বিজ্ঞাপন

মরুখালী ইউনিয়নের জনগণের আর্তনাদ— বাঁধ কেটে আমাদের বাঁচান

September 10, 2022 | 6:50 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলার মরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা, দোগনা ও ভূতা খালে একাধিক অবধৈ বাঁধের কারণে লক্ষাধিক মানুষের র্আতনাদ আমাদের বাঁচাও। বাঁধ খুলে দাও। পরিবেশসহ কৃষক বাঁচাও। পানির চাপে রাস্তাঘাট ভেঙে যাচ্ছে, আমুয়া-সাফা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে বাড়িঘরে পচন ধরছে। পানিবন্দি গোয়ালঘরে গবাদি পশু মৃত্যুর মুখে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকার স্কুলগুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বীজতলা ডুবে গেছে। বাঁধের জন্য ১২ বছর ধরে ৪ হাজার একর কৃষকরা আমন চাষসহ কোনো ফসল উৎপাদন করতে পারেনি। এলাকাবাসী এ থেকে বাঁচার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এলাকাবাসী জানায়, এ বিষয়ে গত জুলাই বাঁধ অপসারণের জন্য এলাকাবাসী ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, সভাসমাবশে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। কিন্তু একটি অদৃশ্য শক্তির কারণে বাঁধ অপসারণ করা হচ্ছে না।

গত ৩১ জুলাই মঠবাড়ীযা উপজলো প্রশাসন এবং ৪ আগস্ট স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. রুস্তুম আলী ফরাজী ও বাংলাদশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা জানায়— এলাকাবাসী ওই বাঁধ অপসারণের দাবিতে  বাপাউবো, প্রধান প্রকৌশলী, বাপাউবো, এলজইডি ও সওজ, পিরোজপুর, ইউপি মরুখালী অবহিত করেন। যার স্মারক নম্বর ৪২,০০,০০০০,০০৫, ২৫,০০২, ২২-১০৭ তাং ২৪.৫.২২। এরপর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৗশলী বাপাউবো, বরিশাল ৩১ জুলাই ইউনিয়ন ভূমি অফিস, উপজেলা প্রশাসন বরাবর বাঁধ অপসারণের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এ ছাড়া ডিজি পরিবেশ পরিবেশ অধিদফতরে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। যার স্মারক নম্বর রসিবি নং ৪০২৯ তাং২৪/৫/২২। এ ছাড়া সরকারের অন্যান্য সংস্থা দফতর ও অধিদফতরে বাঁধ অপসারণের জন্য আবেদন করা হয়। এরপরও বাঁধটি কেন অপসারণ করা হচ্ছে না তা নিয়ে জনগণের মাঝে নানা প্রশ্ন জন্মেছে।

এ ব্যাপারে পিরোজপুর জলো প্রশাসক (ডিসি) জাহেদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবহিত হয়েছি। উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয় একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছি। এ ছাড়া আগামী জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সব জেলার এলজিইডি পানি উন্নয়নবোর্ডসহ অন্যান্য দফতরের কর্মকর্তারা থাকবেন। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।’

বিজ্ঞাপন

মঠবাড়িয়ার ইউএনও র্ঊমি ভৌমিক বলনে, ‘সওজ, এলজইিডি,পাউবো, জেলা পরিষদকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

অপরদিকে সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে জোয়ারের পানি কোথাও যেতে পারছে না। ফলে বসতবাড়ী, কৃষিজমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে।

বিশখালী ও বলশ্বের দুইনদীর সংযোগ খালটি বিষয়খালী থেকে উঠে ঝালকাঠির কাঠালিয়া ও বরগুনার বামনা উপজেলার মধ্যস্থান আমুয়া লঞ্চঘাট থেকে দুই পাশে ৪টি উপজেলা রেখে সোজা প্রায় ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে তুষখালী লঞ্চঘাট হয়ে বলেশ্বর নদীতে মিলিত হয়েছে। এই খালের দুই পাশে প্রায় ৫০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের বহুমূখী দৈনন্দিন জীবন-জীবিকা ২০০ বছর ধরে ভোগ করে আসছে।

এই বাঁধের কারণে কৃষকরা কর্মহীন হয়েছে। শত শত একর ফসলি জমি অনাবাদী রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মিরুখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সোবহান শরীফ জানান, অবৈধ বাঁধের কারণে লক্ষাধিক মানুষ ১২ বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বাঁধ কেটে খাল দুটি মুক্ত করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি এই বাঁধ কাটার ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপ না করলে ওই অশুভ শক্তির কারণে বাঁধ কাটা যাবে না।’

এ ব্যাপারে পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মাওলা মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘ওই এলাকায় বাঁধের কারণে জনগণের দুর্ভোগ সরেজমিনে দেখে এসেছি। বাঁধটি কাটার দরকার বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বাঁধটি কাটতে বিভিন্ন সংস্থা যেমন পুলিশ প্রশাসন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও এলজিইডির সহায়তা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘আমার একার পক্ষে বাঁধটি কাটা সম্ভব না। আমি আশা করি সকলেই এই বাঁধটি কাটার জন্য সহায়তা করবেন। জেলা উন্নয়ন সভায় গত মিটিংয়ে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন