বিজ্ঞাপন

এখনো নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই চলছে উন্নয়ন কাজ: মেয়র আতিক

August 21, 2022 | 4:41 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার পড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই চলছে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২১ আগস্ট) রাজধানীর উত্তর নগরভবনে করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সমন্বয়সভায় এই অভিযোগ করেন ডিএনসিসি মেয়র। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য আয়োজিত এই সভায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

শতভাগ অবহেলার কারণেই উত্তরার গার্ডার দুর্ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে মেয়র দাবি করেন, ‘এখনো নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে।’

এ সময় তিনি শনিবার (২০ আগস্ট) বারিধারায় নিরাপত্তা বেষ্টনি বা অন্যান্য সুরক্ষা নিশ্চিত না করে চলা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের একটি ভিডিও দেখান। ১০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কোনো সুরক্ষা নিশ্চিত না করেই উপরে ক্রেন দিয়ে কাজ চলছে ও নিচে রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে।

বিজ্ঞাপন

ভিডিও দেখিয়ে প্রকল্পের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, আর কত দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদের টনক নড়বে।

তিনি বলেন, সেখানে কোনো নিরাপত্তাবলয় ছিল না। ফলে উপরে ক্রেন দিয়ে ভারী গার্ডার ওঠানামার কাজ চললেও নিচ দিয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করছিল। এখন থেকে উন্নয়নকাজের নিরাপত্তা কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবে অবশ্যই মানতে হবে।

মেয়র জানান, রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্গত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকঠাকভাবে মানা হচ্ছে কি না, সেটি নিশ্চিত করতে এখন থেকে নিয়মিত অভিযানে যাবে ডিএনসিসি। কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই এই অভিযান চলবে।

বিজ্ঞাপন

মেয়র বলেন, নগরের প্রতিনিধি হিসেবে আমার কাছে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আসে। আমরা একটি নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী এমন মিটিং আমি করতে পারি। আজকের মিটিংয়ে এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, বিআরটিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা আছেন। আশা করছি সকল পক্ষের অংশগ্রহণে মাসে এমন একটি করে সমন্বয় মিটিং হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আয়মানা সাদিয়া হক বলেন, উত্তরায় চলমান উন্নয়ন কাজে বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। আমরা শিক্ষিত হলেও সচেতন না, তাই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনের প্রয়োগ জরুরি।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মনির হোসেন পাঠান বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এই দুর্ঘটনা। সেদিন ১৫ আগস্ট উপলক্ষে সব কাজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ চালায়, যা করার কথা নয়। ফলে সেখানে কোনো কনসালট্যান্ট বা আমাদের বিভাগের কারো উপস্থিতি ছিল না। আশা করছি তদন্তে সঠিক তথ্য উঠে আসবে। প্রয়োজনে আমরা সরকারের মাধ্যমে চায়না সরকার ও চায়না অ্যাম্বাসেডরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।

সেতু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মনিরুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনা এলাকা সওজের হলেও আমরা কেউই দায় এড়াতে পারি না। সকল প্রকল্পের কন্টাক্ট ডকুমেন্টসে নিরাপত্তাবিধি মানা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

রাজউক চেয়ারম্যান মোঃ আনিসুর রহমান মিয়াঁ বলেন, সকলের কাছে অনুরোধ থাকবে, তারা যেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধু থিওরিতে না, হাতে-কলমে যেন কাজ করেন। আমি নিজেই গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসা যাওয়া করি নিয়মিত। এই রাস্তায় চলমান বিভিন্ন প্রকল্প কতটা অনিরাপদ সেটি আমি নিজেই দেখেছি।

মেট্রোরেল প্রোজেক্ট ডিরেক্টর মো. আফতাব উদ্দিন তালুকদার বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজে নিরাপত্তা মাথায় রেখেই কাজ করা হয়।

সারাবাংলা/আরএফ/এএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন