মার্চে সড়কে প্রাণ গেছে ৫৩৮ জনের, আহত ১১৩৮

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলতি বছরের মার্চে ৪৮৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৮ জন নিহত ও এক হাজার ১৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বুধবার (৫ এপ্রিল) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে চারশ ৩৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় চারশ ৮৭ জন নিহত এবং সাতশ ১২ জন আহত হন।

সড়ক দুর্ঘটনায় শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭৯ জন চালক, ১০১ জন পথচারী, ১২২ জন শিক্ষার্থী, ৬০ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৩ জন শিক্ষক, ১২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৯০ জন নারী, ৫০ জন শিশু, ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, দুই জন সাংবাদিক, দুই জন আইনজীবী, একজন প্রকৌশলী এবং পাঁচ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর পরিচয় মিলেছে।

যার মধ্যে নিহত হয়েছেন তিনজন পুলিশ সদস্য, তিনজন সেনাবাহিনীর সদস্য, দুইজন আনসার সদস্য, একজন বিমানবাহিনীর সদস্য, ১৪০ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৯৩ জন পথচারী, ৬৭ জন নারী, ৩৭ জন শিশু, ৪২ জন শিক্ষার্থী, ২৫ জন পরিবহন শ্রমিক, নয়জন শিক্ষক, ছয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তিনজন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক, দুইজন আইনজীবী ও পাঁচজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

মার্চে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট পাঁচশ ৪৯টি দুর্ঘটনায় পাঁচশ ৯২ জন নিহত এবং এক হাজার ১৬৭ জন আহত হয়েছে। এ মাসে ১৫২ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত ও ৯৭ জন আহত হয়েছেন। ৫৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত ১৫ জন। নয়টি নৌ-পথ দুর্ঘটনায় নিহত সাত জন, আহত ১৪ জন ও নিখোঁজ দুই জন।

মার্চ মাসে ঘটা সকল দুর্ঘটনায় ৬৬৬ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ১৬.৮১ শতাংশ বাস, ২৮.২৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৪.৬৫ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৩.৭৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ২৩.১২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.১১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৯.৩০ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৭.৪৯ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৫.১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৪২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯.৬৫ শতাংশ বিবিধ কারনে এবং ১.২৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩.০৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩.২০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৫.১১ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬.১৬ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.২৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১.২৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে মার্চে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো-

১. চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে গাড়ি চালানো।
২. বেপরোয়া গতি ও বিপদজনক ওভারটেকিং।
৩. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো।
৪. ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধ চলাচল।
৫. চালকের কর্মঘন্টা ও বেতন সুনির্দিষ্ট না থাকা।
৬. রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা। রাস্তার পাশে হাট-বাজার।
৭. যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা।
৮. ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করা।
৯. ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি।

সারাবাংলা/আরএফ/ এনইউ