কারাবন্দী দিবসে এখানে সমবেত হয়েছেন। সেদিন যদি এদেশের রাজনীতিকদের একটা অংশ ওই জরুরি সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা না করত বাংলাদেশে ওয়ান ইলেভেন টিকতে পারত না। এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন ছিল। রাজনীতিকরাই অনেক রাজনীতিক সেদিনকার সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে যোগসাজেশ করে রাজনীতিকে মাইনাস ফর্মুলায় নিয়ে গিয়েছিল।’

বিজ্ঞাপন

কারও নাম উল্লেখ না করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে আমি বলব, আমাদের শত্রু মিত্র চিনতে হবে। চলার পথে শত্রু মিত্র চিনতে হবে। একটা কথা আছে, একবার যে বিশ্বাসঘাতক সে বারে বারে বিশ্বাসঘাতক। আওয়ামী লীগের কর্মীরা হুঁশিয়ার থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু কন্যার আজকে কত বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কঠিন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সারাবিশ্বে যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া। সারাবিশ্বে এই প্রতিক্রিয়ায় আজকে জ্বালানি ফুয়েলের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি ইনফ্লুয়েশন অবাক লাগে, শ্রীলংকার কথা বাদ দিলাম। আজকে ইংল্যান্ড আমেরিকায় ৯ দশমিক ১ ইনফ্লুয়েশন। সর্বত্রই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। বাংলাদেশকে এ বাস্তবতার কঠিন সময়ে আজকে অগ্রসর হতে হচ্ছে।’

‘শেখ হাসিনা সারারাত জেগে থাকেন, বাংলাদেশের মানুষ যাতে ঘুমাতে পারে। তিনি জেগে আছেন, আমরা যাতে ঘুমাতে পারি, এ দেশের মানুষ যেন ঘুমাতে পারি। এই পর্যন্ত পরিস্থিতি তিনি সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। এই পর্যন্ত করোনা, বন্যা অতিক্রম করে যুদ্ধের ইমপ্যাক্ট সেটিও তিনি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। শক্ত করে হাল ধরে আছেন।’

‘তাকে শক্তি দিতে হবে, আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে। শক্তি দিতে হবে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে। কথায় কথায় নিজেরা অন্তঃকলহ করবেন না। খুব খারাপ সময়। খুব ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এই সময়ে ঐক্যের বিকল্প নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। কেউ কিছু করতে পারবে না।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির কারও নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি বলে আমাদের পতনের নাকি সাইরেন বাজে? কোথা থেকে শুনলেন, সাইরেনটা কোথায় শুনলেন? রাস্তায় যখন গাড়ি চলে এ সাইরেন শুনেছেন? কি সাইরেন শুনেছেন, শুনবেন, শুনতে পাবেন আপনাদের বিদায় ঘণ্টার সাইরেন। নেতিবাচক রাজনীতি আপনাদেরকে অপ্রাসঙ্গিক করে ফেলেছে। আপনাদেরই বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে। আওয়ামী লীগের বিদায় ঘণ্টা নয়। খেলা হবে খেলা হবে, রাজনীতির মাঠে খেলা হবে। নির্বাচনের মাঠে খেলা হবে। আসুন; খেলায় আসুন। নির্বাচন আর রাজনীতির মাঠে আসুন। আগুন নিয়ে খেলবেন না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে সে আগুনের খেলা প্রতিরোধ করবে।’

সভায় আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা এক/এগারোর নেপথ্যের কুশীলবদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে দলের নেতাকর্মীদের যে কোনো মূহূর্তে ঐক্যবদ্ধ থেকে সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন ওবায়দুল কাদের।  সামনের দিনে আরও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

সারাবাংলা/এনআর/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন